- প্রচ্ছদ রচনা মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
- ডিসেম্বর ১১, ২০২২
পর্তুগালকে হারিয়ে আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে সেমিফাইনালে পৌঁছে ইতিহাস মরক্কোর

ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজতেই চোখের জল মুছতে মুছতে ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা দিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। চোখে–মুখে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা। বড়ই করুণ দৃশ্য। অন্যদিকের ছবিটা একেবারেই ভিন্ন। দেশের পতাকা নিয়ে নাচানাচি করছেন হাকিম জিয়েচ, ইয়াসিন বুনুরা। কেনই বা করবেন না? পর্তুগালকে হারিয়ে প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন রেছে যে। গোটা আফ্রিকান বিশ্ব তাকিয়ে ছিল মরক্কোর দিকে। হতাশ করেননি ইউসুফ নেসিরিরা। পর্তুগালকে ১–০ ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছল মরক্কো। আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে সেমিফাইনালে পৌঁছে ইতিহাস ইয়াসিন বুনুদের। ম্যাচের ৪২ মিনিটে মরক্কোর একমাত্র গোলটি করেন ইউসুফ নেসিরি।
ম্যাচের শুরু থেকেই মরক্কোর ওপর চাপ তৈরি করার চেষ্টা করছিল পর্তুগাল। ৪ মিনিটেই সুযোগ এসে গিয়েছিল পর্তুগালের সামনে। ব্রুনো ফার্নান্ডেজের ফ্রিকিকে হেড করেছিলেন জোয়াও ফেলিক্স। তাঁর হেড সরাসরি চলে যায় মরক্কো গোলকিপার ইয়াসিন বুনুর হাতে। শুরুর চাপ সামলে ধীরে ধীরে ম্যাচের রাশ তুলে নিতে থাকে মরক্কো। আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ায়। ৭ মিনিটে হাকিম জিয়েচের কর্ণারে হেড করেছিলেন ইউসুফ নাসিরি। বল অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১৯ মিনিটে জিয়েচের সামনে একটা ভাল সুযোগ এসে গিয়েছিল। তাঁর শট পোস্টের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। এরপর আক্রমণ প্রতি আক্রমণে খেলাটা দারুণ জমে ওঠে।
২৬ মিনিটে আবার সুযোগ এসে গিয়েছিল মরক্কোর সামনে। জিয়েচের ইনসুইং ফ্রিকিক হেড করেছিলেন নেসিরি। তাঁর হেড বারের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। অবশেষে ৪২ মিনিটে এগিয়ে যায় মরক্কো। বাঁদিক থেকে উঠে এসে সেন্টার করেছিলেন আত্তিয়াত আল্লাহ। কোস্তা ও রুবেন দিয়াজের মাথার ওপর দিয়ে লাফিয়ে উঠে হেডে গোল করে যান ইউসুফ নেসেরি। ৪৫ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ এসে গিয়েছিল পর্তুগালের সামনে। ব্রুনো ফার্নান্ডেজের শট বারে লেগে বেরিয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধে সমতা ফেরানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে পর্তুগাল। গোলের জন্য ৫১ মিনিটে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে মাঠে নিয়ে আসেন পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস। রোনাল্ডো আসার পর আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ে পর্তুগালের। ৬৪ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ এসে গিয়েছিল। মরক্কোর ডিফেন্সের ভুলে বল পেয়ে গিয়েছিলেন ব্রুনো ফার্নান্ডেজের সামনে। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তাঁর শট বারের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধে ব্রুনো ফার্নান্ডেজ, জোয়াও ফেলিক্স, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোরা একের পর এক আক্রমণ তুলে নিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তিনকাঠি ভেদ করতে পারছিলেন না। ৮২ মিনিটে পর্তুগালকে নিশ্চিত গোলের হাত থেকে বঞ্চিত করেন ইয়াসিন বুনু। রোনাল্ডোর সাজিয়ে দেওয়া বলে বাঁপায়ে জোরালো শট নিয়েছিলেন জোয়াও ফেলিক্স। দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে নিশ্চিত গোল বাঁচান বুনু। ম্যাচের ইনজুরি সময়ের প্রথম মিনিটে রোনাল্ডোর শট আটকে আবার দলের পতন রোধ করেন মরক্কো গোলকিপার। ইয়াসিন বুনুর হাত ধরেই ইতিহাস গড়ল মরক্কো। নেসিরি গোল করলেও মরক্কোর জয়ের নায়ক গোলকিপার ইয়াসিন বুনু। তাঁর বিশ্বস্ত হাতেই আটকে গেল রোনাল্ডোদের স্বপ্ন।
❤ Support Us