Advertisement
  • দে । শ
  • এপ্রিল ২৯, ২০২৩

দিল্লি থেকে শূন্য হাতে ঘর ওয়াপস।মুকুল এখন কোন দলে, প্ৰশ্নে মুখর রাজ্য

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
দিল্লি থেকে শূন্য হাতে ঘর ওয়াপস।মুকুল এখন কোন দলে, প্ৰশ্নে মুখর রাজ্য

১২ দিনের দিল্লি সফর শেষ করে মুকুল রায় শেষ পর্যন্ত শনিবার খালি হাতেই আবার ফিরে এলেন কলকাতায়। কলকাতায় পা রেখেই মুকুল রায়ের দাবি, “আমি নিজের ইচ্ছেতেই দিল্লি গিয়েছি। আমায় কেউ জোর করে দিল্লি নিয়ে যায়নি।দরকারে আবার দিল্লি যাব। এখন কাজ শেষ হয়ে গেছে তাই ফিরে এসেছি। আমি বিজেপিতেই আছি। আমার সবার সঙ্গে কথা হয়েছে।”

যদিও বিজেপি সূত্রে জানা গেছে, মুকুল রায় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সাক্ষাৎকার চেয়েও পাননি।

প্রসঙ্গত গত ১৭ এপ্রিল মুকুল রায় তাঁর সল্টলেকের বাসভবন থেকে আচমকাই উধাও হয়ে যান। এর পর তাঁর পুত্র শুভ্রাংশু রায় স্থায়ীয় থানায় এফআইআর করেন। বলেন তিনি ফোন করে তাঁর বাবাকে পাচ্ছেন না।  রাজ্য রাজনীতিতে মুকুল রায়ের অন্তর্ধান নিয়ে চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরই মধ্যেই ১৭ এপ্রিল রাতেই মুকুল রায়ের দিল্লি থাকার ভিডিও ভাইরাল হয়। জানা যায় মুকুল রায় দিল্লি আছেন। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে তিনি ওই দিনই কথা বলেন। বলেন তিনি ছেলের সঙ্গে কথা বলেছেন। দিল্লি এসেছেন অমিত শাহ,জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করতে। এতোদিন তিনি অসুস্থ ছিলেন। এখন সুস্থ,তাই আবার রাজনীতি করবেন। তিনি দাবি করেন, “আমি দিল্লির বিধায়ক,সাংসদ, দিল্লি আসব না?”

এরপর বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ মুকুল রায়ের কাছে দিল্লিতে যায়। মুকুল রায় তখন পুলিশকে জানান,তিনি নিজেই দিল্লি এসেছেন। তিনি সেদিন বলেছিলেন, তিনি দিল্লি এসেছেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডার সঙ্গে তিনি কথা বলবেন বলে। তবে মুকুল রায়কে শেষ পর্যন্ত আবার নিজের বাড়িতেই ফিরতে হল খালি হাতেই।

এদিকে মুকুল রায়ের রাজনৈতিক স্থিতি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে এখন অনেক প্রশ্ন উঠছে। রাজ্যবাসী জানতে চাইছে মুকুল রায় এখন কোন দলে? বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলছেন, “মুকুল রায় রাজ্য রাজনীতির অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আমরা চাই তিনি ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। তবে তিনি তো একটা বিধানসভার বিধায়ক। তাই সেই বিধানসভার মানুষদের কথা ভেবে তাঁর কিছু করা উচিত।”

সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম মুকুল রায়ের দিল্লি যাওয়া ও ফিরে আসাকে শনিবার নাটক বলে মন্তব্য করেছেন।

অন্যদিকে তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেন মুকুল রায় প্রসঙ্গে বলেন, “মুকুল রায় একজন অসুস্থ ব্যক্তি। তিনি যখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তখন সেই ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা ছিল মুকুল রায় স্মৃতিভ্রংশজনিত সমস্যায় ভুগছেন। তার সঙ্গে তাঁর উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে শর্করা জনিত সমস্যা আছে। তাই মুকুল রায় নিজেকে সুস্থ বলে দাবি করলে কী হবে? তাঁর ছেলেও তো বলছেন, তাঁর বাবা অসুস্থ। কাজেই মুকুল রায়ের  কোনও কথার জবাব দেব না।” তবে মুকুল রায় সম্পর্কে তৃণমূলের কী অবস্থান সেই প্রসঙ্গে শান্তনু সেন বলেন, “এই বিষয়টা দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সঠিক সময় জানাবে।”

এদিকে মুকুল রায় এখনও কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক।২০২১-এর বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে ৩৫ হাজার ৮৯ ভোটে তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে হারান মুকুল রায়।

তবে বঙ্গবাসী দেখেছে, মুকুল রায়কে ঘটা করে বিজেপি বিধায়ক হওয়ার পরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলে ফিরিয়ে নিয়েছেন।

তাই মুকুল রায়ের দিল্লি গিয়ে বিজেপির হয়ে গলা ছাড়ার সময় কলকাতায় তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রকে গলায় মুকুল এবং দলের বিরুদ্ধে গলা ছাড়তে শোনা গিয়েছিল। মদন মিত্র তখন বলেছিলেন, কেন, কী কারণে মুকুল রায়কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলে ফিরিয়ে নিয়েছিলেন? মুকুলকে দলে ফেরানো কি খুবই জরুরি ছিল? দল আমায় মিডিয়ায় কথা বলতে নিষেধ করেছে।আমার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার হৃদয় বন্ধ করতে পারেনি। এরপর তো যে কেউ মাথা খারাপ হয়েছে বলে হাগিস পরে দিল্লি চলে যাবে। তারপর আবার তাঁরা ফিরে এলে তৃণমূলে তাঁদের ফেরত নেওয়া হবে তো? মদন মিত্র সেদিন ক্ষোভের সঙ্গে বলেছিলেন, আমি এসব বলার জন্য যদি দল আমায় শেকজ করে আমি জবাব দিতে প্রস্তুত। তবে তার পর মদন মিত্রর বিরুদ্ধে দল কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানা নেই। তবে মুকুল রায় ১২ দিনের দিল্লি সফর শেষ করে কলকাতায় ফিরেছেন। এখন প্রশ্ন একটাই মুকুল কার?


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!