- প্রচ্ছদ রচনা
- অক্টোবর ১১, ২০২৩
সামনে আল হামাস, পেছনে ইরান ছাড়া আর কে ? কোনঠাসা আমেরিকা কেন অস্ত্র পাঠাচ্ছে ইসরায়েলে ?
দুই মুলুকের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে প্রতিবেশী আরবরা ! ইউক্রেনের পর খুলল রক্তপাতের আরেক ফ্রন্ট !

সিরিয়ায় ফিলিস্তিনি শরনার্থী শিবির
ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাত হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। এই সংঘাতের শিকড় নিহিত, শতাব্দী প্রাচীন ঔপনিবেশিক আবহে।
পশ্চিম এশিয়ায় যে অঞ্চল ফিলিস্তিন নামে পরিচিত, সেটি এক সময় ছিল ওসমান সাম্রাজ্যের অধীনে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে, তুর্কি ওসমানদের পরাজয়ের পর ব্রিটেন ফিলিস্তিনের নিয়ন্ত্রণ নেয়। সেই সময় ওখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠরা ছিলেন আরবিভাষী খ্রিস্টান এবং মুসলিমরা। হিব্রুভাষী ইহুদিরা ছিলেন সংখ্যায় কম। ব্রিটিশরা সংখ্যালঘু ইহুদিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র তৈরির দায়িত্ব নিতেই শুরু হয় গোষ্ঠী সংঘাত। দুই ভাষিক গোষ্ঠীর মধ্যে বাড়তে থাকে উত্তেজনা।
ইহুদিরা ফিলিস্তিনকে তাদের পূর্বপুরুষ বলে দাবি করেন। অন্যদিকে আরবিভাষীদের দাবি তোলে এই ভূমি তাদের। সেখানে হিব্রুভাষী ইহুদিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করতে শুরু করেন তারা।
১৯২০ থেকে ১৯৪০, দু-দশকে ইউরোপ থেকে দলে দলে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে তাদের জনভিত্তি বাড়তে থাকে। আসলে ইউরোপে ইহুদি নিপীড়ন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভয়ংকর নিধনযজ্ঞের পর সেখান থেকে পালিয়ে এরা নতুন মাতৃভূমি তৈরির স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন।
ফিলিস্তিনে তখন থেকেই ইহুদি আর আরবদের মধ্যে সংঘাতের শুরু, একই সঙ্গে সংঘাত বাড়ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধেও।
উনিশশো সাতচল্লিশ সালে জাতিসংঘের ভোটাভুটিতে ফিলিস্তিনকে দু-টুকরো করে দুই পৃথক ইহুদি এবং আরব রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হল। সেই প্রস্তাবে বলা হল, জেরুসালেম হবে একটি আন্তর্জাতিক নগরী। ইহুদি নেতারা এই প্রস্তাব মেনে নেন, আরব নেতারা প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে জাতিসংঘের ওই পরিকল্পনা কখনোই বাস্তবায়িত হয়নি।
ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা এবং মহা-বিপর্যয়
দুই ভাষীক জাতির বিরোধে একসময় ধর্মীয় রাজনীতি মাথাচাড়া দিতে শুরু করে, সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ ব্রিটিশরা বুঝতে পারে, এ পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, জাতিসংঘের ভোটাভুটির একবছরের মধ্যেই, ১৯৪৮এ ফিলিস্তিনের রাজপাট গুটিয়ে নেয় তারা। ব্রিটিশরা অঞ্চল ছাড়তেই ইহুদি নেতারা ইসরায়েলকে ঘিরে আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করে। তখন বহু ফিলিস্তিনি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়, শুরু হয় যুদ্ধ। প্রতিবেশী আরব দেশগুলোও সেখানে সৈন্য পাঠাতে শুরু করে।বাস্তুচ্যুত হন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি, প্রাণে বাঁচতে চাদের কিছু দেশান্তরী হন। ফিলিস্তিনিদের কাছে এই ঘটনা ‘আল নাকবা’ বা ‘মহা-বিপর্যয়’ বলে চিহ্নিত।

১৯৫৭, দেশহীন ফিলিস্তিনিরা
