- দে । শ
- ডিসেম্বর ৮, ২০২৩
মহুয়া ইস্যুতে আবার লোকসভায় ফিরলেন সোমনাথ । ওম বিড়লার মুখে কেন প্রাক্তন স্পিকারের প্রসঙ্গ উত্থাপন
কিছু মানুষ মৃত্যুর পরেও প্রাসঙ্গিক থেকে যান তাঁদের কাজের জন্য। এমনই এক ব্যক্তিত্ব হলেন প্রয়াত, বহিস্কৃত সিপিএম নেতা, সংসদ ও প্রাক্তন লোকসভার স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার লোকসভায় টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন বিতর্কে এথিক্স কমিটির সুপারিশের উপর আলোচনার সময় সেই সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নাম বহুবার আলোচিত হল। প্রয়াত এবং বহিস্কৃত সিপিএম নেতা ও প্রাক্তন লোকসভার স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তকে অস্ত্র করেই শুক্রবার মহুয়া মৈত্রকে সংসদে বলতে না দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেন নরেন্দ্র মোদি সরকারের স্পিকার, সংসদীয় মন্ত্রী, শাসক শিবিরের সাংসদরা। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তকে সামনে রেখেই মহুয়া মৈত্রকে সংসদে বলতে না দেওয়ার যুক্তি সমর্থনের পক্ষে সওয়াল করল সংসদের গেরুয়া পরিষদীয় দল।
২০০৫ সালের টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে তৎকালীন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্ত ছিল, অভিযুক্ত এমপিরা একবার এথিক্স কমিটির সামনে বলেছেন, কমিটি তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য বলে জানিয়েছে। দ্বিতীয়বার তাঁদের সামনে সংসদে সওয়াল করার সুযোগ এবং প্রয়োজন নেই। ২০০৫ টাকার বিনিময়ে প্রশ্নকাণ্ডে অভিযুক্তদের সংসদে বলতে দেওয়ার দাবি উঠেছিল। কিন্তু তৎকালীন লোকসভার স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় তা খারিজ করে দিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে সেবার ১১ জন অভিযুক্ত এমপিদের মধ্যে বিজেপির ৬, কংগ্রেসের একজন সাংসদ ছিলেন।
শুক্রবার লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী, তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা বারবার স্পিকারের কাছে দাবি করেন, যে মহুয়া মৈত্রকে নিজের হয়ে বলতে না দেওয়া সংসদীয় রীতিবহির্ভূত, যাঁর বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজকর্মের অভিযোগ উঠেছে, তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলতে দেওয়া হোক, নয়তো ন্যয়বিচার হবে না। মহুয়া মৈত্রকে বলতে দিলে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না বলেও মন্তব্য করেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
বিরোধীদের এই দাবির পর সংসদীয় বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী, স্পিকার ওম বিড়লারা প্রয়াত স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের ২০০৫ সালের টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগে রায় উল্লেখ করেন। স্পিকার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী যুক্তি দেন, সোমনাথবাবু স্পিকার থাকাকালীন টাকার বিনিময়ে প্রশ্নকাণ্ডে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও এমপির বিরুদ্ধে সংসদের রীতিনিয়ম বহির্ভূত কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠলে তিনি এথিক্স কমিটিতে বলতে পারেন, সেখানে আত্মপক্ষ সমর্থনে সওয়াল করতে পারেন, কিন্তু সংসদে বলতে পারেন না। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের এই নির্দেশকেই হাতিয়ার করে শুক্রবার সংসদে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলতে দেওয়া হল না মহুয়া মৈত্রকে। শুক্রবার দীর্ঘ বছর পরে একদা সিপিএম সাংসদ, পরবর্তীকালে লোকসভার স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের যুক্তির প্রতিধ্বনি হল শাসক বিজেপির স্পিকারের কণ্ঠে। সুদীপ বলেন, আমার দলের মুখপাত্র হবেন মহুয়া মৈত্র স্বয়ং কেননা অভিযোগটা তাঁর বিরুদ্ধেই। তাঁর বিরুদ্ধে অবিশ্বাস্য অভিযোগ তোলা হয়েছে। সত্যি না মিথ্যে, সেটা তিনিই বলুন। কল্যাণ সওয়াল করেন, অভিযুক্তের বক্তব্য শোনা হলেই ন্যয়বিচার হতে পারে। পালটা বিজেপি শিবির থেকে তৃণমূলের এই দাবি উড়িয়ে বলা হয়, এথিক্স কমিটিতে অভিযুক্ত সাংসদকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি সেখানে গিয়ে তার বদলে অসংসদীয়, অভব্য আচরণ করে বেরিয়ে আসেন। সংসদে তাঁকে বলতে দেওয়া হবে কেন?
❤ Support Us