- দে । শ
- সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪
পরিযায়ী শ্রমিকের রহস্যমৃত্যু
কাজের জায়গা থেকে ট্রেনে চেপে বাড়ি ফেরার পথে মৃত্যু হল কালনার পরিযায়ী শ্রমিকের। রেললাইনের ধারে মিলল শুভ দত্ত (৩২) নামে কালনা শহরের ওই যুবকের রক্তাক্ত দেহ। সোমবার রাতে এই খবর পায় শুভর পরিবার। শুভর বাবা সুবীর দত্তর দাবি, ‘ছবিতে ছেলের দেহ দেখেছি। আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট। আমরা নিশ্চিত শুভকে খুন করা হয়েছে।’ কালনা জিআরপিতে অভিযোগ দায়ের করেছেন সুবীরবাবু। তবে জিআরপির প্রাথমিক অনুমান, ‘মানসিক ভারসাম্যহীন শুভর ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে।’ জানা গেল, মুম্বইয়ের আন্ধেরীতে ১৬ বছর বয়স থেকেই সোনার দোকানে কাজ করতেন শুভ। শনিবার রাত ৯ টা নাগাদ হাওড়া-মুম্বই মেল ট্রেনে চেপে তিনি কালনার বাড়িতে ফিরছিলেন। রবিবার দুপুরে ওই যুবক ট্রেন থেকেই তার পরিবারকে ভিডিও কল করে জানায় যে, তাকে কয়েকজন প্রাণে মারার চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, তাকে ট্রেনের ভিতর ছোটাছুটি করতেও দেখা গিয়েছে। হোয়াটস অ্যাপ ভয়েস কলে এক বন্ধুকে সে জানায়, ‘ওরা মনে হয়, আমাকে কিন্তু ট্রেন থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। ঠিক আছে। আমি বলে দিলাম। আমাকে আর খুঁজে পাবি না। আমার পিছনে লোক ঘুরছে। মা কালীর দিব্যি মাকে বললাম। মা বিশ্বাস করছে না। তোকে বারবার বলছি। ব্লেড, রড, সব নিয়ে যাচ্ছে।’ এরপরেই তাকে আর ফোনে না পাওয়া গেলেও পরে ওই ফোন থেকেই সোমবার তাদের পরিবারকে মোবাইলে ছবি পাঠিয়ে জানানো হয় যে, তাদের ছেলে মারা গিয়েছে। মহারাষ্ট্রের নাগপুরের একটি রেললাইনের কিছুটা দূরে তার দেহ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। দেহের পাশ থেকে মোবাইলটাও উদ্ধার হয়েছে। শুভর বাবা সুবীর দত্তের দাবি, ‘ছেলেকে খুন করা হয়েছে। কারণ ছবিতে দেখা গিয়েছে, ছেলের মাথার পিছনে আঘাত করা হয়েছে। শরীরে ব্লেডের দাগ রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। শনিবার রাতে ছেলে ট্রেনে ওঠে। সেদিন ছেলের সঙ্গে ভিডিও কলে আমার সঙ্গে আর ওর মায়ের সঙ্গে কথা হয়। রবিবার সকালেও কথা হয়। হঠাৎ করে ট্রেনের ভিতর থেকেই ভিডিও কলে ছেলে জানায় যে ওকে কেউ মারতে চাইছে। এক বন্ধুকে এই নিয়ে ভয়েস মেসেজও করে যে তাকে কেউ মারতে চাইছে। ওইদিন দুপুরের পর থেকে ছেলের ফোন সুইচ অফ হয়ে যায়।’
কালনা জিআরপির তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে মহারাষ্ট্র পুলিশের সঙ্গে। এদিকে ছেলের দেহ আনতে সুবীরবাবু কয়েকজনকে নিয়ে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছেন। কালনা জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নাগপুরের থেকে কিছুটা দূরে ওই যুবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। সেখানকার ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক ও জিআরপির সঙ্গে কথা বলে কালনার জিআরপি জানতে পেরেছে শুভ মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। চলন্ত ট্রেনের ভিতরেই তিনি ছোটাছুটি করছিলেন। অসংলগ্ন আচরণ করছিলেন। ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা জিআরপির।
❤ Support Us