Advertisement
  • দে । শ
  • জুন ২৯, ২০২২

ওপার বাংলায় রপ্তানি, এপার বাংলায় হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

ওপার বাংলায় রপ্তানি, এপার বাংলায় হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

মূল্যবৃদ্ধির বাজারে দুবেলা ভাত-আলুসিদ্ধ খেয়ে দিন গুজরান করার পথও বন্ধ হতে বসেছে। শুধু ভাতও এবার বুঝি সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাবে। চালের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে এমন আশঙ্কাই জেঁকে বসছে আমগেরস্তের হেঁশেলে।বস্তুত জোগানে ঘাটতি না থাকলেও চালের দামে রীতিমতো ছেঁকা খাওয়ার জোগাড়। মিনিকেট-বাঁশকাঠি তো রয়েইছে, স্বর্ণ, রত্না-সহ অন্যান্য চালের দামও ভালই বেড়েছে। বাজারে গত মাস দেড়েকের মধ্যে লাফিয়ে বেড়েছে চালের দাম। ব্যবসায়ীদের দাবি, জোগানের অভাব নেই সেটাও যেমন ঠিক, তেমনই বাইরে প্রচুর চাল রপ্তানি হওয়াতেই যে দাম বাড়ছে সেটাও সত্যি। বিশেষত বাংলাদেশে। এখানকার থেকে কিছুটা বেশি দামেই চাল বাইরে রপ্তানি হয়ে যাচ্ছে। মিনিকেট থেকে গোবিন্দভোগ, রত্না থেকে বাঁশকাঠি, বাঁশমতি সব চালের দামই গড়ে গত দু’মাসে ৬ থেকে ১০ টাকা প্রতি কেজিতে বেড়েছে।

ব্যবসায়ীদের কথায়, বাংলাদেশে যতটা উৎপাদন ততটা জোগান এবার সেখানে নেই। আর তাই এ রাজ্যের চালে টান পড়েছে। ওখানে চাহিদা এ রাজ্যের থেকে অনেকটাই বেশি। সব থেকে বেশি স্বর্ণ চাল বাংলাদেশ গিয়েছে। তবে লন্ডন থেকে সিঙ্গাপুর সর্বত্রই বাঙালি রয়েছেন, ফলে অন্যান্য দেশেও চাল রপ্তানি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে, একই সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যেও। চালব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এবার চাষিরা পর্যাপ্ত দাম পেয়েছেন ধানের। রাইসমিলেও যথেষ্ট পরিমাণেই ধান মজুত রয়েছে। তা সত্ত্বেও দাম চড়ছে খুচরো বাজারে। পাইকারি বাজারের সঙ্গে রয়ে যাচ্ছে দামের বিরাট ফারাক।

বর্ধমান, আরামবাগ, হুগলি, বীরভূম, হাওড়া, মেদিনীপুরে এবার ধানের ভালই ফলন হয়েছে। তা সত্ত্বেও রপ্তানি বেড়ে যাওয়াতেই চালের দামটা বাড়ছে। পাইকারির সঙ্গে খুচরো বাজারে চালের ফারাক থেকে যাচ্ছে ১০-১২ টাকা।যত দামি চাল, পাইকারির সঙ্গে খুচরো বাজারে ততই তার দামের ফারাক বেশি। তবে বাজারভেদে দামের ফারাক রয়েছে। পোস্তাবাজার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক সঞ্জয় সাহা বলেছেন, ‘এবার চালের উৎপাদন ভালই হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশে প্রচুর চাল রপ্তানি হয়েছে। তাতেই দাম বেড়েছে এ রাজ্যে। বিগত পাঁচদিনে বাসমতি চাল ছাড়া ভারতে উৎপাদিত বাকি চালের দাম প্রতি টন ৩৫০ ডলার থেকেবেড়ে ৩৬০ ডলারে বেড়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে আমদানি শুল্ক ও দাম ৬২.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করে দেওয়ায় পরই এই দামবৃদ্ধি হয়েছে ।

মূল্যবৃদ্ধি ও উৎপাদন সঙ্কটের কারণে যেভাবে ভারতে গমের রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, সেভাবে যদি চালের রফতানির উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়, তবে চরম সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে বাংলাদেশ। সেই কারণেই ভারতের কাছ থেকে বাসমতি বাদ দিয়ে অন্যান্য চাল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

উল্লেখ্য, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্ববাজারে খাদ্যসঙ্কট দেখা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত গমের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় সঙ্কট আরও প্রবল হয়েছে। চিনির রফতানির উপরও রাশ টানা হয়েছে। দেশ ও বিশ্ব বাজারে চালের দাম বাড়ায়, একাধিক রাজ্যেও চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে চালের দাম প্রায় ২০ শতাংশ এবং দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও ১০ শতাংশের আশেপাশে বৃদ্ধি পেয়েছে ।

 


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!