Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • জুন ১২, ২০২৩

পঞ্চায়েত নির্বাচন মামলার রায়দান স্থগিত। ভোট কি পিছবে ?

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
পঞ্চায়েত নির্বাচন মামলার রায়দান স্থগিত। ভোট কি পিছবে ?

পঞ্চায়েত মামলা নিয়ে দিনভর শুনানি শেষ হল কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ কলকাতা হাইকোর্টে কংগ্রেস ও বিজেপির পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে দায়ের করা মামলার শুনানি শুরু হয়ে তা চলে বিকেল পৌনে পাঁচটা পর্যন্ত। মাঝে রায় ৫০ মিনিটের একটি বিরতি ছিল। এই ৫০ মিনিট বাদ দিলে এই মামলার এদিন শুনানি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে চলে প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা ধরে। দু’দফা শুনানির প্রথম দফার পুরোটাই আদালতে উপস্থিত থেকে সরাসরি শুনানি শুনেছেন রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা এবং জনস্বার্থ মামলাকারী শুভেন্দু অধিকারী। দুপুর আড়াইটে নাগাদ তিনি আদালত চত্বর ছেড়ে বের হন। সেই সঙ্গে জানিয়ে যান, হাই কোর্ট তাঁর ভূমিকাকে যে ভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে, তাতে তিনি খুশি এবং সুষ্ঠু পঞ্চায়েত ভোটের জন্য আদালতের নির্দেশের ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী। প্রথম দফায় মনোননয়নের সময় বৃদ্ধি এবং পঞ্চায়েত ভোটের দিন পিছোনোর পক্ষে যুক্তি দেন প্রধান বিচারপতি। এ-ও বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করালেই ভাল।  দ্বিতীয় দফায় মামলাকারীরা সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে ভোট করানো নিয়ে বক্তব্য জানান প্রধান বিচারপতিকে। প্রধান বিচারপতিও কমিশনকে এ ব্যাপারে নিজের মতামত জানান। অবশেষে বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ শুনানি শেষ হলে বিচারপতি রায়দান স্থগিত রাখেন।

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নের জন্য যে সময় দেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়,  এই অভিযোগ এনেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কংগ্রেস ও বিজেপি। সেই মামলার শুনানিতে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নের সময় বৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম।

আদালত জানায়, ১৫ থেকে ২১ জুন মনোনয়ন জমা নেওয়া হোক, ২৩ জুন স্ক্রুটিনি হোক, ২৬ জুন মমোনয়ন প্রত্যাহার করার দিন হোক, ভোট হোক ১৪ জুলাই।

মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা সময় অপর্যাপ্ত বলেও পর্যবেক্ষণ বিচারপতির। এ প্রসঙ্গে কমিশন অবশ্য বলেছে, মনোনয়নের সময় চাইলে এক দিন বাড়ানো যেতে পারে। অর্থাৎ, ৯ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত যে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় বেধে দেওয়া হয়েছিল, তা ৯ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত করা যেতে পারে। এর প্রত্যুত্তরে বিচারপতি বলেন, সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ভোট ১৪ জুলাই করাতে হবে।

পঞ্চায়েত মামলার দ্বিতীয় দফার শুনানিতে নির্বাচনে সিভিক ভলান্টিয়ার বা চুক্তি ভিত্তিক কর্মীদের ভোটের কাজে ব্যাবহার করার বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। বিচারপতি বলেন, ‘‘আমরা চাই কোনও চুক্তিভিত্তিক কর্মী বা সিভিক ভলান্টিয়ার কোনও ভাবেই এই নির্বাচনে যেন অংশ না নেয়। এই নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে তাঁদের বাদ রাখা হোক। কমিশন এই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখুক।’’

পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আর্জি জানিয়েছে বিরোধীরা। তবে আদালতে কমিশন বলে, রাজ্যের পুলিশের উপরেই আস্থা রাখা উচিত। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে রাজ্যের নজরদারিতে ভোট নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের পাশাপাশি অন্যান্য জনস্বার্থ মামলাকারীরাও ভোটে সিভিক ভলান্টিয়ার বা চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ব্যবহার করা নিয়ে আপত্তি তোলে। তার পরেই প্রধান বিচারপতি বলেন, “সিভিক ভলিন্টিয়ার দিয়ে ভোট নয়।”
বাম, কংগ্রেস, বিজেপি, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ সবার পক্ষ থেকেই সোমবার আদালতে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর আর্জি জনানো হয়। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, স্থানীয় স্তরে নির্বাচন পরিচালনা সরকারি কর্মীদের দ্বারাই হয়। প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে কাজ করতে হয়। ইতিমধ্যে এই সংগঠনের কর্মীদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাই এঁরা যাতে সুষ্ঠু ভাবে ভোটগ্রহণ করাতে পারেন, তা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক।
সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে ভোট করানো নিয়ে এদিন আদালতে প্রশ্ন তুলল সিপিএমও। সিপিএমের আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইন্সপেক্টর জেনারেল আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সিভিক ভলান্টিয়ার কাজ করবে না। কিন্তু গত দু’দিনে দেখা গিয়েছে, রানিনগর এবং ডোমকলে বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নেমে পড়েছে সিভিক ভলান্টিয়াররা। সম্ভবত পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী ছিল না। ভোট করাতে সম্ভবত পর্যাপ্ত পুলিশও নেই রাজ্যের কাছে।’’ শুভেন্দু অভিকারীও সোমবার আদালত থেকে প্রথমার্ধের শুনানি শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় জানান, “রাজ্যে ৪২ হাজার পুলিশ দিয়ে ৭০ হাজারের বেশি বুথে ভোট কি করে করা সম্ভব?”


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!