- দে । শ
- অক্টোবর ৫, ২০২৪
কাটোয়ায় বসল বিদ্যাসাগরের মূর্তি, কালনার স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে হেরিটেজ ঘোষণার দাবি

বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টা পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি প্রতিষ্ঠা হল কাটোয়ার ভারতী ভবন উচ্চবিদ্যালয়ে। মূর্তিটি তৈরি করেছেন কৃষ্ণনগরের শিল্পী গৌতম পাল। মূর্তির আবরণ উন্মোচন করলেন বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সম্পাদক তথা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রমেন সর। ছিলেন পুরপ্রধান সমীর কুমার সাহা, প্রধানশিক্ষক আনারুল হক মণ্ডল-সহ বহু বিশিষ্ট। এই উপলক্ষ্যে বিদ্যাসাগরের জীবনচর্যা বিষয়ে আলোকপাত, গান, কবিতা ও নাটক অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে বিদ্যাসাগরের চরণধুলিধন্য কালনার হাঁসপুকুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে সংস্কার করে ‘হেরিটেজ ভবন’ ঘোষণার দাবিতে সরব হলেন সংশ্লিষ্ট এলাকার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষজন। এলাকার বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও বিদ্যাসাগরপ্রেমী প্রণব রায়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, নারীশিক্ষা ও সমাজচেতনা প্রসারের লক্ষ্যে ১৮৫৫ সালের ২৭ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কালনার বৈদ্যপুর, সিংয়েরকোণ, হাঁসপুকুর, বাদলা প্রভৃতি এলাকায় চরকি পাক দিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর। সেই সফরে এসে বিদ্যাসাগরের এক অসহায় আতুরের পাশে দাঁড়ানোর ঘটনা এলাকার মানুষজনের মুখে মুখে ফেরে। শীতের দুপুরে কালনার বাদলা গ্রামে একটি স্কুলের পত্তন করে পায়ে হেঁটেই কালনা যাচ্ছিলেন বিদ্যাসাগর মশাই। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখেন রাস্তার ধারে ছটফট করছেন এক কলেরা আক্রান্ত। অদূরে সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের হাঁসপুকুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজেই উদ্যোগ নিয়ে সেই রোগীকে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন বিদ্যাসাগর। চিকিৎসার দেখভাল করেন। সেই স্মৃতিকে অক্ষত রাখতে হাসপাতালের পুরনো ভবনের সামনে বসানো হয়েছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি। ভবনটি এখন ভগ্নদশাগ্রস্ত ও বিপজ্জনক। যেকোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারে।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেল, ব্রিটিশ আমলে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ছিল মিশনারিদের পরিচালিত। ১৯৭৪ সালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মূল বিভাগগুলি কালনা শহর লাগোয়া এসটিকেকে রাজ্য সড়কের ধারে গড়া কালনা মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রয়ে যায় শুধুমাত্র কলেরা বিভাগটি। পরে সেটিও মহকুমা হাসপাতালের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। এখন শুধুমাত্র মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসটিই এখানে রয়ে গিয়েছে। মূল দ্বিতল ভবনটি অবশ্য একেবারেই পরিত্যক্ত। দয়ার সাগর বিদ্যাসাগরের স্মৃতি ঘেরা এই ভবনটি সংস্কারের মাধ্যমেই সেই মহান মনীষীকে যথার্থ শ্রদ্ধা জানানো হবে বলে মনে করেন এলাকার বাসিন্দারা।
❤ Support Us