- প্রচ্ছদ রচনা
- জানুয়ারি ১৭, ২০২৩
‘তোরা যুদ্ধ করে করবি কী তা বল?’প্রশ্নময় স্বীকারোক্তি শাহবাজের। তিন তিনটি যুদ্ধের শিক্ষা অনেক—দুর্দশা ,দারিদ্র, বাড়ন্ত কর্মহীনতা।
মোদির সঙ্গে বৈঠকের বার্তা পাঠিয়ে, স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন শাহবাজ, ইফ উই আর নাইবার নট বাই চয়েস উই আর ফর এভার... অমিলের চেয়ে মিল আমাদের বেশি।

তিন তিনটি যুদ্ধ করেও আমরা কাশ্মীর সমস্যা মেটাতে পারিনি। পাকিস্তানের অনেক শিক্ষা হয়েছে। এবার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আমরা টেবিলে বসে শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজতে চাই। দুবাই-এর আল আরবিয়া টিভির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
শরিফ পরিবারের সঙ্গে মোদির হৃদ্যতা সর্বজন বিদিত। নাওয়াজ শরিফ তখন প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রী। মোদির সে সময় প্রধানমন্ত্রীত্বের প্রথম দফা। আফগানিস্তান থেকে সোজা উড়ে গেলেন পাঞ্জাবে। নাওয়াজের বাসভবনে। পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। মোদির ঐ নাটকীয় সফর নিয়ে সরব হয়ে উঠল দুই দেশের সংবাদ মাধ্যম। অবাক বিরোধীরা। মোদি আত্ম কৈফিয়তের দ্বারস্থ হলেন না। বিরোধীদের সমালোচনারও তোয়াক্কা করেননি। ভাবা হয়েছিল, বরফ গলবে। অটল বিহারীর উত্তরাধিকার ছুঁয়ে দুদেশ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের রাস্তা খুঁজবে। পাক সেনা তাদের কায়েমি স্বার্থকে বড়ো করে দেখল। প্ররোচনা তৈরি করল কাশ্মীরে। লাদাখে আক্রমণ করে বসল। কাশ্মীরে জঙ্গিদের অস্ত্র সাহায্য আর প্রশিক্ষণ বজায় রাখল। পরে দুর্নীতির অভিযোগে নির্বাসনে যেতে হল নওয়াজকে। একের পর এক সরকার এল, দেশকে নিয়ে ডুবল, সন্ত্রাসে চওড়া হল পাকিস্তানের বদনাম। বাধ্য হয়ে ভারত অস্ত্রের জবাবে অস্ত্রকে বিকল্প ভাবল।
পাকিস্তানের একাধিক অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা আর বুদ্ধিজীবীরা স্বীকার করেছেন, যুদ্ধ করে মুখ পুড়িয়েছে ইসলামাবাদ। কাশ্মীর ছিনিয়ে নিতে পারেনি। রাষ্ট্রীয় নেতারা কখনও এ বিষয়ে মুখ খোলেনি। এই প্রথম সরব হলেন ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী। ইমরান বার কয়েক দিল্লির সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন। সাড়া দেয়নি ভারত। শাহবাজের ইচ্ছাকে কতটা গুরুত্ব দেবে, বলা মুশকিল। তখন নীরবতাই কি মৌন সম্মতির লক্ষণ? শাহবাজ আল আরবিয়া টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, ভারতীয় নেতৃত্ব আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জ্বলন্ত কাশ্মীর নিয়ে বৈঠকে বসার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান জরুরি। ঝগড়া করে, যুদ্ধ করে আমরা শুধু সময় আর সম্পদ নষ্ট করছি। তিন তিনটে যুদ্ধের পরিণাম কী? দুর্দশা, দারিদ্র আর কর্মহীনতার অভ্যন্তরীণ আগ্রাসন। আমাদের অনেক শিক্ষা হয়েছে, ভারতের পাশে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। আল আরবিয়া, সোমবার শাহবাজের এই সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করেছে। সাক্ষাৎকারে শাহবাজ কোনও রকম রাখঢাক না রেখে বলেছেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী। পাকিস্তান ভারতের প্রতিবেশী। ইভেন ইফ উই আর নট নাইবার বাই চয়েস, উই আর ফর এভার। অমিলের চেয়ে মিল বেশি দুদেশের আচরণে, দৈনন্দিন অভ্যাসে। শাহবাজ একথাও বলেছেন, কাশ্মীরে যা ঘটছে, তা বন্ধ হওয়া উচিত।
❤ Support Us