- স | হ | জ | পা | ঠ
- জুলাই ১৯, ২০২১
অলস মস্তিষ্কই নতুন এষণার ধারক, গবেষণার নতুন তত্ত্ব
বিশ্রাম প্রিয় অলস মস্তিষ্কই পারে এনে দিতে সাফল্য। বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণা সামনে এনেছে এমনি তত্ত্ব। আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্বও নাকি নিদ্রাচ্ছন্ন অলস মস্তিষ্কের ফসল। তিনি ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, গ্রামের মেঠো পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। পাশে একটি গো-খামার। ইলেকট্রিক ফেন্সিংয়ের মাধ্যমে আটকে রাখা ছিল কিছু গরু। একটা সময় হঠাৎ করে গরুগুলি প্রায় আলোর সমতুল্য গতিতে ফেন্সের মধ্যে দিয়ে লাফিয়ে চলে এল বাইরে। আশ্চর্যজনকভাবে ইলেকট্রিক শক এড়িয়েই ফেন্স পেরিয়ে গেল তারা। তবে মাঠের অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিপালক দেখলেন, প্রতি মুহূর্তে একটি একটি গরু ফেন্স পেরিয়ে চলে যাচ্ছে। অথচ ওই ব্যক্তি এবং প্রতিপালক— দু’জনেই একই ঘটনা দেখছেন। এই স্বপ্ন দেখার পরই তিনি তৈরি করেছিলেন আপেক্ষিকতা তত্ত্ব। হ্যাঁ, অবাস্তব লাগলেও এমনটাই সত্যি । কিন্তু কীভাবে এই অসাধ্য সাধন করলেন আইনস্টাইন? এবার সেই তথ্যই সামনে আনলেন বিজ্ঞানীরা।
স্নায়ু-বিজ্ঞানীদের অভিমত ভোর বেলায় আমাদের স্নায়ুকোষগুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষত মস্তিষ্কের বাঁ দিকের অংশ। অবচেতন মনের মধ্যে তারা কাজ করা শুরু করে দেয় সেই সময় থেকেই। আর তখনই আমরা স্বপ্ন দেখি। বিজ্ঞানীদের ভাষায় ‘নো টাইম’। কী এই ‘নো টাইম’? ধরা যাক এমন একটা সময়, যখন আমাদের মস্তিষ্ক রয়েছে সম্পূর্ণ বিশ্রামে। অর্থাৎ, বিশেষ কোনো কাজে ব্যস্ত নয় মস্তিষ্ক। চারিদিকে কোনো গোলযোগ নেই, কোলাহলও নেই। শান্ত-স্নিগ্ধ সেই পরিবেশটাই হল ‘নো টাইম’। আর এই ‘নো টাইম’ই ত্বরান্বিত করে মানুষের উৎপাদনশীলতা বা সৃষ্টিশীলতাকে।
স্নায়ুবিদ স্টিভেন কোটলারের মতে, ভোর সাড়ে চারটে থেকে শুরু করে সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত সময়টাই সবথেকে উপযোগী ‘নো টাইম’-এর জন্য। আর এই নো টাইমের সময়ই আমাদের মস্তিষ্কে নতুন চিন্তাভাবনা উঁকি দেয়। ‘নো টাইম’ তত্ত্ব অনুযায়ী বাঁধা-ধরা রুটিন এবং দৈনিক কোনো বিশেষ কাজের অভ্যেস সৃজনশীলতার পরিপন্থী।
তবে শুধু একা আইনস্টাইন নয়, ‘নো টাইম’-এর সাফল্য পেয়েছেন একাধিক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব। তাঁদের অন্যতম স্টিভ জোবস। হ্যাঁ, অ্যাপেলের সৃষ্টিকর্তাও এমনভাবেই দিন কাটাতেন একটি দীর্ঘ সময়। উদ্দেশ্যহীনভাবেই বসে থাকতেন বাড়িতে। তাঁর কোনোরকম যোগাযোগ ছিল না বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে। আর তার ফলস্বরূপ পরবর্তীতে এসেছিল ‘অ্যাপেল’।
নির্দিষ্ট ছকে বাধা কাজে যাঁরা ব্যস্ত থাকেন, তাঁদের তুলনায় যাঁরা নিজেদের মতো করে অনেক ফাঁকা সময়ের মধ্যে দিয়ে দিন কাটান তাঁদের মস্তিষ্কে সৃজনশীলতা বেশি করে উঁকি দেয়। অর্থাৎ দীর্ঘ মেয়াদে ‘অলসতা’-রও যে ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে, সেটাই সামনে আনছেন বিশেষজ্ঞরা।
❤ Support Us