- এই মুহূর্তে দে । শ
- মার্চ ২৭, ২০২৩
সন্তানের আশায় কুসংস্কারের বলি সাত বছরের বালিকা ! ঘটনায় গ্রেফতার এক

সাত বছরের শিশুর নির্মম পরিণতি ! তিলজলায় রবিবার সকাল থেকে নিরুদ্দেশ থাকার পর রাতের বেলায় তাঁর বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয় । ঘটনায় তীব্র উত্তেজিত এলাকার বাসিন্দারা। প্রাথমিক তদন্তে তদন্তকারীদের ধারণা, যৌন নির্যাতন করে খুন করা হয়েছে। মাথায় স্ক্রু ড্রাইভার জাতীয় কিছু দিয়ে ফুটো করার চিহ্ন মিলেছে। কানেও রয়েছে ক্ষতচিহ্ন । গ্রেফতার করা হয়েছে অলোক কুমার নামে এক ব্যক্তিকে। বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, খুনের কথা সে স্বীকার করেছে ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী শ্রীধর রায় রোডের চারতলার ফ্ল্যাটে থাকত। দেহ উদ্ধারের পরে রাতে তাঁর বাবা জানান, রবিবার সকাল সাতটা নাগাদ তিনি বাড়ির আবর্জনা মেয়েকে নীচে ফেলে আসতে বলেছিলেন। সে নীচে নেমে রাস্তায় ময়লা ফেলে ভিতরেও ঢুকে যায়। কিন্তু তার পর থেকে কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। বহুতলে ঢোকার মুখে রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। তার ফুটেজে বাচ্চাটিকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেখা গেল, কিন্তু তারপর তার আর কোনো হদিশ নেই। তাকে দেখতে না পেয়ে এলাকার লোকজনও খুঁজতে শুরু করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সকাল ন’টায় যখন তাঁরা থানায় গিয়ে বাচ্চাটির নিরুদ্দেশ হওয়ার বিষয়টি জানান, তখন পুলিশ আধিকারিকরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। এর পরে বেলা ১২টা নাগাদ নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। দুপুর পর্যন্ত বাচ্চাটির কোনো খবর না পেয়ে পেয়ে তার বাবা আবার থানায় যান। তখন বিকেল থেকে তল্লাশি শুরু হয়। সে সময় ওই বহুতলের দোতলার একটি ফ্ল্যাটের দীর্ঘ দিনের বন্ধ গেট খোলা অবস্থায় দেখা যায়। ফ্ল্যাটে ঢুকে তল্লাশি শুরু করেন তদন্তকারী পুলিশরা। রাত ৯টার সময় ফ্ল্যাটে রাখা একটি সিলিন্ডারের পাশ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় দেহটি উদ্ধার হয়।
বস্তা থেকে দেহ বেরোতেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই ফ্ল্যাটের বাসিন্দা, বছর বত্রিশের অলোক কুমারকে সেখানেই আটক করা হয়। অভিযুক্তকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন উত্তেজিত জনতা। পুলিশ অভিযুক্তকে ক্ষিপ্ত জনতার হাত থেকে বাঁচিয়ে থানায় নিয়ে আসে। খুনের কারণ জানতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে অলোকের খুনের কথা জানতে পারে। থানা সূত্রে খবর, এক তান্ত্রিকের কথা জেরায় তিনি জানিয়েছেন। তন্ত্র সাধকের পরামর্শ ছিল, নবরাত্রির আগে নরবলি দিতে পারলে তার স্ত্রী সন্তান প্রসবে সক্ষম হবেন । অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অপহরণ করে খুন এবং যৌন নির্যাতনের মামলা রুজু করা হয়েছে।
তিলজলার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তিলজলা থানায় বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, রবিবার সকাল থেকে শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে থানায় অভিযোগ জানালেও পুলিশ পাত্তা দেয়নি। তারা আরও আগে পদক্ষেপ করলে হয়তো শিশুটিকে বাঁচানো যেত, দাবি প্রতিবেশীদের। রবিবার রাতে তিলজলা থানায় ঢিল ছোঁড়ে উত্তেজিত জনতা। পুলিশ এলাকা খালি করার জন্য লাঠি নিয়ে বেরোলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এলাকা থেকে কয়েক জন মহিলাকে আটক করা হয়েছে।
যদিও পুলিশের দাবি, রবিবার বেলা ১২টা নাগাদ তাদের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে। তার পরেই শিশুর খোঁজ শুরু করে পুলিশ। আবাসনের ৩২টি ফ্ল্যাটে শিশুর খোঁজে চিরুনি তল্লাশি চালায় তারা। অলোকের ফ্ল্যাটটি বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। তারপর তাঁরা বাচ্চার মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
❤ Support Us