- প্রচ্ছদ রচনা
- জুন ২০, ২০২২
অগ্নিপথ-এর বিরোধিতায় আজ ভারত বনধ । বহু রাজ্যে কড়া নিরাপত্তা, সতর্ক নবান্নও ।কৃষিবিলের পর আবার আন্দোলনের অগ্নিপথে ভারত।

টানা কয়েকদিনের বিক্ষোভের পর আজ অগ্নিপথ প্রকল্প রুখতে দেশ জুড়ে বনধের ডাক দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা৷ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিভিন্ন রাজ্য৷ বিক্ষোভ ছড়ায় নি, তবু সতর্ক নবান্ন৷
মারাত্মক চেহারা বিহারের৷ পূর্ব ভারতের এই রাজ্য দিয়ে যাতায়াতকারী ৩৫০টি ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে৷ বিজেপি-র বিভিন্ন পার্টি অফিসে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো৷ অন্তত ২০ জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ।কেরলের রাজ্য সরকার জানিয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তিকে রক্ষা করতে গোটা পুলিশবাহিনীকে নামানো হয়েছে৷ স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঝাড়খণ্ড, নবম এবং একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ গৌতম বুদ্ধ নগরের আশেপাশে যে কোনও বড়ো জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দিল্লিপুলিশ৷ ফরিদাবাদেও রাস্তা অবরোধের চেষ্টা চলছে৷ তা আটকাতে আজ ২০০০ পুলিশকর্মী রাস্তায় নেমেছে।
রাহুল গান্ধি জানিয়ে দিয়েছেন, আজ কংগ্রেস কর্মীরা দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করবেন৷ এত বিক্ষোভ সত্ত্বেও কেন্দ্র অনড়। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, অগ্নিপথ প্রকল্প ফিরিয়ে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁরা এই ধরনের বিক্ষোভে যোগ দেননি—এই মর্মে তাঁদের মুচলেকা দিতে হবে৷ ভুয়ো খবর রুখতে ৩৫টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপকে নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র৷ এরই মধ্যে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেছেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় । বলেছেন, অগ্নিবীরদের বিজেপি পার্টি অফিসে নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্বে নিয়োগ করা হবে। তাঁর এই মন্তব্যে বিক্ষোভের স্ফূলিঙ্গ সরাসরি আগুনের রূপ নিয়েছে। কঠোর ভাষায় নিন্দা করেছেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, শিবসেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদি এবং বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধী।
কৈলাসের উস্কানিমূলক মন্তব্যে বিজেপির অস্বস্তি বাড়ল। বিপাকে পড়ে সাফাই গেয়েছেন বিজয়বর্গীয়—আমি বলতে চেয়েছিলাম, অগ্নিবীররা প্রশিক্ষণ শেষ করে যে কাজেই যোগ দিতে চাইবেন, সেখানেই তাঁদের নিয়োগ করা হবে। যাঁরা আমার বিবূতি বিকৃত করেছেন, তাঁরা ‘টুলকিট গ্যাংয়ের সদস্য’ ।ক্রমাগত বিক্ষোভ চলতে থাকায় রবিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ভারতীয় সেনার তিন বিভাগের প্রধান। আলোচনার পরে বেশ কিছু রদবদলের কথা ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তারপরেই বিজেপি নেতার এহেন মন্তব্যে আবার বিতর্ক শুরু হয়ে গেল ।
কৃষি বিল নিয়ে আন্দোলেনর পর কোনও ইস্যুতে এরকম বিপাকে পড়ে নি বিজেপি । তরুণরা দেশের সব এলাকায় ক্ষুদ্ধ। তাঁদের স্বপ্নে আঘাত দেখে মর্মাহত অভিভাবকরা। যে প্রকল্প সদর্থক হতে পারত, সেটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বুমেরাং হয়ে বিজেপির দিকে ধেয়ে আসছে । বিরোধীদের দোষারোপ করছে সরকার । সচরাচর প্রধানমন্ত্রীকে কোনও ইস্যুতে মৌন থাকতে দেখা যায়, তাঁকেও সরব হতে হচ্ছে । নতুন ইস্যু খুঁজে পেয়েছেন বিরোধীরা । কংগ্রেস হারানো জোর যেন খুঁজে পাচ্ছে । সরব প্রতিবাদে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে মুখ খুলছেন প্রিয়াঙ্কা-রাহুল । অন্যান্য বিরোধী শক্তির ভূমিকা অপেক্ষাকৃত নিস্তেজ । পরিস্থিতির উপর ওঁরা লক্ষ্য রাখছেন । আজকে ভারত বন্ধের পর পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে, সম্ভবত কেউই নীরব থাকবেন না । বাধ ভাঙা প্রতিবাদ আছড়ে পড়বে দেশের চর্তুদিকে ।
❤ Support Us