১৯৪৯ সালে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের মাধ্যমে যখন সংঘাত থামলো, ততদিনে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করে নিয়েছে। জর্ডান দখল করেছিল একটি অঞ্চল, যেটি এখন পশ্চিম তীর বলে পরিচিত। আর মিশরের অধীনে যায় গাজা। ভাগ হয়ে যায় জেরুসালেম, ইসরায়েলি বাহিনী দখল করে নগরীর পশ্চিম অংশ, আর জর্ডানের বাহিনী পূর্ব অংশ।দু’পক্ষের মধ্যে যেহেতু কখনোই কোন শান্তি চুক্তি হয়নি, তাই উভয় পক্ষই একে অপরকে ধারাবাহিক দোষারোপ করতে থাকে। দুই পক্ষের মধ্যে পরের দশকগুলোতে এরপর আরও বহু যুদ্ধ হয়েছে। ফিলিস্তিনি হত্যা, গণহত্যা অব্যাহত করে রাখে ইসরায়েল। দেশ ছাড়া বহু ফিলিস্তিনি ইউরোপ ও এশিয়ার নানা দেশে আশ্রয় নেয়।তাঁদের নেতারা মাটি কামড়ে নিজ দেশে মাটি কামড়ে নিজ দেশে পড়ে থাকলেন।গড়ে তুললেন ঐক্যবদ্ধ মঞ্চ।
মানচিত্রের রদবদল
১৯৬৭ সালে দ্বিতীয় বড়ো যুদ্ধে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের পূর্ব জেরুসালেম এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে, সিরিয়ার গোলান মালভূমি, গাজা এবং মিশরের সিনাই অঞ্চল দখল করে নেয়। বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি শরণার্থী হয়ে থেকে যায় গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে। প্রতিবেশী জর্ডান, সিরিয়া এবং লেবাননে নিজেদের ক্ষমতা বাড়াতে থাকে। ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েল এই ফিলিস্তিনি এবং তাদের বংশধরদের কাউকেই আর তাদের বাড়িঘরে ফিরতে দেয়নি। এবিষয়ে তাদের বক্তব্য এদের ফিরতে দিলে সেই চাপ ইসরায়েল সামলাতে পারবে না এবং ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে।
ইসরায়েল গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করলেও, এখনো অঞ্চলের ক্ষমতা তাদেরই হাতে।জাতিসংঘের দৃষ্টিতেও এটি এখনো ইসরায়েলের দখলে।
ইসরায়েল এখন পুরো জেরুসালেম নগরীকেই তাদের রাজধানী বলে দাবি করে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুসালেমকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখতে চায়। পুরো জেরুসালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ হাতে গোনা কয়েকটি দেশ।
গত ৫০ বছর ধরে ইসরায়েল এসব অধিকৃত জায়গায় ইহুদি বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে। ছয় লাখের বেশি ইহুদি এখন এই সব এলাকায় বসবাস করে। ফিলিস্তিনিদের দাবি, আন্তর্জাতিক আইনে এগুলো অবৈধ বসতি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায়। তবে ইসরায়েল তা মনে করে না। সে তার মানচিত্রের সম্প্রসারন চাইছে। তেলআভিব থেকে রাজধানী জেরুসালেমে স্থানান্তরিত করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে।
কী ঘটছে এখন ?
পূর্ব জেরুসালেম, গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে যেসব ফিলিস্তিনিরা থাকেন, তাদের সঙ্গে ইসরায়েলিদের উত্তেজনা প্রায়শই চরমে ওঠে।গাজা শাসন করে কট্টরপন্থী ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস। ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের অনেকবার যুদ্ধ হয়েছে। গাজা-র সীমান্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছে ইসরায়েল আর মিশর, যাতে হামাসের কাছে কোনো অস্ত্র পৌঁছাতে না পারে।
গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, ইসরায়েলের নানা পদক্ষেপ এবং কঠোর বিধিনিষেধের কারণে তাদের দুর্দশা বাড়ছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের দাবি, ফিলিস্তিনিদের সন্ত্রাস থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য তাদের এই কাজ তাদের করতেই হয়।
২০২৩-এর এপ্রিলের মাঝামাঝি রমজানের শুরু থেকে উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে। তখন প্রায় প্রতি রাতেই ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছিল। পূর্ব জেরুসালেম থেকে কিছু ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদের হুমকি তাদের আরও ক্ষুব্ধ করে তোলে। যার পরিণতি এই যুদ্ধ।

সিরিয়ায় ফিলিস্তিনি শরনার্থী শিবির
মূল সমস্যা কোথায় ?
ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিরা বেশ কিছু ইস্যুতে মোটেই সহমত হতে পারছে না, বলা যায় পারবে না। এর মধ্যে রয়েছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ভবিষ্যিত কী হবে সেটা। তাছাড়া পশ্চিম তীরে যেসব ইহুদি বসতি স্থাপন করা হয়েছে সেগুলো থাকবে, নাকি সরিয়ে নেয়া হবে; জেরুজালেম নগরী কি উভয়ের মধ্যে ভাগাভাগি হবে; আর সবচেয়ে জটিল বিষয় হচ্ছে- ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রশ্ন।
গত ২৫ বছর ধরেই শান্তি আলোচনা চলছে। কিন্তু উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাতের কোন সমাধান সূত্র এখনও অধরা।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট হঠাৎ কেন তেতে উঠেছে ?
জেরুসালেমে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কট্টর ইহুদি এবং ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের যে ছোটখাটো সংঘাত চলছিল সোমবার তা বিপজ্জনক লড়াইয়ের রূপ নেয়। সোমবার জেরুসালেমে আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ঢুকে ইসরায়েলি পুলিশের বেধড়ক লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেটে তিনশরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হওয়ার পর গাজা ভূখণ্ড থেকে সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েল দিকে রকেট ছোঁড়া শুরু করে। বদলা নিতে ইসরায়েল গাজায় বিমান হামলা শুরু করে।
ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি সংঘাতের মূলে যে কারণগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ২০১৮ সালের ১৪ মে-র একটি ঘটনা। ১৪ মে, ২০১৮, ফিলিস্তিনিদের রক্তাক্ত ইতিহাসে আরেকটি বিষাদময় দিন। যুক্তরাষ্ট্র সেদিন জেরুসালেমে তাদের দূতাবাস উদ্বোধন করছিল। আর সেদিন গাজা পরিণত হয়েছিল এক রক্তাক্ত রণক্ষেত্রে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের হিসেবে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে সেদিন গাজায় নিহত হন ৫৮ জন। আহত আরও প্রায় তিন হাজার। ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের পর এক দিনে এত বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানির ঘটনা আগে ঘটেনি।সে দিনটি ছিল ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী। আর ফিলিস্তিনিদের কাছে দিনটি হচ্ছে “নাকবা” বা “বিপর্যয়ের” দিন। লাখ লাখ ফিলিস্তিনি সেদিন ইসরায়েলে তাদের বাড়ি-ঘর থেকে উচ্ছেদ হয়েছিল। প্রতিবছর দিনটিকে তারা “নাকবা” দিবস হিসেবেই পালন করেন।
যুক্তরাষ্ট্র যে তাদের দূতাবাস জেরুসালেমে সরিয়ে নিয়ে এসেছে, সেটিও খুব বিপজ্জনক, উসকানিমূলক পদক্ষেপ। যুক্তরাষ্ট্র তাদের দীর্ঘদিনের নীতি থেকে সরে এসে এই পদক্ষেপ নেয়ার পর তা ফিলিস্তিনিদের মারাত্মকভাবে ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল।
আমেরিকার সঙ্গে ইসরায়েলের মিত্রতার পিছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের পক্ষে রয়েছে খুবই ক্ষমতাধর একটি লবি। সেখানে জনমতও ইসরায়েলের পক্ষে। এর ফলে কোন প্রেসিডেন্টের পক্ষে ইসরায়েলের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেয়া খুবই কঠিন।
২০১৩ সালে বিশ্বের ২২টি দেশে একটি সমীক্ষা হয়েছিল। তাতে দেখা যায়, পুরো পশ্চিম দুনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে একমাত্র দেশ, যেখানে জনমত ইসরায়েলের পক্ষে সহানুভূতিশীল। শুধু তাই নয়, এই দুইদেশ ঘনিষ্ঠ সামরিক মিত্র। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক সাহায্য পায় ইসরায়েল। এই সাহায্যের একটা বড় অংশই খরচ হয় সামরিক অস্ত্র কেনার খাতে।
ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের খোলাখুলি সমর্থন করার মতো একটিও বৃহৎ শক্তি এখন নেই। ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এক সময় মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো।মিশরের সেনাবাহিনী ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যূত করার পর সেখান থেকে হামাস আর কোন সমর্থন পাচ্ছে না। হামাসের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এখন সিরিয়া, ইরান এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ।
সংঘাতের শেষ কোথায় ?
