- এই মুহূর্তে দে । শ
- মার্চ ৩০, ২০২৩
জোড়া মিছিলে বাম-কংগ্রেস আরো কাছাকাছি। বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে অবরুদ্ধ মহানগর। ধর্মতলায় প্রকট যানজট । মঞ্চে সুজন-সেলিম। কৌস্তভের হুমকি, দাবি পূরণ না হলে, লাগাতার আন্দোলন
প্রাপ্য মহার্ঘ ভাতার দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের একাংশ মিছিলে সামিল হয়েছেন। দু’দলে ভাগ হয়ে তাঁরা শহিদ মিনারের উদ্দেশে অভিযান করেন। তাঁদের পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে ধর্মতলা অভিমুখী রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয়। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডাকা প্রতিবাদী সমাবেশে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যের বাম ও কংগ্রেস নেতারা। দুই দলের যোগদানে মিছিল আরো ব্যাপকতা লাভ করে।
বৃহস্পতিবার সকালে হাওড়া এবং শিয়ালদহ থেকে দু’টি মিছিল শহিদ মিনারের উদ্দেশে অগ্রসর হয়। বেলা যত গড়াতে থাকে বাড়তে থাকে মিছিলের আয়তন । দুপুর ২টো নাগাদ দু’টি মিছিলই ধর্মতলায় পৌঁছলে রুদ্ধ হয়ে পড়ে মধ্য কলকাতার যান চলাচল। নিত্যযাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন। দীর্ঘক্ষণ তাঁদের রাস্তায় অপেক্ষা করতে হয়।
সরকারি কর্মচারীদের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের সভায় যোগ দেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং মহম্মদ সেলিম। এছাড়া উপস্থিত হয়েছিলেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। সভামঞ্চে সেলিম বলেন, কর্মীদের আন্দোলন কেবল ডিএ’র জন্য নয়, রাজ্যে সাড়ে ৬ লক্ষ সরকারি শূন্যপদে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে তাঁরা একজোট হয়েছেন। মঞ্চে কংগ্রেস নেতা কৌস্তুভ বাগচী উপস্থিত থেকে এই রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও রকম সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ করা যাবে না। ক্রমাগত অসহযোগ আন্দোলন করতে হবে। যত দিন না দাবি আদায় হয়, তত দিন সংগ্রাম চলবে ।
কেন্দ্রের বঞ্চনা, দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীর্তিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ ও সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য ডিএ-র দাবি সব মিলিয়ে সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে রাজ্যের শাসক দল। এতদিন জনদরদী প্রকল্পকে হাতিয়ার করে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে নবান্ন। কিন্তু সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন ও তার আগে সাগরদিঘিতে হার তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। তাই বিরোধীদের অভিযোগের প্রত্যুত্তরে পাল্টা আক্রমণের পথে নেমেছে ঘাস ফুল শিবির। পূর্বতন সরকারের আমলে নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মকে ঢাল করে নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা কেলেঙ্কারিকে লঘু প্রমাণ করবার চেষ্টা করছেন তাঁরা। মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীদের বেআইনি পথে চাকরি পাওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আন্দোলনকারীদের স্পষ্ট দাবি, কেন্দ্রীয় হারে তাঁদের ডিএ দিতে হবে। না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা অবস্থান মঞ্চ ছেড়ে উঠবেন না।
দীর্ঘদিন সিপিএম ও কংগ্রেস এরাজ্যে একে অপরের বিরোধী রূপে অবস্থান করেছে। দু’দলের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সরগরম হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। সেদিনের সে রক্তক্ষয়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতা আজ অস্তমিত। সংসদীয় রাজনীতিতে নিজের জায়গা হারিয়ে মতাদর্শগতভাবে তীব্র বিরোধী দুই দল আজ হাত মিলিয়েছে। রাজ্যের নিয়োগ কেলঙ্কারি থেকে শুরু করে কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা-একাধিক ইস্যুতে চওড়া হচ্ছে জোটের পথ চলা। ডিএ আদায়ের আন্দোলনেও দেখা গেল যৌথতার সুর। পিছিয়ে নেই বিজেপি। দলের তাবড় তাবড় নেতারা আন্দোলনাকারীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। প্রত্যেক রাজনৈতিক দল নিজের শক্তি পরীক্ষায় ব্যস্ত। সরকারি কর্মচারী ও যোগ্য চাকরি প্রার্থীদের দাবির পাশে দাঁড়িয়ে ভোট বৈতরণী পেরোতে মরিয়া বাম থেকে ডান সবাই। প্রতিক্রিয়ায় শাসকের অস্ত্র এখন পূর্বতন শাসকের আমলের নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়ম। শেষ হাসি হাসবেন কারা ? ক্রমশ বাড়ছে সংশয়।
❤ Support Us