ছত্তিশগড়ে বেটিং অ্যাপ নিয়ে সাক্ষীর বয়ান বদল, ইডিকে কাজে লাগিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করেছে বিজেপি। স্বস্তিতে বাঘেল

ছত্তিশগড়ের বিধানসভা নির্বাচনের কিছুদিন আগে মহাদেব বেটিং অ্যাপ কাণ্ড নিয়ে সেই রাজ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। আবার ভোট মিটতেই সেই মহাদেব বেটিং অ্যাপ নিয়ে আর এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল। এই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক দিন আগে প্রকাশ্যে এসেছিল মহাদেব বেটিং অ্যাপ নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। খোদ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট অভিযোগ করেছিল, মহাদেব বেটিং অ্যাপ কাণ্ডে জড়িত ছত্তিশগড়ের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেল। ভোট মিটতেই সেই অভিযোগের সারবত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। যে সাক্ষীর বয়ানের উপর ভিত্তি করে ইডি ভুপেশ বাঘেলের বিরুদ্ধে মহাদেব বেটিং অ্যাপকাণ্ডে অভিযোগ করেছিল, সেই সাক্ষীই ভিন্ন কথা বলছেন। এই ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে রাজ্যের শাসক দল কংগ্রেসকে কালিমালিপ্ত করার জন্য বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ভুপেশ বাঘেলের বিরুদ্ধে কাজে লাগিয়েছিল।

এবার আসল ঘটনায় আসা যাক। মহাদেব বেটিং অ্যাপ কাণ্ডে কিছুদিন আগেই অসীম দাস নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি ছিল, এই অসীম দাসই বাঘেল-সহ কংগ্রেসের অন্যান্য নেতাদের কাছে মোটা টাকা পৌঁছে দিতেন। অসীম দাসের লিখিতও বয়ানও ছিল ইডির কাছে। ভোট মেটার পর সেই অসীম দাসই সুর বদল করে বলছেন, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছিল, তিনি কাউকে কোনও টাকা পৌঁছে দেননি।

জেল থেকেই ইডির ডিরেক্টরকে চিঠি লিখেছেন অসীম দাস। তাতে তিনি লিখেছেন, ভুপেশ বাঘেলকে টাকা পৌঁছে দিয়েছেন, এমন কোনও অভিযোগ তিনি করেননি। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। ইংরেজি ভাষায় লেখা একটি জবানবন্দিতে জোর করে তাঁকে দিয়ে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। অসীম দাসের দাবি, ইংরাজি ভাষাটা ভালো না জানায়, ওই জবানবন্দিতে কী লেখা হয়েছিল, সেটা তিনি প্রথমে বুঝতে পারেননি। অসীম দাসের আরও দাবি, মহাদেব বেটিং অ্যাপের শীর্ষ কর্তা শুভম সোনি তাঁর বন্ধু। তিনিই তাঁকে বলেছিল ছত্তিশগড়ে ব্যবসা করার জন্য টাকা পাঠাবে। তার পর তিনি ফোন পেয়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নিজের গাড়িটি রেখে দেন। সেখানেই অন্য কেউ এসে টাকা দিয়ে যায়। সেই টাকা নিয়ে হোটেলে যেতেই তিনি দেখেন ইডি কর্তারা তাঁর ঘরে অপেক্ষা করছে। তখনই তিনি বুঝতে পারেন, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে।

সাক্ষী অসীম দাসের এই বয়ান সামনে আসতেই কংগ্রেস বলছে, অসীম দাসের এই বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি প্রকাশ্যে আসায় এটা স্পষ্ট যে ভোটের আগে ভুপেশ বাঘেলকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল ইডি। সবটাই করা হয়েছিল কংগ্রেসকে ফাঁসানোর জন্য যাতে ভোটে এর প্রভাব পড়ে। ভোট মেটার সেটা স্পষ্ট হয়ে গেল। আর এই ঘটনার পিছনে বিজেপির স্পষ্ট হাত রয়েছে বলেও কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত ছত্তিশগড়ে নির্বাচনী প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী এই মহাদেব বেটিং অ্যাপ-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাঁর ভাষণে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেশ বাঘেলকে অভিযুক্ত করে বলেছিলেন, মহাদেব বেটিং অ্যাপ-এর মাধ্যমে টাকা তুলে তা দিয়ে ভোট করছেন ছত্তিশগড়ের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী। এই টাকা রাজ্যের গরিব মানুষের কষ্টের টাকা। তারাই বেটিং অ্যাপ-এ টাকা খাটিয়েছিলেন, যে টাকা কংগ্রেস হজম করে নিয়েছে।