- দে । শ
- জানুয়ারি ৭, ২০২৩
হারিয়ে যাওয়া নগরের সন্ধান গুয়াতেমালায়, মায়া সভ্যতার অংশ বলে দাবি গবেষকদের

উত্তর আমেরিকায় মিলল আজ থেকে দু হাজার বছরের পুরোনো নগরের হদিশ। উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে মাটি খনন করে মায়া সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কার প্রত্নতাত্ত্বিকদের।
সিন্ধু ও মিশরীয় সভ্যতার সমান্তরালে আমেরিকাতেও গড়ে ঊঠেছিল মায়া নামক এক উন্নত সভ্যতা। এই সভ্যতার কথা উঠলে প্রথমেই নাম আসে মেক্সিকোর চিচেন ইটজার। যা বিশ্বের সপ্তম আশর্যের একটি। আর এবার এই মেক্সিকোর দক্ষিণেই গুয়াতেমালার রাষ্ট্রের গুয়াতেমালার মিরাডোর-কালাকমুল উপত্যকায় একই সঙ্গে আবিষ্কৃত হল প্রাচীন চারটি বিশাল নগর। যার বিস্তৃতি আনুমানিক ৬৫০ বর্গমাইল। গবেষকরা দাবি করছেন এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত মায়া নিদর্শনগুলির মধ্যে, প্রযুক্তিগত দিক থেকে সবচেয়ে বেশি উন্নত এই শহরগুলিই। । ফলে, বলার অপেক্ষা থাকে না বিগত এক দশকে আবিষ্কৃত মায়া সভ্যতার নিদর্শনগুলির মধ্যে অন্যতম এই আবিষ্কার।
উল্লেখ্য, এই বিশাল এলাকায় প্রাচীন নগরগুলোর সন্ধান পেতে খনন খুব সামান্য পরিমাণ জমিতেই চালানো হয়েছিল। এক্ষেত্রে সাহায্য নেওয়া হয়েছিল লাইট ডিটেকশন অ্যান্ড রেঞ্জিং সার্ভে নামক অত্যাধুনিক প্রযুক্তির। যা লীডার নামে পরিচিত। প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানাচ্ছেন যে, বিমান থেকে এই যন্ত্রের মাধ্যমে স্ক্যান করা হয় সংশ্লিষ্ট উপত্যকাটিকে। আর তাতেই ফুটে ওঠে প্রাচীন এই নগরীর ছবি। একদিকে যেমন তাতে কমেছে প্রত্নসমীক্ষার খরচ, তেমনই অতি অল্প সময়েই এই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন গবেষকরা।
প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষনায় এখানে পাওয়া গেছে ৩০টির বেশি বল কোর্ট। এছাড়াও খোঁজ মিলেছে ১৯৫টি কৃত্রিম জলাধার এবং অসংখ্য খালের। নিকটবর্তী হ্রদের সঙ্গে এই খালের মাধ্যমেই সংযুক্ত থাকত কৃত্রিম জলাধারগুলি। পাশাপাশি প্রতিটি শহরকে যুক্ত করত উন্নত রাস্তা। বন্যার কথা ভেবেই ভূপৃষ্ঠ থেকে বেশ খানিকটা উঁচু করে বানানো হয়েছিল সেগুলি। এখনও পর্যন্ত সন্ধান পাওয়া দীর্ঘতম রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১১০ মাইল। তাছাড়াও অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে ছিল আরও ৪১০টি পথ। গবেষকদের অনুমান, মায়ান ইতিহাসের মধ্য বা শেষলগ্নে গড়ে উঠেছিল এই শহরগুলি। যে-সময় এশিয়াতে অসিরীয় সাম্রাজ্য— তখনই স্বর্ণযুগ চলত এই শহরগুলিতে।
প্রসঙ্গত, লিডার প্রযুক্তির মাধ্যমে গোটা অঞ্চলটির প্রত্নতাত্ত্বিক ম্যাপ তৈরি করেছেন গবেষকরা। কিছুদিনের মধ্যে তার ভিত্তিতেই শুরু হবে আরও গভীর খনন। প্রাচীন স্থাপত্য তো বটেই, এই অঞ্চল থেকে চুনাপাথারের ভাস্কর্য, মূর্তি এবং যুদ্ধাস্ত্রও পাওয়া যাবে বলেই আশাবাদী গবেষকরা। লিডার স্ক্যানিং-এ ধরা পড়েছে আরও একটি ভগ্নস্তূপ, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে স্টোনহেঞ্জের মতোই প্রকাণ্ড কোনো ভাস্কর্য নির্মাণের চেষ্টা করেছিল প্রাচীন মায়ানরা। অবশ্য পুরোটাই গবেষকদের অনুমান বলে মনে করছেন অনেকে। প্রত্নতাত্ত্বিক খননে সেই ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হওয়ার পর তবেই পৌঁছানো যাবে মূল সিদ্ধান্তে। আর সেই অপেক্ষাতেই প্রহর গুনছেন ইতিহাসপ্রেমীরা
❤ Support Us