- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- মার্চ ২৯, ২০২৩
ধর্মের সঙ্গে রাজনীতির মিশেল গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। অভিমত শীর্ষ আদালতের
এদেশ জওহর লাল নেহেরু, অটলবিহারী বাজপেয়ীর মতো প্ৰধানমন্ত্রীর বক্তব্যে মোহিত হয়েছে এদেশ, এখন সেখানে শুধুই বিদ্বেষের বিষচক্র: সুপ্রিম মন্তব্য
রাজনীতি থেকে ধর্মকে বিচ্ছিন্ন করা গেলেই বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে। রাজনীতি ও ধর্মকে আলাদা করার কাজটা করতে হবে রাজনীতিকদেরই। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে এম জোশেফ এবং বি ভি নাগরত্নের ডিভিশন বেঞ্চ একথা জানিয়েছে।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এও বলেছে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু কিংবা অটলবিহারী বাজপেয়ী সুবক্তা ছিলেন। তাঁদের বক্তব্য শুনতে উৎসুক ছিলেন সমাজের নানান শ্রেণির মানুষ। একসময়ে এর ব্যতিক্রম ছিলেন না প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার নাগরিকরাও।কিন্তু এখন বেশীরভাগ রাজনীতিকদের মুখে শুধুই ঘৃণার তরজা।
এদিন বিচারপতি জোশেফ বলেছেন, সবার আগে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য পেশ করা থেকে বিরত থাকা দরকার। সুপ্রিম কোর্ট মনে করে, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এবং তার জেরে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় কার্যত বিষাক্ত চক্রের সৃষ্টি হচ্ছে। এর থেকে অব্যাহতির প্রধান পথ হল রাজনীতি আর ধর্মকে একসারিতে না রাখা। দুটি পৃথক বিষয় এটা উপলব্ধি হলেই সমস্যার অস্তিত্ব থাকবে না। তাছাড়া রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে মিশ্রিত করা হলে, তা গণতন্ত্রের পক্ষেও বিপজ্জনক।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এও জানিয়েছে, যারা এধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য পেশ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অনেকক্ষেত্রেই এফআইআর পর্যন্ত দায়ের করা হচ্ছে না। এব্যাপারে নেতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যের সরকার।
সুপ্রিম কোর্টে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দায়ের হওয়া একাধিক আবেদনের জেরে বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে হিন্দু সমাজ নামে একটি সংগঠনের তরফে। ওই সংগঠনের আইনজীবী বিষ্ণু জৈন আদালতে বলেছেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় মিছিল করার অধিকার রয়েছে। এর জবাবে বিচারপতি নাগরত্ন বলেছেন, ধর্মীয় মিছিল করার অধিকার থাকলেও কার্যত ওই মিছিলে যা ঘটছে, তা আপত্তিকর।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এও জানিয়েছে, অসহিষ্ণুতার যে ঘটনাগুলি ঘটছে, তা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
আইনজীবী নিজাম পাসহা আদালতে জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রে গত চার মাসে অন্তত ৫০টি মিছিল-সমাবেশ হয়েছে, যেখানে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য ছড়ানো হয়েছে হিন্দুত্ববাদীদের মারফত। অন্যদিকে, এই মামলায় কেন্দ্রের তরফে সওয়াল করেছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তাঁর অভিযোগ, কেরলে ও তামিলনাড়ুতে একাধিক সমাবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক ভাষণ দিয়েছেন একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের বক্তারা। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৮ এপ্রিল।
❤ Support Us