Advertisement
  • দে । শ
  • সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩

মমতাকে লাগাতার কুকথা কাম্য নয়, অধীরকে পরামর্শ শরদের

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
মমতাকে লাগাতার কুকথা কাম্য নয়, অধীরকে পরামর্শ শরদের

বিজেপি-র বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে ঐক্যবদ্ধ কংগ্রেস-তৃণমূল। তবে  রাজ্য়ে তৃণমূলকে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছে কংগ্রেস। সেই নিয়ে এবার “ইন্ডিয়া” জোটের মধ্যেই সংঘাত শুরু হয়েছে। ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি বা এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার এই বিষয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুকথা বলার অভ্যাস বন্ধ করতে পরামর্শ দিয়েছেন অধীরকে। তবে এই প্রসঙ্গে অধীরের সাফ জবাব, “আমি ইন্ডিয়া জোটের নেতা নয়। আমি বাংলার কংগ্রেস নেতা। আমাদের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক শাসক ও শাসিতের। তাই আমি যা বলার বলবো। সবার কথা বলার অধিকার আছে। সেই হিসেবে কে কি বলছেন সেদিকে আমি নজর দিচ্ছি না।” তবে অধীরকে শরদের এই তিরস্কার-পরামর্শের প আইসিসি-র কোনও নেতার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

কংগ্রেস-তৃণমূল জাতীয় স্তরে পরস্পরের সঙ্গে হাত মেলালেও, বাংলায় প্রতিপক্ষ হিসেবেই এখনও পর্যন্ত তৃণমূল এবং কংগ্রেসের লড়াই চলছে। নিয়োগ, গরু, কয়লা পাচার নিয়ে লাগাতার তৃণমূলকে আক্রমণ করে চলেছে কংগ্রেস। ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়েও প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলছে তারা। ডেঙ্গি সংক্রমণে লাগাতার বৃদ্ধি সত্ত্বেও মমতা স্পেন সফরে গেলেন কী করে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ অধীর চৌধুরী।

শরদ পাওয়ার মঙ্গলবার এই  প্রসঙ্গেই অধীরকে কার্যতই তিরস্কার করেন শরদ। তিনি বলেন, “অধীররঞ্জন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে তিক্ত সম্পর্ক দেখেছি আমরা। মমতাকে কুকথা বলার বদভ্যাস রয়েছে ওঁর, যা মোটেই ভাল নয়। এই আচরণ কাম্য নয় ওঁর থেকে। তবে তাতে বিরোধীদের জোটে কোনও প্রভাব পড়বে না।”

একসময় রাজ্যে পরস্পরের হাত ধরাধরি করে চললেও, বিগত কয়েক বছরে পরস্পরের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে তৃণমূল এবং কংগ্রেস। ২০২১ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় ফিরলেও, শূন্যে নেমে যায় কংগ্রেস। পরে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হলেও, তৃণমূলে যোগ দেন বায়রন বিশ্বাস। তার জেরে দুই দলের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে ওঠে।

সেই নিয়ে লাগাতার কড়া ভাষায় তৃণমূল এবং মমতাকে আক্রমণ করে চলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সম্প্রতি মমতার স্পেন-সফর নিয়েও কটাক্ষ করেছেন তিনি। রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণ যখন উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে, সেই সময় মমতা বিদেশ পাড়ি দিলেন কোন যুক্তিতে, প্রশ্ন তোলেন অধীর। রাজ্য সরকার ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যর্থ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতিকে ‘মমতা মেড ডেঙ্গি, গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড ডেঙ্গি’ বলে উল্লেখ করেন।  সেই আবহেই অধীরকে সংযত হতে বললেন শরদ।

যদিও জাতীয় স্তরে তৃণমূলের হাত ধরা নিয়ে রাজ্য কংগ্রেসেই দ্বিমত দেখা দিয়েছে। রাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল যখন বিদ্ধ, একযোগে বিরোধীরা মিলে আক্রমণ শানিয়ে চলেছে, সেই আবহে দিল্লিতে জোড়াফুল শিবিরের সঙ্গে হাত মেলানো নিয়ে অসন্তুষ্ট অনেকেই। দলের অন্দরে সেই ক্ষোভও সামাল দিতে হচ্ছে প্রদেশ কংগ্রেসকে। দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের সমন্বয় কমিটির বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেতে পারেননি ইডি তাকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তলব করেছিল বলে। অভিষেককে ইডির তলবের ঘটনাকে কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল ইন্ডিয়া জোটের বিরুদ্ধে বিজেপির আক্রমণ বলে সমালোচনা করেছেন। অভিষেকের বসার চেয়ার ফাঁকা রেখে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরও তীব্র করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এদিকে তৃণমূল কিন্তু বাংলায় কংগ্রেসকে ভাঙার সবরকম সচেতা এখনও চালাচ্ছে।
শরদের অধীরকে তিরস্কার করা প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের বক্তব্য, “শরদ পাওয়ার আগে তাঁর ভাইপোর হাত থেকে এনসিপিকে বাঁচান, তারপর অন্য দলকে জ্ঞান দেবেন।”

প্রসঙ্গত এর আগে লালু প্রসাদ যাদব একই কায়দায় অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে মমতাকে সমালোচনা করার প্রসঙ্গ টেনে সমালোচনা করেছেন। তবে লালু বা শরদের মুখে বাংলায় তৃণমূল যে ভাবে কংগ্রেসকে ভাঙছে সেই বিষয়ে কোনও কথা নেই। তাই প্রশ্ন উঠছে, এর পিছনে কি অন্য কোনও রাজনৈতিক খেলা আছে?


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!