- মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
- অক্টোবর ২৪, ২০২২
নাটকীয় ম্যাচে বিরাট জয় ভারতের

হাড়হিম করা চিত্রনাট্য। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা। শেষ ওভারে ভারতের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৬ রান। চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতি। নওয়াজের প্রথম বলেই আউট হার্দিক। পরের বলে ১ রান। ৪ বলে দরকার ছিল ১৫। চতুর্থ বলে ২ রান। পরের নো বলে ৬। ৩ বলে দরকার ছিল ৬। ওয়াইড করে বলেন বাঁহাতি স্পিনার মহম্মদ নওয়াজ। চতুর্থ বলে কোহলির উইকেট ভেঙে গেলেও ‘ফ্রি হিট’ হওয়ার জন্য ৩টি বাই রান আসে। পরের বলে স্টাম্পড কার্তিক। শেষ বলে ১ রান নিয়ে দলকে রুদ্ধশ্বাস জয় এনে দেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ৫৩ বলে ৮২ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন কোহলি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪ উইকেটে জয় ভারতের। গত বছর টি২০ বিশ্বকাপে হারের মধুর প্রতিশোধ কিং কোহলির হাত ধরে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে বিপর্যয়ে পড়েছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই পাক অধিনায়ক বাবর আজমকে (০)। চতুর্থ ওভারে আবার অর্শদীপের ধাক্কা। তুলে নেন মহম্মদ রিজওয়ানকে (০)। ফর্মে থাকা সেরা দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে চাপে ফেলে দেন অর্শদীপ সিং। ১৫ রানে ২ উইকেট হারিয়েও শান মাসুদ ও ইফতিখার আমেদের সৌজন্যে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে পাকিস্তান। দুজনের জুটিতে ওঠে ৭৬ রান। দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন ইফতিখার। অক্ষর প্যাটেলের এক ওভারে তিনটি ৬ মারেন। শেষ পর্যন্ত সামির বলে এলবিডব্লিউ হন ইফতিখার (৩৪ বলে ৫১)।
ইফতিখার আউট হতেই আবার ধস পাকিস্তানের ইনিংসে। চতুর্দশ ওভারে শাদাব খান (৫) ও হায়দার আলিকে (২) তুলে নেন হার্দিক পান্ডিয়া। ১৭তম ওভারে আসিফ আলিকে (২) ফেরান অর্শদীপ। ৮ বলে ১৬ রান করে আউট হন শাহিন আফ্রিদি। দুরন্ত ব্যাটিং করে ৪২ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত থাকেন শান মাসুদ। ৩২ রানে ৩ উইকেট নেন অর্শদীপ। ৩০ রানে ৩ উইকেট নেন হার্দিক। ২৪ রানে ১ উইকেট সামির। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে তোলে ১৫৯/৮।
ব্যাট করতে নেমে ভারতের শুরুটাও ভাল হয়নি। শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহদের ভয়ে রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুলদের শুরু থেকেই বাড়তি সতর্ক ছিলেন। প্রথম থেকেই আক্রমণের রাস্তায় হাঁটেননি ভারতের দুই ওপেনার। তবু শেষরক্ষা হয়নি। বেশি সতর্কতা দেখাতে গিয়ে দ্বিতীয় ওভারেই দুর্ভাগ্যের শিকার লোকেশ রাহুল। নাসিম শাহর অফস্টাম্পের সামান্য বাইরে পড়া ডেলিভারি রাহুলের (৮ বলে ৪) ব্যাটের ভেতরের দিকের কানায় লেগে উইকেট ভেঙে দেয়। চতুর্থ ওভারে বড় ধাক্কা খায় ভারত। হ্যারিস রউফের ১৪৫ কিমি গতিতে ধেয়ে আসা ডেলিভারি সামলাতে পারেননি রোহিত (৭ বলে ৪)। বল তাঁর ব্যাটের কানা ছুঁয়ে প্রথম স্লিপে ইফতিখারের হাতে চলে যায়। ডানদিকে ঝঁাপিয়ে দুরন্ত ক্যাচ নেন ইফতিখার।
শুরুতেই ২ উইকেট। এ যেন পাকিস্তান ইনিংসের পুনরাবৃত্তি। ব্যাট হাতে বাইশ গজে সূর্যকুমারের আগমন। সতর্কতার মোড়ক সরিয়ে রেখে পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় হাঁটতে চেয়েছিলেন সাম্প্রতিক কালে ভারতের সবথেকে সফল ব্যাটার সূর্যকুমার যাদব। ভাল শুরু করেও সাফল্য পেলেন না। হ্যারিস রউফের শর্ট লেংথ ডেলিভারি কাট করে বাউন্ডারিতে পাঠাতে চেয়েছিলেন। সূর্যকুমারের ব্যাট ছুঁয়ে বল উইকেটের পেছনে মহম্মদ রিজওয়ানের হাতে জমা হয়। ২টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১০ বলে ১৫ রান করে আউট হন সূর্য। সবচেয়ে আতঙ্কের ব্যাটারকে তুলে নিয়ে ম্যাচে ফিরে আসে পাকিস্তান।
সূর্যকুমারের আউট হওয়ার ধাক্কা তো ছিলই, ভারত আরও চাপে পড়ে যায় অক্ষর প্যাটেলের রান আউটে। সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই কোহলির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান অক্ষর (২)। ৩১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। এরপর আস্তে আস্তে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান কোহলি ও হার্দিক। আক্রমণের জন্য বাঁহাতি স্পিনার মহম্মদ নওয়াজকে বেছে নেন। দ্বাদশ ওভারে তাঁর বলে হার্দিক ২টি ও কোহলি ১টি ৬ মারেন।
চাপ কাটিয়ে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন কোহলি। ৪৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ১৮ তম ওভারে শাহিন আফ্রিদির বলে ১৭ রান নিয়ে ম্যাচে ফিরে আসে ভারত। ১৯ তম ওভারে হ্যারিস রউফের শেষ ২ বলে দুটি ৬ মেরে দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দেন কোহলি। নওয়াজের বলে হার্দিক (৩৭ বলে ৪০) আউট হন। দুজনের জুটিতে ওঠে ৭৮ বলে ১১৩ রান। হার্দিক আউট হতেই তৈরি হয় রোমাঞ্চকর পরিস্থিতি। শেষ পর্যন্ত বাজিমাত ভারতের (১৬০/৬)।
❤ Support Us