- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- অক্টোবর ১৮, ২০২৩
গাজার হাসপাতালে বিমান হামলা ইসরায়েলের, মৃতের সংখ্যা ৫০০, এই ঘটনায় ইসরায়েল-হামাস পরস্পরকে অভিযুক্ত করছে

গাজার হাসপাতালে বিমান হামলা চালাল ইসরায়েল। এই হামলায় কমপক্ষে ৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরায়েল সফরের ঠিক আগের দিন এই হামলা হয়েছে। মঙ্গলবার গাজার আল-আহলি আরব হাসপাতালে এই হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হাসপাতালটি হামাস দ্বারা পরিচালিত। সেখানে যুদ্ধে আহতদের চিকিৎসা চলছিল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, প্রায় ৫০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন এই হামলায়। হাসপাতালে এই বিমান হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে হামাস গোষ্ঠী। ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা বলেছে হামাস গোষ্ঠীর ভুল রকেট হামলার জন্য এই হাসপাতালে বিস্ফোরণ হয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইসরায়েলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাচ্ছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন। বুধবার তাঁর ইসরায়েলে পৌঁছোবার কথা। যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি। আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এই মুহূর্তে ইসরায়েলের তেল আভিভ শহরে আছেন। সেখান থেকেই এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে গাজার হাসপাতালে বিমান হানার ঘটনায় জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “গাজার আল-আহলি আরব হাসপাতালে বিস্ফোরণ এবং এর ফলে প্রাণহানির ঘটনায় আমি ক্ষুব্ধ এবং গভীরভাবে দুঃখিত।” তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের গলায় ইসরায়েলের সমালোচনা শোনা যায়নি।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে হাসপাতালে মারাত্মক এই বিমান হামলার তীব্র নিন্দা করে লিখেছেন, এটি একটি “ভয়াবহ” আক্রমণ, আমার হৃদয় ভুক্তভোগীদের পরিবারের সাথে রয়েছে। হাসপাতাল এবং চিকিৎসাকর্মীরা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে সুরক্ষিত।
বোমা হামলার ঘটনায় আঞ্চলিক ক্ষোভ বেড়ে যাওয়ায় ইরানের তেহরানে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের দূতাবাসের বাইরে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এক দিনের “জনসাধারণের শোক” দিবস ঘোষণা করেছেন এবং হামলার জন্য ইসরাইল ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন। রাইসি বলেছেন,, “আজ সন্ধ্যায় গাজার হাসপাতালে আহত ফিলিস্তিনিদের ওপর মার্কিন-ইসরায়েলের বোমার আগুনের যে শিখা পড়েছে তা শীঘ্রই ইহুদিবাদীদের গ্রাস করবে।”
লেবাননের ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া আঞ্চলিক যুদ্ধের প্রতি নিন্দা জানাতে বুধবার একটি “ক্রোধ দিবস”-এর ডাক ডেকেছে। হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে সহকর্মী মুসলমান এবং আরবদের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশের জন্য অবিলম্বে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদের আহ্বান জানিয়েছে।
গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে ১০ লাখের বেশি মানুষ পালিয়ে দক্ষিণে চলে গেছে। এই ঘটনার জন্য জাতিসংঘ ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছে যে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি সাধারণ নাগরিকদের ছোট এলাকায় ঠাসাঠাসি করে থাকতে হচ্ছে, তাদের প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষার অত্যাবশ্যক জল, বিদ্যুৎ, খাবার ফুরিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে, যাতে যুদ্ধবিদ্ধস্ত গাজার মানুষদের সাহায্য করা যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হাসপাতালে আক্রমণকে “নজিরবিহীন” বলে অভিহিত করেছে। গাজায় ১১৫টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে হামলা হয়েছে, যার ফলে শহরের বেশিরভাগ হাসপাতাল পরিষেবা দিতে পারছে না।
এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী স্থলআক্রমণের প্রস্তুতি হিসেবে গাজার উপকণ্ঠে সাঁজোয়া যান মজুত করেছে। ইসরায়েল বলেছে যে তারা হামাসের উপর পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ৭ অক্টোবরের হামলার প্রতিশোধ হিসাবে। ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী হামাসের নেতা এবং তাদের আক্রমণের কেন্দ্রগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করে এই হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এদিকে সন্ত্রাসীদের আক্রমণে ১৪০০ ইসরায়েলি মারা গিয়েছে এবং কয়েকশ মানুষ অপহৃত হয়েছে।
❤ Support Us