Advertisement
  • এই মুহূর্তে মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
  • ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪

বিদেশে খেলার প্রস্তাব । কেন না, দেশের দীর্ঘদেহী বাস্কেটবলার পুনমের ?

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
বিদেশে খেলার প্রস্তাব । কেন না, দেশের দীর্ঘদেহী বাস্কেটবলার পুনমের ?

বিদেশে গেলে নিরামিষ খাবার পাবেন না। খেতে হবে আমিষ জাতীয় খাবার। তার জন্যই কিনা বিদেশে খেলার প্রস্তাব নাকচ!‌ হ্যাঁ এমনই অবাক করার মতোই কাণ্ড ঘটিয়েছেন ভারতের মহিলা বাস্কেটবল খেলোয়াড় পুনম চতুর্বেদী।

দেশের সবথেকে দীর্ঘদেহী মহিলা বাস্কেটবল খেলোয়াড় উত্তরপ্রদেশের পুনম চতুর্বেদী। উচ্চতা ৭ ফুট ৩ ইঞ্চি। অনেক দেশে এত লম্বা মহিলা বাস্কেটবল খেলোয়াড় নেই। বিভিন্ন দেশের লিগে খেলার ডাক আসে। কিন্তু নিরামিষাশী হওয়ার জন্য বিদেশে খেলার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন পুনম।

বাংলাতে রাজ্য সিনিয়র বাস্কেটবল প্রতিযোগিতায় কোর্টে নেমেছিলেন এই দীর্ঘদেহী মহিলা বাস্কেটবল খেলোয়াড়। রেলে চাকরি করেন। তাই পূর্ব রেলের হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করেছিলেন পুনম। তিনিই ছিলেন প্রতিযোগিতার প্রধান আকর্ষণ। বাস্কেটবল তাঁবুতে রাজ্য সিনিয়র প্রতিযোগিতা চলার ফাঁকেই তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার হিড়িকও পড়ে যায়। রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস থেকে শুরু করে অনেকেই ছবি তোলেন।

পুনমের বাবা উত্তরপ্রদেশ পুলিশে চাকরি করেন। মা গৃহবধূ। ১১ বছর বয়সেই পুনমের উচ্চতা ৬ ফুট ছাড়িয়ে যায়। বেশি উচ্চতার জন্য পুনমের বাবার এক বন্ধু পরামর্শ দিয়েছিলেন, মেয়েকে বাস্কেটবল শেখানোর জন্য। এরপর পুনমের বাবা তাঁকে কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে বাস্কেটবলে কোচিংয়ে ভর্তি করে দেন। সেখানেই নিজেকে ক্রমশ মেলে ধরেন পুনম। বাস্কেটবলে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলছিলেন, ‘‌১০–১১ বছর বয়সেই আমার উচ্চতা ৬ ফুট ছাড়িয়ে যায়। বাবা তাঁর এক বন্ধুর পরামর্শে আমাকে বাস্কেটবলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন। সেটাই আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।’‌

২০১০ সালে ছত্তিশগড়ের রাজনন্দগাঁওয়ে জাতীয় যুব বাস্কেটবলে অংশ নেন পুনম। প্রতিযোগিতায় তাঁর দক্ষতা দেখে ছত্তিশগড়ের হয়ে খেলার প্রস্তাব দেন দেশের কিংবদন্তি কোচ রাজেশ প্যাটেল। তিনি ঘসে–মেজে পুনমকে তৈরি করেন। এরপর রেলের কোচ সত্যব্রত নায়েক পুনমকে রেলের হয়ে খেলার প্রস্তাব দেন। তবে পুনমের এগিয়ে যাওয়ার রাস্তাটা মসৃন ছিল না। ২০১৪ সালে ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। খেলোয়াড়ী জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। অদম্য জেদই পুনমকে কোর্ট ছাড়া করাতে পারেনি। চিকিৎসায় পুরোপুরি সুস্থ হয়ে এখন স্বমহিমায় দেশের এই দীর্ঘদেহী মহিলা বাস্কেটবল খেলোয়াড়। কোচরা যথেষ্ট সতর্কভাবে অনুশীলন করাতেন পুনমকে।

২০১৯ সালে পূর্ব রেলে চাকরি পান পুনম। হাওড়া স্টেশনে সিনিয়র ক্লার্ক হিসেবে যোগ দেন। সেই থেকেই তিনি বাংলায় রয়েছেন। থাকেন বেহালায় জেমস লং সরণিতে রেল কোয়ার্টারে। গত ৬ বছর ধরে জাতীয় দলের নিয়মিত খেলোয়াড় হওয়ার সুবাদে জাতীয় শিবিরেই বেশি সময় থাকতে হয়।

উচ্চতা বেশি হওয়ার জন্য নানারকম সমস্যায় পড়তে হয় পুনমকে। নিজের বাড়ি থেকে সব জায়গাতেই দরজা দিয়ে ঢুকতে, বার হতে সমস্যা হয়। খাটে ঘুমাতেও সমস্যা। খাটে কাঠ লাগিয়ে লম্বা করতে হয়েছে। তবে রেল কোয়ার্টার কিংবা জাতীয় শিবিরে তো সেই সুযোগ নেই। বেশিরভাগ সময় মেঝেতেই ঘুমাতে হয়। বসতেও সমস্যা। বাসেও চড়তে পারেন না। পোশাক–আশাকেও সমস্যা। বিশেষভাবে পোশাক তৈরি করতে হয়। নিজের মুখেই সমস্যার কথা বলছিলেন পুনম। বিদেশের খেলার প্রস্তাব প্রত্যাখানের ব্যাপারে তিনি বলছিলেন, ‘‌বিদেশে খেলার ডাক পেলেও নিরামিশাষী হওয়ার জন্য যেতে পারিনি। বেশি লম্বা হওয়ার জন্য নানারকম প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয়। সমস্যা নিয়েই এগিয়ে চলেছি। তবে বেশি উচ্চতার জন্য বাস্কেটবল কোর্টে অনেক সুবিধা পাই।’‌


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!