- প্রচ্ছদ রচনা
- জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
গারো পাহাড়ে মমতা-অভিষেকের সভায় মুখরিত বিস্ময়। ভোটে থমকে যাবে পাহাড়ি খেলা । চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হিমন্তীয় বিশ্ব
মোদিকে মমতার কটাক্ষ, টেলিপ্রিণ্টার দেখে ভাষণ দিই না। ভূমিপুত্ররাই রাজ্য চালাবেন, বললেন অভিষেক

বুধবার সকালে উত্তরবঙ্গের হাসিমারা থেকে মেঘালয়ের তুরায় উড়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শীতকে উপেক্ষা করে তাঁর মেদিপাথরের সভায় উপচে পড়ল ভিড়। গারো পাহাড়ের বিভিন্ন অঞ্চলের নবীন আর প্রবীনরা দেখলেন তাঁর তেজ , তাঁর শারীরিক ভাষা। সভায় দৃপ্ত ভঙ্গিতে ভাষণ দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ভাষণে উদ্দীপ্ত স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিষেকের মাথায় গারোদের ট্র্যাডিশনাল টুপি। গায়ে কালো কোট। কোটের ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে সাদা জামা। অভিষেক আর মমতা দুজনেই ভোট প্রচার শুরু করে দিলেন। মেদিপাথর মিশ্র বসতি এলাকা। নীচের দিকে আসাম সংলগ্ন ফুলবাড়ি ও অন্যান্য অঞ্চল। তিন বিধান সভায় বাঙালি কৃষকের সংখ্যাধিক্য। এরা কংগ্রেসের ভোটার ছিলেন। সম্প্রতি তাঁদের মন বদল ঘটেছে। তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছেন। কংগ্রেসের ভোটারও কম নন। অভিষেক বললেন, কংগ্রেসকে ভোট দেবেন না। কংগ্রেস স্থানীয় কোনও সমস্যার সুরাহা করেনি। অভিষেকের ভাষণে মমতা পুলকিত বোধ করেছেন। মুখে একরাশ হাসি। বললেন, আমি স্থানীয় ভাষা জানি না। জয়ন্তি ও খাসি ভাষাও জানি না। যে কোনও ভাষা শেখার আগ্রহ প্রবল। ইউটিউব দেখে মেঘালয়ের ভাষা শিখে নেব। ভাষণের শুরুতেই অভিষেকের সুচিন্তিত, লক্ষ্যচ্যুত চমক। এখন থেকে মেঘালয়ের ভূমিপুত্ররাই সরকার চালাবেন। তৃণমূল এটা নিশ্চিত করবে। দিল্লি আর গুয়াহাটির দাদাগিরি চলবে না। রাজ্য শাসনের দায়িত্ব মেঘালয়বাসীদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে।
মেঘালয়ের ৬০ আসনের মধ্যে ৫২ টিতে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। বাকি ৮ আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করবে শীঘ্রই। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমার নেতৃত্বে লড়বে মমতার ঘাসফুল। মমতা-অভিষেকের সফর ১ দিনের। প্রকারান্তরে, বক্তৃতায় কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। বললেন, কেউ কেউ টেলিপ্রিণ্টার থেকে বক্তৃতা করেন। আমি হৃদয় দিয়ে কথা বলি। সঙ্গে সঙ্গে প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন তুললেন- পাহাড়ি রাজ্যে কেন জমি বিতর্ক চলছে ? কেন গ্রামের পর গ্রামে বিদ্যুৎ নেই ? যুবকরা বেকার কেন ? এরকম একের পর এক প্রশ্ন তুলে নিজেই জবাব দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী – বিজেপির দুটি মুখ। ভোটের আগে একরকম বলে জেতার পর তারা অন্যরকম কাজ করে। ২৭ ফেব্রুয়ারি মেঘালয়ে ভোট । ফল ঘোষিত হবে ২ মার্চ। ভোটের প্রস্তুতিতে এখন ঝড়ের গতি। বারবার তৃণমূল নেতাদের ছুটতে হবে। খাসি ও জয়ন্তিয়া অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য স্বতন্ত্র। গারো পাহাড়ে আলাদা। গারো পাহাড়ে ভোটারের দিক বদল ঘটছে। এখানে তৃণমূলের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। গোয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে না। বাজিমাৎ করে দিতে পারে। খাসি ও জয়ন্তি এলাকায় সংশয়ের হাওয়া বইছে। পাশেই বিজেপি শাসিত আসাম। কব্জি ডুবিয়ে ভোট বাক্স (ইভিএম ) তছনছ করে দিতে পারেন কৌশল প্রিয় শক্তিমানরা। ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান, তৃণমূল মেঘালয়ে দ্বিতীয় বড়ো শক্তি হয়ে উঠবে। বিধানসভায় তৈরি হতে পারে ঝুলন্ত পরিস্থিতি। দ্বিতীয়ত , বাংলার বাইরে প্রথম বড়ো রকমের ক্যারিশমা দেখাবে ঘাস ফুল। চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবে বিশ্বশর্মার উত্তর-পূর্বের ভোট কৌশলকে।
❤ Support Us