Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • জুন ১৯, ২০২৩

ঘাসফুলে কী এবার ব্রাত্য আরাবুল ?

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
ঘাসফুলে কী এবার ব্রাত্য আরাবুল ?

ভাঙড়ে গত ১৫ জুন আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লার খুনের ঘটনায় তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে হাকিবুল ইসলাম সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে ভাঙড়ের কাশীপুর থানায় এফআইআর দায়ের। জামিন অযোগ্য ধারায় এবং অস্ত্র আইনে আরাবুল, তাঁর ছেলে সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে এবার মামলা করল কাশীপুর থানার পুলিশ। আরাবুল ইসলামের দাবি, তিনি বা তাঁর ছেলে এই ঘটনায় জড়িত নয়। আইএসএফ এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
এদিকে এই ঘটনায় আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকী বলেছেন, “গতকালই আইএসএফ কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানানো গয়েছিল। পুলিশের আগেই নিজে থেকে মামলা দায়ে করা উচিত ছিল। এখনও আমার দলের কর্মীরা গুলিবিদ্ধ হয়ে আছে।”

তবে এই ঘটনায় শাসকদল তৃণমূলের তরফে সোমবার বেলা ৩টে পর্যন্ত কোনও নেতা বা মুখপাত্র একটি শব্দ আরাবুলের পক্ষে বা তাঁর ছেলে হাকিবুলের পক্ষে উচ্চারণ করেনি। আরাবুল একাই নিজের ও ছেলের হয়ে বলে চলেছেন।

আরাবুল ইসলামকে ভাঙড়ে রাজনৈতিক ভাবে কি তৃণমূল কোনঠাসা করতে চাইছে? উঠছে এই প্রশ্ন। কাশীপুর থানার তরফে আরাবুল ও তাঁর ছেলে হাকিবুলের বিরুদ্ধে এই মামলা কিন্তু তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও আরাবুল বলছেন, “এটা তাঁর ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।” তবে আরাবুলের দাবিকে তৃণমূল দল সমর্থন করে কোনও বিবৃতি দেয়নি। অন্যদিকে যেদিন আরাবুল ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় ভাঙড়ের কাশীপুর থানা মামলা করল তার আগের দিন সওকাত মোল্লাকে রাজ্য সরকার জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দিল।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখেই সওকত মোল্লাকে ভাঙড়ে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক করে পাঠায় তৃণমূল। সেই সময়ই তৃণমূল একটা বার্তা দিয়েছিল আরাবুলকে। তার পরও দেখা গেল মনোনয়ন নিয়ে ভাঙড়ে রক্ত ঝড়ল, গুলি,বোমা কিছুই বাদ গেল না। সাংবাদিকরা আক্রান্ত হলেন, এই ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী।
মুখ্যমন্ত্রী যখন কাকদ্বীপ থেকে নওশাদ সিদ্দিকীকে নাম না করে তাঁকে নিশানা করেছিলেন সেদিনই নওশাদ নিজেই বলেছেন, ভাঙড় শান্ত হয়ে যাবে সরকার যদি আরাবুল সাহেবকে গ্রেফতার করে। এখন প্রশ্ন নওশাদের কথায় কি শাসকদল এবার আরাবুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে? না হলে গত ১৫ জুন আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লার খুনের ঘটনায় আরাবুল ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে ভাঙড়ের কাশীপুর থানা এই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করল? যদিও মামলা হলেও এই আইএসএফ কর্মী খুনের ঘটনায় কাউকে এখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ।

ভাঙড়ের মাটিতে কান পাতলে কিন্তু অন্য কথা শোনা যাচ্ছে। ভাঙড়ের মানুষ বলছে, সওকত মোল্লাকে ভাঙড়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠিয়েছেন আরাবুলকে রাজনৈতিক ভাবে ঠান্ডা করার জন্য। দেখা যাচ্ছে সওকত মোল্লা, কাইজার সবাই ভাঙড়ের তৃণমূলের দায়িত্বে থাকলেও আরাবুলকে শক্তিহীন করে সব্যসাচী দত্তকে আবারও সওকতের সঙ্গে ভাঙড় সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যে দিন সব্যসাচী দত্তকে ভাঙড়ের দায়িত্বে আনা হল ঠিক তার পরের দিনই আরাবুল ইসলাম, হাকিবুল ইসলাম সহ ২০ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কাশীপুর থানা আইএসএফ কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লাকে খুনের অভিযোগে মহিউদ্দিনের বাবার করা এফআইআর-এর ভিত্তিতে কাশীপুর থানার পুলিশ একাধীক জামিন অযোগ্য ধারায় আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে হাকিবুল সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে খুন সহ অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করল। ভাঙড়ের মানুষ বলছেন, আরাবুলের তৃণমূলে মেয়াদ ফুরিয়ে এসেছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত জেলবন্দী নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের চোখে আরাবুল ইসলাম “তাজা নেতা”। এই ” তাজা নেতা”, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেক নজরে নেই, তাই সওকত মোল্লা ও সব্যসাচী দত্তকে ভাঙড় সামলানোর দায়িত্ব দেওয়ার পর পরই কী আরাবুল ও তাঁর ছেলেকে আরও কোনঠাসা করল দল? কেননা আরাবুল ও তাঁর ছেলের নামে এই মামলা যে তৃণমূলের নির্দেশ ছাড়া পুলিশ করেছে তা নয়। তাই ভাঙড় মহাবিদ্যালয়ে মহিলা অধ্যাপিকার মুখের ওপর জলের জাগ ছুড়ে মারা আরাবুলের মুখের উপর কী তৃণমূল এখন দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে! সেটাই প্রশ্ন।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!