- এই মুহূর্তে দে । শ
- জুন ১৬, ২০২৩
রাজ্যের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ, আজ ভাঙড়ে যেতে পারেন রাজ্যপাল

আজ অশান্ত ভাঙড়ে যেতে পারেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে অশান্ত হয়ে উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। শুক্রবার অশান্ত ভাঙড়ের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাজ্যপাল যেতে পারেন বলে রাজভবন সূত্রে জানা গেছে। রাজ্যপাল শুক্রবার নিজের পূর্ব নির্ধারিত সমস্ত কর্মসূচি বাতিল করেছেন বলেও রাজভবন সূত্রে খবর। পঞ্চায়েত নির্বাচনের হানাহানি দেখে বৃহস্পতিবার রাতেই রাজ্যপাল একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন । তাতে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘‘শয়তানের খেলা শেষ হওয়া উচিত। বন্ধ হবে। পশ্চিমবঙ্গে শেষের শুরু হবে। কথা নয়, এবার কাজ হবে।’’
মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে ৯ তারিখ থেকেই রাজ্যে ধারাবাহিক অশান্তির ঘটনায় রাজ্যপালের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার মনোনয়নের শেষদিনের অশান্তির পর শুভেন্দু অধিকারী আবারও আঙুল তুলেছেন রাজ্যপালের দিকে। বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘রাজ্যপালের যখন করার ছিল, তখন কিছু করেননি।’’ রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীব সিনহার নিয়োগও রাজ্যপাল আটকাতে পারতেন বলেই দাবি করেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতার পাশাপাশি রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও। বৃহস্পতিবারই তিনি বলেছেন, ‘‘রাজ্যপাল কোথায় গিয়েছেন আমি জানি না। শুনলাম তিনি আউট অফ স্টেশন। আর রাজ্যে এই পরিস্থিতি চলছে।’’
আর বিরোধী দলনেতা এবং আইএসএফ বিধায়কের এই মন্তব্যের পরেই বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যে অশান্তি নিয়ে রাজ্যপালের কড়া বিবৃতি প্রকাশ্যে এসেছে। বিবৃতিতে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘‘নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলায় মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এতে আমি স্তম্ভিত। গুন্ডাদের হাতে আক্রান্ত সংবাদমাধ্যমও। নির্বাচনে জয় নির্ভর করে ভোটের সংখ্যার উপর। মৃতদেহের সংখ্যার উপর নির্ভর করে নয়।’’ এর পরেই রাজ্যপালের মন্তব্য, ‘‘গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যম আক্রান্ত। তার মানে গণতন্ত্র আক্রান্ত। সাধারণ মানুষ আক্রান্ত। দেশের সংবিধান আক্রান্ত। নতুন প্রজন্মও আক্রান্ত। শয়তানের এই খেলা বন্ধ হওয়া উচিত।’’ তিনি লেখেন, ‘‘গণতন্ত্রে মানুষই প্রভু। নির্ভয়ে নিজের ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে তাঁদের। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে হিংসার কোনও জায়গা নেই।’’ হিংসার রাস্তা অবিলম্বে বন্ধ করার বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি, দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার কথাও বলেছেন তিনি। বিবৃতিতে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেছেন রাজ্যপাল। শান্তিপূর্ণ ভাবে যাতে নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়, সে ব্যাপারে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সদর্থক ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মনোনয়ন-পর্বে অশান্তি নিয়ে আগেও সরব হয়েছিলেন রাজ্যপাল। গত শনিবারই রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও রকম গন্ডগোল বরদাস্ত করা হবে না।’’ তার পরও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মনোনয়ন ঘিরে তাণ্ডব চলেছে। বৃহস্পতিবার আবারও কড়া বিবৃতি এই অশান্তি,গুণ্ডামির বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের পক্ষে সরব হলেন রাজ্যপাল।
এর আগেও রামনবমীর রাজ্যে৪ অশান্তির ঘটনায় ‘তৎপর’ হতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে। সেই সময় উত্তরবঙ্গ সফর সংক্ষিপ্ত করে তিনি দ্রুত কলকাতায় ফিরে এসেছিলেন। গিয়েছিলেন হুগলির রিষড়ায়। সেখানকার অশান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতের বিবৃতির পাশাপাশি, শুক্রবার নিজের যাবতীয় কর্মসূচি যে ভাবে বাতিল করেছেন রাজ্যপাল, তাতে তিনি ভাঙড়ে যেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
❤ Support Us