পরিস্থিতি এখন যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে এক কথায় বলতে গেলে, খুব সহজে এই পরিস্থিতির কোন সমাধান মেলার সম্ভাবনা নেই। সংকট সমাধানের উদ্যোগটি নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এটিকে ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা এই উদ্যোগকে নাকচ করে দিয়েছিল পরে । যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্যোগ বিশেষ এগোয়নি। ভবিষ্যতের যে কোনো শান্তি চুক্তির আগে ফিলিস্তান ও ইসরায়েল দুপক্ষকেই জটিল সব সমস্যার সমাধানে সহমত হতে হবে। তা যতদিন না হচ্ছে, দুপক্ষের এই সংঘাত কি চলতেই থাকবে? কারণ এখন ফিলিস্তিনিদের শায়েস্তা করতে জো বাইডেন ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠিয়েছেন। ইসরায়েল নিষিদ্ধ সাদা ফসফরাস বোমা নিক্ষেপ করেছে গাজায়। তাদের সদর্প ঘোষণা গাজায় দখল তাদের। ফিলিস্তিনিরা সিরিয়া ও লেবাননকে পাশে পেয়ে ইসরায়েলকে নতুন করে আক্রমণ শানাচ্ছে। এই যুদ্ধে গত কয়েকদিনে হাজারের বেশি ইসরায়লি নাগরিক নিহত হয়েছেন। তাতে কয়েকজন মার্কিনিও রয়েছেন।হামাস যুদ্ধ-বন্দী হিসেবে আটকে রেখেছে দেশ-বিদেশি বাসিন্দাদের। সৌদি আরবের যুবরাজ সলমান পাল্টা ইসরায়েলি হামলার নিন্দা করেছেন। অন্যান্য আরবমুলকেও ফিলিস্তিনকে ঘিরে উদ্বেগ বাড়ছে। আরব-ইসরায়েল সম্পর্ক ক্রমশ উন্নত করে তুলবার যে প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল, তা এবার মুখ থুবড়ে পড়বে। রাশিয়া নিশ্চুপ থাকবে না, চিনও তলে তলে আরবদের পাশে দাঁড়াবে। ইরান সরাসরি রুখতে চাইবে ইসরাইলি হামলাকে। আমেরিকা পশ্চিম এশিয়ায় কোনঠাসা। বিশাল ভূখন্ড জুড়ে চিনের প্রভাব বাড়বে, কমবে মার্কিন প্রভাব ও উপস্থিতি। আরব দেশগুলি ধর্মীয় ভাবাবেগের চাইতে কৌশলগত কূটনৈতিক সম্পর্ককে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। সৌদি ইরানের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্ব গড়ে উঠছে।সামরিক অস্ত্রে ইরান এখন পশ্চিম এশিয়ার ও উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বলবান দেশ। ক্রমশ পরমাণু শক্তিধর হয়ে উঠছে। ইরানের পেছনে কে ? চিন? না বিশ্বের একমাত্র শিয়ারাষ্ট্রের হয়ে উঠবার আত্মশক্তি?
ইহুদিদের রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠার পর কখনও ইসরায়েল এরকম সঙ্কটের সম্মুখীন হয়নি। ইসরাইলি সেনার সন্ত্রাস শতশত পরমাণু বোমার উৎপাদন এবং মোস্সাদের জবরদস্ত উপস্থিতি সত্ত্বেও তেল আবিব আজ বিপন্ন। প্রতিশোধকামী যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হতে পরে। সভ্যতার সামনে এও আরেক মহাভয়।
❤ Support Us