Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • জুলাই ২২, ২০২৪

এনসিআরটির ষষ্ঠ শ্রেণীর সমাজ বিজ্ঞানের পাঠক্রমে কাটছাট। ইতিহাস, ভুগোল, সমাজবিদ্যার পাঠ এবার একটি বইয়েই

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
এনসিআরটির ষষ্ঠ শ্রেণীর সমাজ বিজ্ঞানের পাঠক্রমে কাটছাট। ইতিহাস, ভুগোল, সমাজবিদ্যার পাঠ এবার একটি বইয়েই

পাঠ্যক্রম সংশোধনের ক্ষেত্রে একটি নতুন পদক্ষেপ নিল এনসিআরটি। ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস, ভূগোল, সমাজবিদ্যার পাঠক্রমে কাটছাঁট করে তাকে সমাজবিজ্ঞানের একটি মাত্র বইয়ের আওতায় আনার কাজ শুরু করল সিলেবাস নিয়ামক সংস্থাটি। একটিমাত্র বইয়ের মধ্যে এখনও ওই সমস্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে তৃতীয় ও ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা নতুন পাঠ্যপুস্তক পেতে চলেছে। ষষ্ঠ শ্রেণীর ক্ষেত্রে নতুন প্রস্তাবিত পাঠ্যপুস্তকের শিরোনাম হবে- ‘ইন্ডিয়া অ্যান্ড বিয়ন্ড।’
প্রস্তাবিত পাঠ্যপুস্তকের পঞ্চম অধ্যায় ভারতকে নিয়ে নির্ধারিত। শিরোনাম ‘ইন্ডিয়া: দ্যট ইজ ভারত’। সেখানে মহাভারত, বিষ্ণু পুরাণ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ রয়েছে । মহাভারতের ব্যাখ্যায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ভারতের বেশ কিছু এলাকার নাম, যথা- কাশ্মীরা (বর্তমান কাশ্মীর), কুরুক্ষেত্র (হরিয়ানা), বঙ্গ ( অবিভক্ত বঙ্গ), প্রাগজ্যোতিষ (বর্তমানের অসম ), কচ্ছ (গুজরাটের কচ), কেরালা প্রভৃতি অঞ্চলের বিস্মৃত প্রায় অধ্যায়।

নতুন পাঠ্যপুস্তকটি পাঁচটি থিম নিয়ে গঠিত। প্রথম থিম গঠন করা হয়েছে ভূগোলকে নিয়ে। এর অন্তর্গত ৩৪ পৃষ্ঠার ২ টি অধ্যায়ে রয়েছে । মহাসাগর ও মহাদেশ, ভূমিরূপ ও জীবন । অধ্যায়টি অথর্ব বেদের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে শুরু হয়েছে। পৃথিবীর দ্রাঘিমাংশ এবং অক্ষাংশ পরিমাপের মত ধারণা বর্তমান সংস্করণ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ভূগোলের জন্য নিবেদিত মোট পৃষ্ঠাগুলি ৪৮থেকে ৩৪ পৃষ্ঠায় নামিয়ে আনা হয়েছে। ।দ্বিতীয় থিম ’‘ট্যাপেস্ট্রি অফ দ্য পাস্ট’ ও তৃতীয় থিম ‘আওয়ার কালচারাল হেরিটেজ অ্যান্ড নলেজ ট্র্যাডিশনস’ ইতিহাসের পাঁচটি অধ্যায় সহ ৪৬পৃষ্ঠা নিয়ে গঠিত। অধ্যায় ৪ শিরোনাম ‘টাইমলাইন ও সোর্স অফ হিস্ট্রি’, পঞ্চম অধ্যায় ‘ভারত’ শব্দটির উৎপত্তি সম্পর্কে গঠন করা হয়েছে।

ষষ্ঠ অধ্যায় শুরু হয়েছে সত্তরের দশকে ভারতের পুরাতত্ম বিভাগের প্রধান প্রয়াত বি বি লালের একটি উক্তি দিয়ে। ওই সময়ে তিনি অযোধ্যার বিতর্কিত বাবরি মসজিদ সাইটে খনন কাজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন এই স্থানে কোনও মন্দিরের ভিত্তি পাওয়া যায়নি। তবে দশ বছর আগে তিনি মত বদলে বলেন, ওই স্থানে মন্দির স্তম্ভের ভিত্তির চিহ্ন আছে । তিনি পরবর্তীকালে রামায়ণ ও মহাভারত অধ্যয়ন করেন ও বলেন , হরপ্পা সভ্যতাকে সিন্ধু সরস্বতী সভ্যতা বলে উল্লেখ করেন। ওই অধ্যায়ে সিন্ধু সভ্যতার অন্তর্গত ধোলাভিরার উল্লেখ আছে, যা বর্তমানে গুজরাটে রাজ্যের অন্তর্গত। সিন্ধু সভ্যতার সিংহভাগ ভাগীদার বর্তমানে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান। সেখানে ভারতে রয়েছে গুজরাটের ধোলাভিরা, লোথাল (পৃথিবীর প্রাচীনতম পোতাশ্রয়) ইত্যাদি।

সপ্তম অধ্যায়ের শিরোনাম, ‘ইন্ডিয়া’স কালচারাল রুটস’ অর্থাৎ ভারতের সাংস্কৃতিক ভিত্তি। মূলত বেদ উপনিষদের বিভিন্ন তত্ব ও কাহিনি।
এছাড়া মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাসকে সরিয়ে সেখানে ভারতের বেশ কিছুহারিয়ে যাওয়া সভ্যতার ইতিবৃত্তকে স্থান দেওয়া হয়েছে । নতুন সংযুক্ত হয়েছে চাণক্য ও তাঁর লিখিত অর্থশাস্ত্র।
সেই সঙ্গে গুপ্ত, পল্লব ও চালুক্যদের রাজবংশ এবং কালিদাসের ভূমিকা লিখিত হয়েছে। মৌর্য সাম্রাজ্যের শাসক সম্রাট অশোকের উল্লেখ একমাত্র চতুর্থ অধ্যায়ে একটিবার মাত্র উল্লেখ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে সিবিএসসি বোর্ডের ষষ্ঠ শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে ব্যাপক রদবদল আনা হয়েছে। এনসিআরটির ডিরেক্টর দীনেশ সাক্লানি বলেছেন, আমরা মহৎ দর্শনগুলিকে এই পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই। তবে নতুন পাঠ্য পুস্তক নতুন হলেও অতীতের পাঠ্যক্রমে অধ্যয়ন করা শিক্ষকদের নিজেদের কতটুকু ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে , তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!