- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- নভেম্বর ১৫, ২০২৩
ইসরায়েল গাজার আল শিফা প্রবল আক্রমণ চালাচ্ছে, হাসপাতালের ভেতরে আটকে রয়েছেন নবজাতক সহ ২৩০০ জন
ইসরায়েল গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালে আল শিফায় “টার্গেটেড অপারেশন” শুরু করেছে। ইসরায়েল মনে করছে এই হাসপাতালকে ঘাঁটি করে হামাস ইসরায়েলের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। এই হাসপাতালটিতে হাজার হাজার অসুস্থ, বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী আশ্রয় নিয়েছেন। ইসরায়েলের এই হাসপাতালে আক্রমণের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক মহল সমালোচনা করছে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আল শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি হানার জন্য হামাসকেই দায়ী করেছেন। বাইডেনের মোতে, আল শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি আক্রমণের জন্য “সম্পূর্ণভাবে দায়ী হামাস”।
ইসরায়েল সেনারা দাবি করছে যে আল শিফা হাসপাতালের ভিতরে হামাসের বিরুদ্ধে তারা হাসপাতালটিকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু করে অভিযান চালাচ্ছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে যে তারা গাজার প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষকে আবারও জানিয়ে দিয়েছে যে হাসপাতালের সমস্ত সামরিক কার্যক্রম ১২ ঘন্টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত, তা হয়নি। ইসরায়েলি সেনা হাসপাতালে থাকা হামাস কর্মীদের আত্মসমর্পণ করতে বলেছে।
জাতিসংঘের অনুমান যে অন্তত ২৩০০ রোগী, কর্মী এবং বাস্তুচ্যুত সাধারণ নাগরিক এই আল শিফা হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলেন, কয়েকদিনের এই ভয়ঙ্কর লড়াই, বিমান ও বোমা হামলায় তাঁরা হাসপাতালের মধ্যে আটকে পড়েছেন।
আল শিফা হাসপাতালটিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩৬ টি শিশুর চিকিৎসা ও পরিচর্যা চলছিল বলে সেখানকার চিকিৎসা কর্মীরা জানান। তাদের বক্তব্য, যারা বলেছিল যে এই শিশুদের হাসপাতাল সরিয়ে নেওয়া হবে, ইসরায়েলি প্রচেষ্টা ছিল হাসপাতাল থেকে শিশুদের সরিয়ে নেওয়ার, তাই তারা ইনকিউবেটরের ব্যবস্থাও করেছিল, তা সত্ত্বেও তাদের সরানোর কোনও স্পষ্ট ব্যবস্থা করা হয়নি।
এদিকে সপ্তাহান্তে আল শিফা হাসপাতালের জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার পর থেকে ইনকিউবেটর বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে ইতিমধ্যেই তিনটি আগে ভূমিষ্ট হওয়া শিশু মারা গেছে।
সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা এবং হাসপাতালের কর্মীরা বলেছেন, আল শিফা হাসপাতালের পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই “বিপর্যয়কর”। রোগীদের অচেতন না করেই চিকিৎসা চলছে, কারণ অচেতন করার ওষুধ নেই। হাসপাতালের বারান্দায় স্বল্প খাবার বা স্বল্প জল ব্যবহার করে রোগীর পরিবার কোনোক্রমে প্রাণটুকু বাঁচিয়ে রেখেছেন। হাসপাতালের বাতাস মৃতদেহের দুর্গন্ধে ছেয়ে আছে। ভয়াবহ এই পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে হাসপাতালের পরিচালক মহম্মদ আবু সালমিয়া জানিয়েছেন, “হাসপাতালের ভেতর বিভিন্ন জায়গায় মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে, মর্গে আর বিদ্যুৎ নেই।”
এই অবস্থায় ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই বলে চলেছে, হামাস যুদ্ধকর্মীরা গাজার হাসপাতালগুলির ভেতর দিয়ে ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ তৈরি করে সেই জায়গা গুলিকে হামাস বাহিনীকে গোপন আস্তানায় লুকিয়ে রেখেছে এবং এই গোপন আস্তানায় বন্দিদের হামাস সন্ত্রাসীরা লুকিয়ে রেখেছে। তাই ইসরায়েলের এই হাসপাতালে আক্রমণকে সমর্থন করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলার জন্য পুরোপুরি হামাস দায়ী।”
পাল্টা হামাস মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আল শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলি আক্রমণের জন্য “সম্পূর্ণ দায়ী” বলে অভিযুক্ত করেছে।
হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, “আল শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সে হামলার জন্য আমরা দখলদার ইসরায়েল এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করি।”
❤ Support Us