- দে । শ
- জানুয়ারি ১১, ২০২২
ভারত, আমেরিকায় আক্রান্তের রেকর্ড, ফ্রান্সে হাসপাতাল উপচানো রোগী, বিশ্ব জুড়ে ওমিক্রনের দাপট
বিশ্বের কোন দেশ কী ভাবে লড়ছে এ যাবৎ বৃহত্তম করোনা-স্ফীতির সঙ্গে?

করোনা-স্ফীতির জেরে নতুন করে ভারতে প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যার রেকর্ড ভাঙছে-গড়ছে । একই অবস্থা বিশ্ব জুড়ে। আমেরিকায়, ফ্রান্স, ব্রিটেন সর্বত্র এই চিত্র। হাসপাতগুলোতে উপচে পড়ছে করোনা রোগী । প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে হাসপাতালে অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কাজ। সব মিলিয়ে ওমিক্রন আতঙ্কে কাঁপছে বিশ্ব ।
আমেরিকায় গত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ১০ লক্ষের বেশি করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। পরিসংখ্যান বলছে বাইডেনের দেশে গত সাত দিনে লাফিয়ে বেড়েছে সংক্রমণ। এই মুহূর্তে আমেরিকায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫০০ জন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। অথচ গত বছর জানুয়ারিতে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৫১ জন। সেই রেকর্ড ভাঙল সম্প্রতি।
ভারতে পর পর আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। ব্যতিক্রম নয় আমেরিকাও। কিন্তু এরই মধ্যে পরিষেবা জারি রাখতে নতুন এক পথ নিয়েছে তাঁরা। সংবাদ সংস্থা এপি খবর, সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বলে দেওয়া হয়েছে, উপসর্গ যদি মৃদু থাকে, তা হলে কাজ চালিয়ে যেতে।
করোনা রোগী ছাড়া ফ্রান্সের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আর কিছুরই চিকিৎসা করার মতো পরিস্থিতি নেই। রবিবার যেখানে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৭৬৭ জন, সোমবার সেই সংখ্যা পৌঁছেছে ২২ হাজার ৭৪৯-এ। ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওলিভার ভেরান বলছেন, ‘ওমিক্রনের মারণ শক্তি কম হতে পারে, কিন্তু যে হারে মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাতে অন্য আশঙ্কা দেখছেন চিকিৎসকেরা।’
ইংল্যান্ড—আমেরিকা বা ফ্রান্সের মতো না হলেও ব্রিটেনের পরিস্থিতি খুব একটা ভাল নয়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনা মাথাচাড়া দেওয়া এবং পর পর চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার জেরে, সে দেশেও করোনা বিনা অন্য চিকিৎসা পরিষেবা (ক্যান্সার, অস্ত্রোপচার ও অন্যান্য) প্রদান প্রায় থমকে যাওয়ার মুখে। বরিস সরকার ঘোষণা করেছে, সমস্ত বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা যেন সরকারি কাঠামোর অন্তর্গত হাসপাতালগুলোয় অন্যান্য জরুরি পরিষেবা প্রদানের কাজ চালিয়ে যেতে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোকে প্রত্যক্ষ সহায়তা দেয়। এ নিয়ে সরকার ও বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে তিন মাসের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
ইতালি–ঊর্দ্ধমুখী সংক্রমণ রুখতে টিকাকরণের ওপর জোর দিচ্ছে ইতালি। টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ নতুন এবং কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সে দেশের সরকার। সোমবার থেকে ইতালিতে নিয়ম জারি করে বলা হয়েছে, রেস্তরাঁ, পানশালা, বিনোদন কেন্দ্র ইত্যাদিতে প্রবেশ করতে হলে বাধ্যতামূলক ভাবে দেখাতে হবে টিকাকরণের শংসাপত্র। কিংবা প্রমাণ দিতে হবে, তিনি সদ্য করোনা থেকে সেরে উঠেছেন। ট্রেন, বাস, ট্রাম পরিষেবা নিতে গেলেও এই নিয়ম বাধ্যতামূলক। ইতালিতে পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে করোনার টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। টিকা না নিলে ১০০ ইউরো ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে ৮ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়া—সোমবারই অস্ট্রেলিয়ায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লক্ষের গণ্ডি পেরিয়েছে । পরিস্থিতিতে সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, ‘ওমিক্রনের বিরুদ্ধে লড়তে গেলে সবচেয়ে জরুরি আমাদের সচেতনতা। তা হলে লকডাউনের পথে হাঁটতে হবে না।
চিন—সোমবার ওমিক্রন আক্রমণের কথা জানা গিয়েছে বেজিং থেকেও। চিনের জি’জিয়ান ও তিয়ানজিং-এ ওমিক্রন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। চিনে ওমিক্রন সংক্রমণের সন্ধান মেলা জায়গায় বিপুল আকারে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু করে দিয়েছে প্রশাসন । সব মিলিয়ে গোটা বিশ্ব কাঁপছে করোনার জেরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মারণ ক্ষমতা কম হলেও যে হারে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, তার চাপেই ভেঙে পড়ার দশা চিকিৎসা পরিকাঠামোর। যার পরিণাম হতে পারে ভয়ঙ্কর।
❤ Support Us