- এই মুহূর্তে দে । শ
- জুন ২৬, ২০২৩
ভাঙড়ে প্রতিপক্ষ, বিধানসভায় দাদা-ভাই নওশাদ-সওকত

পাড়ায় মারপিট, বিধানসভায় হাসিমুখে পাশাপাশি সৌহার্দ্য বিনিময় সওকত মোল্লা ও নওশাদ সিদ্দিকির। এ যেন পাটনার বিজেপি বিরোধী মহা জোটের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সীতারাম ইয়েচুরি, রাহুল গান্ধির পাশাপাশি বসার সেই ঐতিহাসিক ছবির ক্ষুদ্র সংস্করণ।
আমরা দেখছি, পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে লাগাতার সংঘর্ষে রাজ্যজুড়ে ১০টি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে ভোটপ্রক্রিয়া স্থগিত করে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবিতে আদালতে মামলা হয়েছে। লাগাতার এই সংঘর্ষের দৃশ্যের মধ্যে সোমবার বিধানসভায় একটা আশার ইতিবাচক ছবি দেখা গেল। এদিন বিধানসভায় মুখোমুখি হলেন ভাঙড়ের মারমুখী দুই পক্ষের দুই নেতা সওকত মোল্লা ও নওসাদ সিদ্দিকি। সাংবাদিকরা বিধানসভায় এই দুই নেতাকে কাছে পেয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করতেই দুজনেই ভাঙড়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আশ্বাস দিলেন। সত্যিই কি ৮ জুলাই রক্তপাতহীন ভোটগ্রহণের শপথ রক্ষা করতে পারবেন সওকত-নওশাদ?
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সোমবার বিধানসভায় এই লড়াইয়ের আবহে কথা বলতে দেখা গেল তৃণমূলের সওকত ও আইএসএফ-এর নওশাদকে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। এর পর একের পর এক প্রশ্নের মুখে বৈরিতা ভুলে সন্ধির বার্তা দিলেন দুই নেতা, তবে সওকতের চাইতে অনেকটাই সাবলীলভাবে প্রশ্নের উত্তর দিলেন নওশাদ।
নওশাদ বলেন, “সওকত মোল্লা সাহেব আমার থেকে অনেক বেশিবারের বিধায়ক। তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি নিশ্চই দাদার মতো করে ভাইকে পথ দেখিয়ে ভাঙড়ে শান্তিপূর্ণ ভোটের ব্যবস্থা করবেন। আমার ওনার প্রতি আমৃত্যু সৌজন্যবোধ থাকবে। মানুষের প্রাণের থেকে দামি কিছু নেই। আর কারও যেন প্রাণ না যায়। ভাঙড়ে অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।”
সওকত বলেন, “আমি আমার দায়িত্ব পালন করব। হিংসা কেউ চায় না। মানুষের প্রাণ গেলে আমারও দুঃখ হয়। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। ধর্ম ধর্মের জায়গায়। দুটোকে যেন মেশানো না হয়। দাদা হিসাবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করব। তবে নওসাদ কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পাওয়ায় তাঁর সঙ্গে বিজেপির আঁতাত রয়েছে কি না তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি সওকত।”
কিছুদিন আগেই নওশাদ বলেছেন, সওকতের উস্কানিতেই ভাঙড়ে অশান্তি হচ্ছে। সোমবারও সওকত কেন রাজ্যের নিরাপত্তা পেলেন এই অভিযোগে নওশাদ আদালতে গিয়েছেন, অন্যদিকে কি করে নওশাদ দিল্লির নিরাপত্তা পেল এই প্রশ্নে নওশাদকে বিজেপির সহযোগী বলে সমালোচনা করেছেন সওকত। আবার এই একই দিনে বিধানসভায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে হাসলেন, সৌজন্য বিনিময় করলেন প্রতিপক্ষ সওকত-নওশাদ। এটাই আসলে রাজনীতির আসল রসায়ন।
❤ Support Us