- এই মুহূর্তে দে । শ
- জুন ১০, ২০২৩
আইএসএফ-কে মনোনয়নপত্র দিয়ে ভাঙড়ে মার খেলেন সরকারি কর্মী, শাসক দলের বিরুদ্ধে উঠল অভিযোগ

দেশে গণতন্ত্রের অন্তর্জলি যাত্রা করাচ্ছে বিজেপি সরকার। এই অভিযোগে বিজেপির বিরুদ্ধে যখন ২৩ জুন পাটনায় তৃণমূল সহ দেশের বিজেপি বিরোধী জোটের বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক তার প্রাক মুহূর্তে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে আইএসএফ- কে কেন মনোনয়নপত্র দেওয়া হল? সেই কারণে ভাঙড়ের বিডিও অফিসার সরকারি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে আইএসএফ-কে কেন পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র তুলতে দেওয়া হল, এই প্রশ্ন তুলে ব্লক অফিসের সরকারি কর্মীকে পেটানোর অভিযোগ রাজ্যের উঠল শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মনোনয়ন প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় দিন শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় ২ ব্লকে এই ঘটনাটি ঘটেছে। তৃণমূলের বক্তব্য, এই ঘটনা ঘটে থাকলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিডিও কার্তিক পাল। ভিডিও কার্তিক পাল সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেছেন, ভিডিও অফিসার কর্মী বিদ্যুৎ ঘোষকে নাকে, মুখে কিল, ঘুষি মারা হয়েছে। এই ঘটনায় কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “এই রকম ঘটনা যদি চলতে থাকে তাহলে সরকারি কর্মচারীরা নির্বাচনের কাজে যাবেন না। সরকারকে তখন ভোট করতে বেগ পেতে হবে।” প্রসঙ্গত এই ঘটনা ঘটতে পারে তার আভাস গতকালই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অফিস পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাদের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে স্মারকলিপি দিয়ে এসেছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।
এই ঘটনায় ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেছেন, “তৃণমূলের লালিতপালিত দুষ্কৃতীরা আইএসএফ-কে মনোনয়নপত্র দেওয়ার অভিযোগে ভিডিও অফিসার এক সরকারি কর্মীকে মারধর করেছে। তৃণমূল সুকৌশলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধী শূন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। ভিডিও অফিস সিসিটিভি নিশ্চই আছে। সেই ফুটেজ দেখলেই দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া যাবে। কমিশনের উচিত সেটা করা।”
শনিবার ভাঙ্গরে এই ঘটনার পর আইএসএফের অভিযোগ, ভাঙ়ড়ের চালতাবেড়িয়া অঞ্চলের দলীয় নেতা সাইম কাদিরকে মনোনয়নের ফর্ম দিয়েছিলেন বিডিও অফিসের কর্মী বিদ্যুৎ ঘোষ। আইএসএফ-কে কেন ফর্ম দেওয়া হয়েছে, সেই কারণেই তাঁকে মারধর করেছেন চালতাবেড়িয়ার এক তৃণমূল নেতা। সাইম কাদির জানান, ‘‘সরকারি আধিকারিককে মারধর করতে পারলে তো এর পর সাধারণ মানুষকেও মারধর করবে। গণতান্ত্রিক দেশে সকলেরই ভোটে দাঁড়ানোর অধিকার রয়েছে। এতে বাধা দেওয়া হবে কেন?’’
সরকারি কর্মীকে মারধরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিডিও কার্তিক পাল বলেন, ‘‘বিদ্যুৎবাবুকে মারধরের অভিযোগ সত্যি। আমার চেম্বারে উনি এসেছিলেন। ওঁকে মারধর করা হয়েছে। উনি জখম হয়েছেন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাচ্ছি।’’
শনিবার এই ঘটনা যখন ঘটছে তখন বিডিও অফিসেই ছিলেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা, আরাবুল ইসলাম ও অন্যান্যরা। বিরোধীদের অভিযোগ, বিডিও অফিসের একটি ঘরে প্রার্থী বাছাই করছিলেন শওকত, আরাবুল। সেই সময় বিডিও অফিস চত্বর ঘিরে রেখেছিলেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। এর মধ্যে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে মনোনয়নের ফর্ম তোলা এবং তা জমা দেওয়া আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শওকত অবশ্য বলেন, ‘‘এ রকম কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। তবে আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। যদি সত্য হয়, আমাদের তরফ থেকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি কর্মীদের মারধর করা কখনওই উচিত নয়।’’
❤ Support Us