- দে । শ স | হ | জ | পা | ঠ
- জুন ৩, ২০২৩
বিশ্ব মঞ্চে ভারতীয় প্রতিভার স্বীকৃতি। সম্মান পেলেন উদ্ভিদ বিদ্যায় দেশের প্রথম ডক্টরেট

প্রখ্যাত ভারতীয় মহিলা উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ডক্টর জানকী আম্মালকে সম্মান জানাল লণ্ডনের রয়্যাল হর্টিকালচার সোশ্যাইটি। সম্প্রতি, শহরে আয়োজিত চেলসি পুষ্প প্রদর্শনীতে আট জন নারীকে সম্মান জানানো হয় উদ্ভিদ বিদ্যায় তাঁদের অসামান্য অবদানের জন্য । সে তালিকায় জায়গা করে দিল ভারতীয় প্রতিভার নাম।
একটা সময় ছিল যখন মনে করা হত উদ্ভিদ বিজ্ঞান মহিলাদের বিষয়। পুরো চিত্রপটে পরিবর্তন ঘটে ১৭৩৫ সালে কার্ল ভন লিনিয়া লিখত সিস্টেমা ন্যাচার প্রকাশিত হওয়্যার পর। তাঁর মূল বক্তব্য ছিল গাছপালার জীবনের সঙ্গে মানুষের যৌন জীবনের সঙ্গে তুলনীয়। সে সময়ের রক্ষণশীল ইউরোপীয় সমাজ এমন বক্তব্যকে খোলা মনে গ্রহণ করদ ন্নিতে পারেনি। তাই উদ্ভিদ বিজ্ঞান চর্চার দরজা মেয়েদের জনয় বন্ধ হয়ে যায়। তবে প্রতিবন্ধকতা যেখানে থাকে প্রতিষ্পর্ধাও সেখানে তত তীব্রভাবে আত্মপ্রকাশ করে। আম্মাল বা অন্যান্য মেয়েদের ক্ষেত্রেও অনুরূপ ঘটনাই ঘোটে। যাবতীয় বাধাকে উপেক্ষা করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন তিনি। দেশের প্রথম মহিলা হিসেবে আমেরিকা গিয়ে বটানিতে পিএইচ ডি ডিগ্রি অর্জন করেন ভারতের আম্মাল।
আম্মালের জন্ম ১৮৯৭ সালে। কেরলের তেলিচেরিতে। ছোটো থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ও বিদ্যোৎসাহী প্রকৃতির ছিলেন আম্মাল। মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে উদ্ভিদ বিদ্যায় সাম্মনিক ডিগ্রি অর্জন করার পর ১৯২৪ সালে আমেরিকার মিচিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চলে যান। সেখান থেকে দু বছর পর মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। ভারতে ফিরে এসে নিজের শহরে ওমেনস ক্রিসস্টান কলেজে কিছুদিন অধ্যাপনা করেন। পরে, আবার পিএইচডি করতে মিচিগানে ফিরে যান। সেখান থেকে ১৯৩১ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। দেশে ফিরে এসে ত্রিবান্দামের মহারাজা কলেজ অফ সায়েন্সে অধ্যাপনা করেছিলেন অসামান্য মনীষার অধিকারী এই নারী। গবেষণা ও অধ্যাপনা দু’ক্ষেত্রেই স্বকীয়তার ছাপ রেখেছিলেন আম্মাল। ১৯৫৬ সালে তাঁকে মিচিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সাম্মানিক এলএলডি দেওয়া হয়।
আম্মালের গবেষণা মূলত ক্রোমোজমকে কেন্দ্র করে । এক্ষেত্রে তাঁর সবথেকে বড়ো অবদান হল ক্রোমোজোমের বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটিয়ে কীভাবে আখ ও বেগুনের উচ্চ ফলনশীল বীজ তৈরি করা যায়। তাঁর এ গবেষণার জন্যই তিনি স্মরনীয় হয়ে রয়েছেন। ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজের জ্ঞান ও মনীষার দ্যুতি ছড়ানো জানকী ১৯৫১সালে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর আমন্ত্রণে দেশে ফিরে আসেন । ডিরেক্টর হন বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইণ্ডিয়ার। পরবর্তীকালে মাদাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক হন। ১৯৮৪ সালে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত জ্ঞানচর্চার কাজে নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন তিনি। সেণ্ট্রাল বোটানিক্যাল ল্যাব, ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার, রিজিওনাল রিসার্চ সেন্টার সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে অলংকৃত করেছেন। এমন প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও গবেষক সম্মানিত না হলে তা নিঃসন্দেহে বেদনার।
❤ Support Us