- এই মুহূর্তে দে । শ
- মে ৯, ২০২৪
ভোট প্রচারে স্বপ্নময় কৌশল, চিঠি পাঠিয়ে মহিলাদের আমন্ত্রণ

ভোটের প্রচারে মহিলা ও প্রবীণদের টার্গেট করেছেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তাঁর উদ্যোগে পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে রীতিমত চিঠি পাঠিয়ে মহিলা ও প্রবীণদের সভায় আসার আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। সেইসব সান্ধ্য জমায়েতে মহিলাদের উপস্থিতি নজরকাড়া। কালনা ১নং ব্লকের ধাত্রীগ্রামে মহিলিদের সমাবেশে যোগ দিতে এসে সবিতা মজুমদার, আরতি দেবনাথরা বলছিলেন, ‘দিদি (মমতা ব্যানার্জি) আমাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বরাদ্দ বাড়িয়েছেন। পঞ্চায়েতের অর্ধেক আসন মেয়েদের জন্য করে দিয়েছেন। মেয়েদের নিজেদের পায়ে দাঁড় করাতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে অর্থসাহায্য করছেন। দিদির হাত শক্ত করতে শুধু নিজেরাই ঘাসফুলে ছাপ দেব না, এলাকার সবাই যাতে ঘাসফুলে ভোট দেন সেই প্রচারও করছি।’ ‘নারীশক্তি পাশে থাকা’র কথা কবুল করলেন সংশ্লিষ্ট বর্ধমান পূর্ব লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী ডাঃ শর্মিলা সরকারও। বললেন, ‘ছোট-বড় যে ধরনের সভাই হোক, মহিলারা আগেভাগে হাজির হয়ে সভাস্থল ভরিয়ে দিচ্ছেন। এটা আমার কাছে বাড়তি পাওনা।’ আর সভায় মহিলাদের ঠাসা জমায়েতের দিকে আঙুল উঁচিয়ে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বললেন, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে বিরোধীরা কত কুৎসা, কত সমালোচনাই না করেছিলেন। কেউ বলেছিলেন, বরাদ্দ বৃদ্ধির ঘোষণা ভাঁওতা। কেউ বলেছিলেন, এই প্রকল্প দু’মাসেই লাটে উঠবে। বিরোধীদের কথা যদি সত্যি হলে কাতারে কাতারে মহিলারা এই গরমেও তৃণমূলকে জেতাতে সভায় আসতেন?’ স্বপনবাবু রাজ্য সরকারের প্রতিটি জনমুখী প্রকল্প ধরে ধরে সেইসব প্রকল্পগুলি থেকে মহিলারা কীভাবে উপকৃত হচ্ছেন, তার খতিয়ান ব্যাখ্যা করেন। গরমের বিষয়টি মাথায় রেখে সভাশেষে মহিলাদের জন্য আখের গুড়ের সঙ্গে কাঁচা আম বেঁটে শরবতের বন্দোবস্ত করেন স্বপনবাবু। এমন দেশি পানীয় পেয়ে বেজায় খুশি মহিলারা।
স্বপনবাবুর চিঠি পেয়ে অভিভূত এলাকার প্রবীণ মানুষজনও। ‘মমতা ব্যানার্জির পাশে থাকতে’ প্রবীণরাও কেউ লাঠিতে ভর দিয়ে, কেউ নাতি-নাতনির হাত ধরে চিঠিতে উল্লেখ থাকা সভাস্থলে হাজির হচ্ছেন। চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আপনার শ্রম, অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ সমাজের সম্পদ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সাধ্যমত আপনার ও আপনাদের পরিবারের সুরক্ষায় যত্নবান। তাই সভায় হাজির হয়ে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিন।’ সভায় হাজির প্রবীণ ও মহিলাদের সমস্যা শুনছেন স্বপনবাবু। ভোটের ময়দানে তাঁদের সহযোগিতা চাইছেন।
সভাগুলিতে হাজির প্রবীণদের উত্তরীয় পরিয়ে, গোলাপ দিয়ে বরণও করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্বপনবাবুর ব্যাখ্যা, ‘এখনও গ্রামেগঞ্জে পরিবারের সদস্যরা মহিলা ও বয়স্কদের কথা শোনেন। তাই আমরা তাঁদের গুরুত্ব দিচ্ছি।’ স্বপনবাবুর সংযোজন, ‘এলাকার বহু মানুষ রাজ্য সরকারের বার্ধক্য ও বিধবা ভাতা পান। আবার মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে শুরু করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছেন। মমতা ব্যানার্জির হাত শক্ত করতে বরিষ্ঠ বাসিন্দা ও মহিলারা এক পায়ে খাড়া জেনে তাঁদের সহযোগিতা চাইছি।’ পূর্বস্থলী ১নং ব্লক তৃণমূল সভাপতি রাজকুমার পাণ্ডে মনে করিয়ে দেন, ‘বয়স্ক ও মহিলারা মাঠে নামার সুফল আমরা পঞ্চায়েত ভোটে পেয়েছি। লোকসভা ভোটেও পাব।’ বয়স্ক ও মহিলাদের নিয়ে ইতিমধ্যেই পূর্বস্থলী ১নং ব্লকের শ্রীরামপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ৯টি সভা করেছেন স্বপনবাবু। এবার কালনা ১নং ব্লকে সভা শুরু করলেন। সভা শেষে দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দিচ্ছেন, প্রবীণ ও মহিলাদের ভোটের প্রচারে কাজে লাগাতে। এর পাশাপাশি বুথে বুথে ঐক্যবদ্ধ প্রচারের কথা বলছেন স্বপনবাবু। ‘রাজ্যের উন্নয়ন আর কেন্দ্রের বঞ্চনার তথ্য-পরিসংখ্যান’ নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারে ঝাঁপানোর পরামর্শও দিচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভার প্রতিটি বুথে জেতার লক্ষ্যে কাকভোর থেকে রাত পর্যন্ত তীব্র গরমেও চরকি পাক দিচ্ছেন সত্তরোর্ধ্ব স্বপন দেবনাথ।
❤ Support Us