- এই মুহূর্তে দে । শ
- জুন ১২, ২০২৩
শান্তি ফেরেনি মণিপুরে, তাই ইন্টারনেট পরিষেবা রদের মেয়াদ বাড়লো ১৫ জুন পর্যন্ত

১৫ জুন, বেলা ৩টে পর্যন্ত মণিপুরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের নির্দেশ। ইতিমধ্যেই প্রায় দেড় মাস ধরে মণিপুরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ ছিল। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে জাতিগত হিংসার ঘটনা এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, ফলে ইন্টারনেটের উপর নিষেধাজ্ঞা বেড়েই চলেছে। এর ফলেই আরও এক দফায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের নিষেধাজ্ঞা জারির মেয়াদ বৃদ্ধি করল মণিপুর সরকার। মণিপুর সরকার এক সরকারি নির্দেশিকায় জানিয়েছে, আগামী ১৫ জুন বিকেল ৩টে পর্যন্ত রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবায় নিষেধাজ্ঞা জারি হল।
ইতি মধ্যেই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার এই সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে। সেই মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। মামলাকারীদের দাবি ছিল, মত প্রকাশ ও বাক স্বাধীনতার মতো সাংবিধানিক অধিকারে এভাবে ইন্টারনেট বন্ধের মাধ্যমে সরকার হস্তক্ষেপ করছে। এমনকি যারা ইউপিআই ব্যবহার করে কর্মীদের বেতন ও বাণিজ্যিক লেনদোন চালায় তাদেওর এভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখার ফলে ক্ষতি হচ্ছে। এই আবহেই আবারও মণিপুরে ইনৃটারনেট পরিষেবার উপর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়াল মণিপুর সরকার। সরকারের যুক্তি ইন্টারনেটের মাধ্যমে গুজব ছড়ালে রাজ্যে হিংসতার ঘটনা আবারও বাড়তে পারে,তাই এই সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে।
মণিপুরে হিংসার কারণে গত ৩ মে থেকে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে। ৩ মে থেকেই মণিপুরে হিংসার ঘটনার সূত্রপাত।
‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ বা এটিএসইউএম- এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তি হয়। রাজ্যের হাই কোর্ট মেইতিদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই কুকি সহ অন্য জনজাতি সংগঠনগুলি আদালতের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় পথে নামে। আদি বাসিন্দা মেইতি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষ ক্রমে হিংসার আকার নেয়। কুকিরা অভিযোজ করে, তারা খ্রিস্টান, তাই সরকার পরিকল্পিতভাবে তাদের আক্রমণ করছে। বিভিন্ন চার্চের প্রধানরাও সরকারকে সহিষ্ণু হওয়ার আবেদন জানায়।
সরকারি হিসাবে এখনও পর্যন্ত মণিপুরে এই হিংসার ঘটনার বলি হয়েছেন অন্তত ১০০ জন। আহত হয়েছেন ৩০০-র বেশি মানুষ। বহু মানুষ হিংসার কারণে ঘরছাড়া। সরকারি হিসাবে সংখ্যাটা ৫০ হাজার ৬৯৮। বেসরকারি হিসেবে মৃত ও ঘর ছাড়াদের সংখ্যাটা আরও বেশি। তবে সংখ্যাটা যাই হোক, এই ঘরছাড়া মণিপুরবাসীদের জন্য মণিপুর সরকার ত্রাণশিবিরের আয়োজন করেছে। মোট ৩৪৯টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন এই বপুল সংখ্যক ঘরছাড়া মানুষ। ত্রাণশিবিরে যাতে মহিলা, শিশু ও বয়স্কদের কোনও সমস্যা না হয়, তা দেখার জন্য নোডাল অফিসারদের সরকার নির্দেশ দিয়েছে।
ইতিমধ্যেই মণিপুরে এই হিংসার তদন্তে নেমেছে সিবিআই। তারা ১০ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে যার শীর্ষে আছেন এক ডিআইডি পদমর্যাদার আধিকারিক। রাজ্যপালের নেতৃত্বে মণিপুরে একটি শান্তি কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় সরকারও। রাজ্য পুলিশ, সেনা এবং আধাসেনা একত্রে মণিপুরে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করছে। অমিত শাহ বিবদমান গোষ্ঠীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে শান্তি পুনঃস্থাপিত করার আবেদন জানিয়েছেন, তার পরেও মণিপুরে শান্তি ফিরছে না।
❤ Support Us