- এই মুহূর্তে দে । শ
- ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩
ডেরেকের শাস্তি প্রত্যাহারের দাবিতে ধনখড়কে চিঠি দিলেন খাড়গে, বাংলায় কি কংগ্রেস-তৃণমূল ঐক্যের দিকে এগোচ্ছে?
সংসদে স্মোক বোম্বকাণ্ডের ফলে কংগ্রেস-তৃণমূল কাছাকাছি আসছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের শাস্তি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে চিঠি দিলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়কে। আগামীকাল মঙ্গলবার, রাজধানীতে ফের বসছে বিজেপি বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার বৈঠক। তার আগে এই ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের আগে সোমবার সংসদের অধিবেশনের শুরুতেই তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের শাস্তি প্রত্যাহার চেয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে চিঠি দিলেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। বর্তমানে এআইসিসির সভাপতিও খাড়গে। ধনখড়কে পাঠানো চিঠিতে সংসদে হানার ঘটনার কথা উল্লেখ করে ডেরেকের তোলা দাবিকে যুক্তিযুক্ত বলে দাবি করেছেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। শুধু ডেরেককে সমর্থনই নয়, চলতি অধিবেশনে বেশ কয়েক বার পরস্পরের পাশে দাঁড়িয়েই নরেন্দ্র মোদির সরকারকে আক্রমণ করেছে কংগ্রেস-তৃণমূল। ঘটনাচক্রে, রবিবার রাতেই কলকাতা থেকে দিল্লি গিয়েছেন তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সোমবার সকালের এই ঘটনাকে জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেস-তৃণমূলের ফের কাছাকাছি আসার ঘটনাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে জাতীয় রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একটা বড় অংশ। তাহলে কি বাংলায় কংগ্রেস-তৃণমূল ঐক্যবদ্ধ ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ার দিকে এগোচ্ছে?
গত সপ্তাহে বুধবার নতুন সংসদ ভবনে হানা দেয় কয়েক জন যুবক-যুবতী। সেই ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়ে সংসদের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করেন বিরোধী দলের সাংসদেরা। বুধবারের পর বৃহস্পতিবার সংসদে সরব হয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক-সহ অন্য দলের সাংসদেরা। তিনি ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখালে তাঁকে সাসপেন্ড করেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। ডেরেকর সঙ্গেই সাসপেন্ড হয়েছিলেন আরও ১৪ জন সাংসদ। সাসপেন্ড হওয়ার পর শুক্রবার ডেরেক সংসদ চত্বরে ধর্না দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন তখন তাঁকে সমর্থন জানলে এসেছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল। এই ইস্যুতে যে কংগ্রেস নেতৃত্ব তৃণমূলের পাশেই থাকবে, সেই বিষয়ে ইঙ্গিত মিলেছিল ভেনুগোপালের উপস্থিতিতে। কারণ, এআইসিসির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভেনুগোপাল বরাবরই রাহুল গান্ধির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তাই শুক্রবারে ভেনুগোপালের উপস্থিতি এবং সোমবার এআইসিসির সভাপতির সরাসরি ডেরেকের পক্ষ নিয়ে ধনখড়কে চিঠি দেওয়ার ঘটনায় তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্কে নতুন করে জোটের সমীকরণের চিত্রই ধরা পড়েছে বলে মনে করছে জাতীয় রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। দিল্লির এই সম্পর্কের রসায়ন মেনে কি বাংলায় তৃণমূল-কংগ্রেস আসন রফা হতে চলেছে? এই প্রশ্নও উঠছে।
শুধু তা-ই নয়, মহুয়া মৈত্রর সাংসদ পদ খারিজের সময়ও কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী সরাসরি কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আবার সাংসদপদ খারিজ হয়ে যাওয়ার পর রাহুল-সনিয়া সহ গোটা কংগ্রেস সংসদীয় দল মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। গত দু’সপ্তাহ যাবৎ সংসদে কংগ্রেস এবং তৃণমূল সংসদীয় দলের মধ্যে ঐক্যের চিত্রই ধরা পড়েছে। তাই মঙ্গলবার বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার বৈঠকের আগে এই কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের কাছাকাছি আসাকে ইঙ্গিতবহ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, মঙ্গলবার জোটের বৈঠকে যোগদান করবেন রাহুল গান্ধি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই দুই শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব একসঙ্গে বৈঠকে বসার আগের মঞ্চ সংসদ অধিবেশন তৈরি করে দিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এর পর কি তাহলে বাংলায় কংগ্রেস-তৃণমূল এক সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে? সেই প্রশ্নও সামনে আসছে। কারণ মঙ্গলবারের ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে আসন রফা চূড়ান্ত হতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
❤ Support Us