Advertisement
  • দে । শ
  • জুন ২০, ২০২৩

রুশ ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট, মার্কিন সফর সূচনায় বার্তা মোদির

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
রুশ ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট, মার্কিন সফর সূচনায় বার্তা মোদির

রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত কখনই রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়নি। নিরপেক্ষ অবস্থানই বজায় রেখেছে। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনা হলেও নিজের অবস্থানকে অটুট রেখেছে সে। তিন দিনের মার্কিন সফরের সূচনার আগেও তাঁর ব্যতিক্রম ঘটল না। নরেন্দ্র মোদি বললেন, যুক্তরাষ্ট্র কখনই যুদ্ধে ভারতের ভূমিকাকে নিন্দার চোখে দেখেনি। দেশের জনমানসেও যে এনিয়ে ব্যাপকভাবে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে এমন নয়। তাই ভারতের অবস্থান ইন্দো-মার্কিন সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন তিনি।

ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ভারতের অবস্থান এ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। সমগ্র বিশ্বই জানে, যে শান্তি হল তাদের কাছে একমাত্র অগ্রাধিকার। কারণ তাহলেই ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্প ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নিয়ে কথা বার্তা চালানো সম্ভব। রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতে গেলে দেশের অগ্রগতি স্তব্ধ হতে পারে। তাই রুশ ইউক্রেন সংঘর্ষের সময় থেকেই ক্রেমলিনের সঙ্গে দূরত্ব না বাড়িয়ে সে দেশ থেকে তেল আমদানি বাড়িয়েছে ভারত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও সুসমম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী তারা। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, জো বাইডেন প্রশাসন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে আগ্রহী। মূলত চিনের উত্থান রুখতেই এক্ষেত্রে ভারতকে আমেরিকার প্রয়োজন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

চিনের সম্পর্কও মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন ,সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা রক্ষা প্রয়োজন। তার জন্য চাই দুপক্ষের আন্তরিক উদ্যোগ। ভারত অন্যের সার্বভৌমত্ত্ব ও ভৌমিক অখণ্ডতাকে সম্মান করে,  শ্রদ্ধা করে। সে সঙ্গে নিজের ঘর বাঁচাতেও তাঁরা দায়বদ্ধ।
জাতিপুঞ্জের উদ্দেশে তাঁদের সংগঠনকে বহু মেরুকেন্দ্রিক করে তোলার আবেদন জানিয়েছেন। সংস্থার প্রতিটি শাখাকে যাতে  সমস্ত দেশের প্রতিনিধি  রাখতে হবে। বিশেষত  নিরাপত্তা পরিষদে ভারত  সহ  অন্যান্য দেশ যাতে জায়গা পেতে পারে  তার  ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক সংগঠনটিকে  করতে হবে।

ভারতের বিদেশনীতিতে যুদ্ধবিরোধী মনোভাব ব্রিটিশ  শাসন পরবর্তী সময় থেকে আলাদা জায়গা পেয়েছে।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ঠাণ্ডা লড়াইয়ের  শিবির ভাগাভাগির উত্তপ্ত রাজনীতি থেকে নিজেদের  দূরত্ব ঘোষণা করে জোটনিরপেক্ষতার বার্তা দেয় নেহেরুর ভারত। সদ্য ঔপনিবেশিক শাসনের শৃঙ্খল মুক্ত একাধিক দেশ  স্বাগত জানিয়েছিল ভারতের অবস্থানকে। তবে জওহরলাল নেহেরুর  জোট নিরপেক্ষতা  সাম্রাজ্যবাদী শক্তির যুদ্ধ প্রচেষ্টার সমর্থক ছিল না। কোরিয়া যুদ্ধ, হাঙ্গেরিতে সোভিয়েত হস্তক্ষেপ, সুয়েজ সংকট- একাধিক আন্তর্জাতিক সমস্যায়  নিজেদের স্বতন্ত্র  ও গরিমায় উজ্জ্বল অবস্থান বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছিল ভারত।  ইন্দিরা গান্ধি বা তাঁর পুত্র রাজীব গান্ধীও পূর্বসূরীর  পদাঙ্ক মোটামুটিভাবে অনুসরণ করেছিলেন।  বর্তমান ভারত সরকার  ইউক্রেন যুদ্ধে নিরপেক্ষ থেকে  শান্তির বার্তা দিতে  চাইছে।  কিন্তু নেহেরু-ইন্দিরার-রাজীবের  পররাষ্ট্রভাবনার ছোঁয়া আজকের  ভারতে যেন ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছে। মার্কিন সফরের প্রাক্কালে  প্রধানমন্ত্রী মোদির  বক্তব্যে মিলল তারই আভাস।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!