Advertisement
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • ডিসেম্বর ৮, ২০২২

মোদি ঝড়ের ধুলো ছুঁয়ে গুজরাটে রেকর্ড গড়ল বিজেপি। কংগ্রেস প্রায় ভূমিশূণ্য, খাতা খুললেও সূর্যোদয় থেকে বহুদূরে আপ

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
মোদি ঝড়ের ধুলো ছুঁয়ে গুজরাটে রেকর্ড গড়ল বিজেপি। কংগ্রেস প্রায় ভূমিশূণ্য, খাতা খুললেও সূর্যোদয় থেকে বহুদূরে আপ

বাংলার বামফ্রন্টের মতো, পরপর সাতবার গুজরাটে ক্ষমতা দখল করল বিজেপি। এটি একটি রেকর্ড। পাশাপাশি ভোট শতাংশেও পদ্ম শিবির নিজেদের রেকর্ড ভেঙে নিজেরাই নজির গড়েছেন। যদিও রেকর্ড গড়ার কারিগর সমবেত গেরুয়া শিবির নয়, প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্রভাই মোদি। তাঁর নেতৃত্বের উচ্চতার কাছে কংগ্রেস, আপ, ইত্তেহাদুল মুসলিমিনকে কার্যত বনসাইয়ের মতো মনে হচ্ছে। মোদি ঝড়ে কংগ্রেস প্রায় ভূমিশূণ্য, আসাদ উদ্দিন ওয়েসির ইত্তেহাদ শূণ্য, কেজরিওয়ালের ঝাড়ুর প্রভাব একটু বাড়ল, সর্বভারতীয় দলের স্বীকৃতির পথে ওরা খানিকটা এগোল।

প্রেদেশিক রাজনীতিতে মোদির জনপ্রিয়তা যে নজির গড়ল, তার সঙ্গে গত বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপক সাফল্যেরই একমাত্র তুলনা হতে পারে। ত্রিমুখী চাপ আর দলবদলুদের ম্যারাথন রেসকে নস্যাৎ করে মমতার জয় ভোট পন্ডিতদের অবাক করে দিয়েছিল। বড়ো বড়ো সংবাদমাধ্যমের প্রাথমিক জল্পনা আর ভাষ্য, ভোট পরবর্তি সত্যের ধারে কাছেও থাকল না।

মমতার জয় থেকে মোদির জনপ্রিয়তার তফাত এই যে, গুজরাটে বিজেপির জয় অপ্রত্যাশিত ছিল না।ভোট কাটাকাটির অঙ্কের নিয়ম মেনে প্রান্তিক আর বিরুদ্ধ এলাকায়ও বিজেপি বাজিমাত করেছে।প্রত্যাশার অধিক আসন তাদের দখলে চলে এল।দোদুল্যমান ভোটও বিজেপির দিকে ঝুঁকে পড়ল যেমন প্রথম দফায় সৌরাষ্ট্র এবং কচ্ছের রান এলাকায় ৮৯ আসনে তেমনি দ্বিতীয় পর্বের উত্তর ও মধ্য গুজরাটের ৯৩ কেন্দ্রে।

যে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে বিজেপি আমল দেয় না, তাঁরাও আসাদউদ্দিন ওয়েসির বদলে নরেন্দ্র ভাই মোদিকে ভরসা ভাবলেন। কংগ্রেস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। আপ প্রথমার গুজরাটে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে সাফল্য পেয়েছে খানিকটা। যে ৫ আসনে তারা জয় পেয়েছেন, গত বিধান সভায় তার দুটিতে ছিল বিজেপি এবং  বাকি দুটোয় কংগ্রেস। আমআদমি পার্টি এবার আরেকটি আসন যেখানে পেয়েছে, ২০১৭র নির্বাচনে তা ছিল নির্দলের দখলে।

গুজরাটের ইতিহাসে কংগ্রেস কখনও এরকম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়নি। ১৭ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে কোনঠাসা করে দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। গত বিধানসভায় প্রাপ্ত আসনের ৬১টি খুঁইয়েছে হাত শিবির। এবারের প্রচারে রাহুলকে একবারই গুজরাটে দেখা গেল, অন্যদিকে সোনিয়া কথিত ‘মওত কা সওদাগর’ মোদি করলেন ২ ডজন সভা। সরকারি মেশিনারি, দলীয় কৌশল তাঁর পেছনে ছুটল।সব মিলিয়ে এমন একটি ঝড় তুললেন, যা ৭৭ সালে জ্যোতি বসুর নেতৃত্বাধীন বাম ঝড় কিংবা ২০২১ সালে মমতা ঝড়ের সমতুল্য। সর্বশেষ ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ১৮২ আসনের মধ্যে বিজেপি ১৫৬, কংগ্রেস ১৭, আপ ৫টি আর অন্যান্যরা ৪টি আসনে জয় লাভ করেছে।বিজেপির ভান্ডারে বেড়েছে ৫৭ আসন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন গুজরাটে মোদির এই সাফল্য পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্টের রেকর্ডকে স্পর্শ করল। তা কোন অর্থে? পরপর সাতবার ক্ষমতায় এসে? ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা তবে কোনও বিষয় নয়।বামফ্রন্টের জয় সবসময় সমবেত শক্তির জয়।জ্যোতি বসুর ক্যারিশ্মাও এখানে দল ও শরিক নির্ভর। একক ব্যক্তিত্বের জনপ্রিয়তাকে গুরুত্ব দেননি বামপন্থীরা। জ্যোতিবসুর ছবিতে ঢাকা পড়েনি বহু দলীয় লাল।গুজরাটে মোদিই সব।এক আর অদ্বিতীয়। দল তাঁকে এবাবেই তুলে ধরেছে। ভবিষ্যতেও ব্যক্তিপূজাকে তাদের অদ্বিতীয় অবলম্বন ভাবতে হবে।আরেকটি কথা বিজেপি গুজরাটে ৭বার জিতেও বামফ্রন্টের অর্জিত রেকর্ডকে ছুঁতে পারবে না। ৫ বছর পর গুজরাটে বিজেপির ক্ষমতার মেয়াদ হবে ৩২ বছর, আর বাংলায় বামফ্রন্ট ছিল টানা ৩৪ বছর।মমতা ঝড়ে ঘনিয়ে এল তাঁদের চূড়ান্ত বিপর্যয়। গো বলয় অধ্যুষিত গুজরাটে মোদির বিকল্প কোথায়? ভোটের হাওয়াকে জড় বানিয়ে যিনি মোদি গড়কে খান খান করে দেবেন। গড়ে তুলবেন জনমুখী রাজনীতির মানবজমিন।

 


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!