- এই মুহূর্তে বি। দে । শ
- আগস্ট ৭, ২০২৪
প্যারিস থেকে ঢাকার পথে মুহম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ বৃহস্পতিবার । হিংসা সকলের শত্রু, শান্তি ফিরিয়ে নতুন দেশ গড়ার আহ্বান নোবেল জয়ীর
ছাত্র-তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ বলেলেন খালেদ জিয়া
সংরক্ষণের বিরোধীতা করে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে, ক্রমশ তা ভয়ঙ্কর নৈরাজ্যের চেহারা নিয়েছে। ৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পরই, দেশ ছাড়েন । পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের । সরকারের পদত্যাগকে ঘিরে আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কর্মবিরতিতে যায় পুলিশ প্রশাসন । বাংলাদেশ জুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক লুঠতরাজ, অগ্নি সংযোগ। ইতিমধ্যেই টালমাটাল প্রশাসনিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সেদেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে ৫৯৬জন বন্দি জেল ভেঙ্গে পালিয়েছেন। যদিও মঙ্গল এবং বুধবার বিকেল থেকে কেউ কেউ আবার নিজেরাই ফিরে এসেছেন কারাগারে। লুন্ঠিত সম্পদও ফিরিয়ে দিচ্ছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাতে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। আগামীকাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস । সূত্রের খবর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হতে পারে ১৫ সদস্যের ।
ইতিমধ্যেই প্যারিস থেকে বাংলাদেশে ফেরার জন্য রওনা হয়েছেন শুরু করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ । বাংলাদেশের টালমাটাল পরিস্থিতি নিয়ে সেদেশের সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, আগামীকাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নিলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ইউনূস সেন্টারের তরফে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় পৌঁছবেন। অলিম্পিক কমিটির আমন্ত্রণে বিশেষ অতিথি হিসেবে প্যারিসে গিয়েছিলেন ড. ইউনূস । পরে সেখানে তাঁর চিকিৎসাও হয় ।
প্যারিস থেকে বাংলাদেশের উদ্দ্যেশে রওনা দেওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই হবে নতুন সরকারের প্রথম কাজ। তিনি বলেন, সেটা করা না গেলে, বাংলাদেশ স্থিতিশীল না হলে প্রতিবেশীদের পক্ষে তা হবে বিপজ্জনক। বাংলাদেশ অস্থিতিশীল হলে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চল, পশ্চিমবঙ্গ, মিয়ানমার সর্বত্র প্রভাব পড়বে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ ১৭ কোটি মানুষের দেশ। জনসংখ্যার অধিকাংশ যুব সম্প্রদায়। জীবনে তারা কেউ ভোট দিতে পারেনি। সেই অধিকার ফিরিয়ে দেওয়াই হবে প্রধান কাজ। ওখান থেকেই আমাদের শুরু করতে হবে। তাদের বলতে হবে, গণতন্ত্র ফিরে আসবে। তোমরা সবাই হবে তার অংশীদার।হিংসা আমাদের সকলের শত্রু। দয়া করে আর শত্রু সৃষ্টি করবেন না । সবাই শান্ত হোন । চারপাশে শান্তি বজায় রাখুন । নতুন দেশ গড়তে এগিয়ে আসুন । কোনও প্রকার ভুলের জন্য এই জয় যেন হাতছাড়া না হয়ে যায় আমাদের ।’ তিনি আরো বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে । দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে সকলের যোগদান কাম্য । নয়া বাংলাদেশ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি। অকারণ হিংসা ঘটিয়ে ভবিষ্যতের সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ হাতছাড়া করা চলবে না ।
বুধবার ঢাকায় বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি একটি প্রকাশ্য সবাবেশ করে । সেই সমাবেশে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এক ভিডিয়ো বার্তায় বলেছেন, ‘দীর্ঘ আন্দোলন, সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদী-অবৈধ সরকার থেকে মুক্তি পেয়েছি।গণতন্ত্রের ধ্বংসের স্তূপের মধ্যে থেকে আমাদের নির্মাণ করতে হবে এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। ছাত্র-তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তাঁরা যে স্বপ্ন নিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে মেধা-যোগ্যতা-জ্ঞানভিত্তিক ও গণতান্ত্রিক গড়ে তুলতে হবে। সকল ধর্মের-গোত্রের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শান্তি-প্রগতি ও সাম্যের ভিত্তিতে আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণে আসুন আমরা তরুণদের হাত শক্তিশালী করি। ধ্বংস নয়, প্রতিশোধ নয়, প্রতিহিংসা নয়, ভালবাসা, শান্তি ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলি।’
❤ Support Us