Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • জানুয়ারি ১০, ২০২৪

পাকিস্তানের আসন্ন নির্বাচন প্রহসন হতে পারে, দাবি ইমরান খানের

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
পাকিস্তানের আসন্ন নির্বাচন প্রহসন হতে পারে, দাবি ইমরান খানের

পাকিস্তানের আসন্ন নির্বাচন প্রহসন হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্র “দ্য ইকোনোমিস্ট”-এ এমনই লিখেছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়ে এই মুহূর্তে কারাগারে বন্দী রয়েছেন ইমরান খান।

কারাগার থেকে ওই সংবাদপত্রের অতিথি কলামে ইমরান লিখেছেন, “আজ পাকিস্তান ফেডারেল এবং প্রাদেশিক উভয় স্তরেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দ্বারা শাসিত হচ্ছে। এই প্রশাসনগুলি সাংবিধানিকভাবে অবৈধ। কারণ সংসদীয় সরকার ভেঙে দেওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। জনগণ শুনছে যে, ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু গত এক বছরে পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখাওয়া দুই প্রদেশে নির্বাচনের কথা অস্বীকার করা হয়েছে। গত মার্চে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুসারে এই প্রদেশ দুটির ভোট তিন মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভোট গ্রহণ করবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।”

ইমরান খান কলামে নিজে লিখেছেন, না মৌখিকভাবে কাউকে বলেছিলেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। পাকিস্তানের সংবাদপত্র “ডন” অবশ্য জানিয়েছে, ইমরান নাকি বলেছেন, দ্য ইকোনমিস্টে প্রকাশিত তাঁর অতিথি প্রবন্ধটি মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন। ইমরানের কথায়, “একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত কলাম সম্পর্কে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছিলাম। এই নির্দেশিকা অনুসরণ করে নিবন্ধটি লেখা এবং প্রকাশিত হয়েছিল।” সোমবার আদিয়ালা কারাগারে তোশাখানা এবং আল-কাদির ট্রাস্ট মামলার শুনানির সময় ইমরান সাংবাদিকদের কথাগুলি বলেন।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে দেশের নির্বাচন কমিশনের কলঙ্কিত পদক্ষেপেরও সমালোচনা করেন। ইমরান বলেন, “নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র দেশের শীর্ষ আদালতকে অবজ্ঞাই করেনি, প্রথম পছন্দের প্রার্থীদের জন্য আমার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের মনোনয়নও বাতিল করেছে। দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করেছে এবং আমার এবং অন্যান্য পিটিআই নেতাদের বিরুদ্ধে অবমাননার মামলা দায়ের করেছে। নির্বাচন হোক বা না হোক, ২০২২ সালের এপ্রিলে প্রহসনের অনাস্থা ভোটের পর থেকে আমাকে এবং আমার দলকে যেভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট, নির্বাচন কমিশন, সেনাবাহিনী, নিরাপত্তা সংস্থা এবং বেসামরিক আমলাতন্ত্র নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নয়।”

মার্কিন চাপে তার সরকারকে অপসারণ করার জন্য ইমরান সেনাবাহিনী এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলিসহ সব সংস্থাকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক কর্তার বার্তার মাধ্যমে কথিত আমেরিকান হস্তক্ষেপের চেষ্টার কথা উল্লেখ করেছেন। ইমরান বলেন, “২০২২ সালের মার্চ মাসে, আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন কর্মকর্তা ওয়াশিংটন ডিসি-তে পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রদূতের সাথে দেখা করেছিলেন। সেই বৈঠকের পরে রাষ্ট্রদূত আমার সরকারকে একটি সাইফার বার্তা পাঠিয়েছিলেন। আমি পরে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির মাধ্যমে বার্তাটি দেখেছিলাম এবং পরে এটি মন্ত্রিসভায় পড়ে শোনানো হয়েছিল। সেই বার্তায় বলা হয়েছিল, অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রীত্বের ওপর রাশ টানা হোক। তার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের সরকারের পতন হয়েছিল।” দ্য ইকোনমিস্ট উল্লেখ করেছে যে, পাকিস্তান সরকার এবং আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট পাকিস্তানের রাজনীতিতে আমেরিকান হস্তক্ষেপের খানের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সবশেষে, ইমরান পাকিস্তানের সংকটের একমাত্র সমাধান হিসেবে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের কথা বলেছেন। তিনি লিখেছেন,”পাকিস্তানের এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র কার্যকর উপায় হল সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন, যা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আইনের শাসন ফিরিয়ে আনবে। একইসাথে একটি জনপ্রিয় ম্যান্ডেট সহ একটি গণতান্ত্রিক সরকারের দ্বারা প্রয়োজনীয় সংস্কারের সূচনা করবে৷ পাকিস্তানের সামনে সঙ্কট থেকে নিজেকে নিরস্ত করার অন্য কোনও উপায় নেই। দুর্ভাগ্যবশত, গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করে রেখে আমরা এই সমস্ত ফ্রন্টের বিপরীত দিকে যাচ্ছি।”


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!