- প্রচ্ছদ রচনা
- জুন ২৫, ২০২২
রাত পোহালেই পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন, ৪৫ আসনের জন্য লড়াইয়ের ময়দানে ২৭৭ প্রার্থী । এবারও নজরে হামরো পার্টি
আগামিকাল পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচনের পালা। ৪৫ আসনে ভোট নেওয়া হবে। এর জন্য আজ প্রস্তুতি তুঙ্গে। কালিম্পং, কার্শিয়াং ও দার্জিলিংয়ের ডিসিআরসি সেন্টারগুলিতে থেকে ভোটের সরঞ্জাম বিলি করা হচ্ছে। জুন মাসেই ভোট ঘোষণার আগে থেকেই প্রশাসনিক স্তরেও শুরু হয়ে গিয়েছিল এই নির্বাচন করানোর জন্য তৎপরতা।
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পরে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ২৬ জুন ভোট। জানা গেছে, বর্ষা মিটলে পাহাড়ে বাকি থাকা তিন পুরসভার ভোট করানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।এবার নির্বাচনে নেই বিজেপি ও জিএনএলএফের মতো দলগুলি। কিন্তু উল্লেখযোগ্য যেসব দল এবার লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছে তারা হল অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি। গত পুরসভা নির্বাচনে ভালো ফল করেছিল হামরো পার্টি। এছাড়া রয়েছে অনিত থাপার দল। নির্দলরাও প্রায় ২০০ বেশি প্রার্থী। এর পাশাপাশি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বিনয় তামাং। ফলে তৃণমূলও এবার লড়াই দিতে পারে।
আগামীকাল পাহাড়ে থাকবে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এবার ৪৫ আসনের জন্য লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছেন ২৭৭ প্রার্থী। এর মধ্যে ২১০ প্রার্থীই নির্দল। অনিত থাপার বিজিপিএম এবার দিয়েছে ৪৫ প্রার্থী। হামরো পার্টিও দিয়েছে ৪৫ প্রার্থী। তৃণমূলের তরফে মনোনয়ন দিয়েছেন ১০ জন। সিপিএম দিয়েছে ১২ প্রার্থী। মোট ৯২২টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোট দেবেন ৭ লাখ ৩২ হাজার ভোটদাতা।
গত এপ্রিল মাসে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছিলেন শীঘ্রই পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হবে। পাহাড়ে এই মুহূর্তে শুধু পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি স্তর রয়েছে। সংশোধনী এনে সেখানে জেলা পরিষদ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।
পাহাড়ের পঞ্চায়েত নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ঢিলেমির অভিযোগ অবশ্য আনছে রাজ্য। রাজ্য প্রশাসন নজর রেখেছিল পাহাড়ের সব রাজনৈতিক দল একজোট হয়ে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কিনা? পুরভোটে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ফলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জিটিএ ভোটের প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হয়েছিল সেই সময়েই। নবান্নের তরফে পাহাড়ের দলগুলিকে আগেই সেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল।পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবি দীর্ঘ দিনের। জিটিএ-র পর গোটা রাজ্যের সঙ্গে সেই ভোট পর্বও মিটিয়ে ফেলতে চাইছে রাজ্য সরকার।গত ২৬ অক্টোবর কার্শিয়াং সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পাহাড় সমস্যার চিরকালীন সমাধানের কথা বলেছিলেন। সমস্ত দলকে একজোট হতে বলেছিলেন। কমিটি গড়েছিলেন। যাতে পাহাড়ের যাবতীয় প্রয়োজনীয় ইস্যু নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এই নিয়ে গত এপ্রিল মাসে মাসে আলাদা আলাদা করে কথা হয়েছে অনিত থাপা-বিমল গুরুং-রোশন গিরিদের সঙ্গে। তবে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বিনয় তামাং যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। আর পাহাড়ের নতুন আঞ্চলিক দল হিসেবে উঠে এসেছে হামরো পার্টি। ফলে পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোটকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার কথা ভাবা হচ্ছে। প্রশাসনিক এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে পাহাড়ের সব আঞ্চলিক দল।
অনিত থাপা জানিয়েছেন, নির্বাচনের পরিস্থিতি রয়েছে। সকলে তাতে যোগদান করছেন এটা পুরভোটের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত। এ বার বাকি নির্বাচন করিয়ে নেওয়া হোক। সব রাজনৈতিক দলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।হামরো পার্টির নেতা অজয় এডওয়ার্ড জানিয়েছেন, পাহাড়ে নির্বাচনে তাঁরা একাই লড়াই করছে। অজয় বিমল-অনিত সুযোগ পেয়েও পাহাড়ের উন্নয়ন করেননি। আমরা সেই উন্নয়ন করতে চাই। যদিও অন্য সুর রোশন গিরির গলায়। চিঠি দিয়ে আগেই জানিয়েছিলেন তিনি, যাতে এখনই জিটিএ ভোট না হয়। আর ভোট ঘোষণা হতেই জিটিএ ভোটের বিরোধীতায় ধর্ণায় বসেছিলেন বিমল গুরুং। অসুস্থ হয়ে পড়ার তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
❤ Support Us