Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • জুন ১৩, ২০২৩

মনোনয়ন ঘিড়ে তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র ভাঙড় । নির্বিচারে চলল বোমা,গুলি, আক্রান্ত পুলিশকর্মী

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
মনোনয়ন ঘিড়ে তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র ভাঙড় । নির্বিচারে চলল বোমা,গুলি, আক্রান্ত পুলিশকর্মী

ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিজয়গঞ্জ ও মেলার মাঠ মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার এক কথায় রণক্ষেত্রের রূপ নেয়। তৃণমূল-আইএসএফ-এর মধ্যে এই সংঘর্ষের ফলে প্রায় ৭০ টি বোমা পড়ে। ৭রাউন্ড গুলি চলে। তৃণমূলের কর্মী রেজ্জাক জানান, “আইএসএফকে উৎখাত করতে তৃণমূল বদ্ধপরিকর। আনাদের মারছে আইএসএফ।” প্রসঙ্গত এই রেজ্জাকই ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকে সরকারি কর্মীকে মেরে নাক ফাটিয়ে দেয় গত পরশু। এদিকে ভাঙড় ২ নম্বর ব্লক যে  কাশীপুর থানার অন্তর্গত সেই কাশীপুর থানার এসআই এস আর মীর্জা দুস্কৃতীদের ছোড়া বুলেটের আঘাতে রক্তাক্ত হন। দুস্কৃতীদের আক্রমণ থেকে বাদ গেল না পুলিশও। আইএসএফ-এর অভিযোগ, “তৃণমূল আইএসএফ প্রার্থীকে লক্ষ্য করে গুলি করেছে।”

এদিকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগণার ডিএম ও এসপিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় এক আইএসএফ প্রার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, আক্রান্ত হয়েছেন পুলিশ কর্মী, আটক করা হয়েছে বেশ কিছু আইএসএফ কর্মীকে, যাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসে আসছিলেন। তবে পুলিশ এই ঘটনায় তৃণমূলের কোনও কর্মীকে আটক করেনি বলে আইএসএফ-এর অভিযোগ।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি তাঁর দলের প্রার্থীদের নিয়ে মিছিল করে ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকে মনোনয়ন জমা দিতে আসবেন বলে সকাল থেকেই খবর ছিল। এর ফলে পুলিশ ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ায়।
এদিকে মঙ্গলবার সকালেই তৃণমূল নেতা সওকত মোল্লা জানান, “আইএসএফ আজ বোমা নিয়ে মারামারি করার জন্য প্রস্তুত হয়েছে। ”

এদিকে যে ১৪৪ ধারার মধ্যে জমায়েত করা নিষেধ, সেই ১৪৪ ধারা জারি করা একালায় আইএসএফ প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে এলেই তৃণমূল মুড়িমুড়কির মতো বোমা মারে বলে অভিযোগ। আইএসএফ-এর অভিযোগ,এবং স্পষ্ট দেখা গেছে এই হারে বোমাবাজি,গুলিচালনা, পুলিশ ও আইএসএফ কর্মীদের রক্তাক্ত করার পরও পুলিশ আইএসএফ কর্মীদেরই মনোনয়ন দিতে না দিয়ে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে।
এই ঘটনায় নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, “আজ আমাদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা ছিল। আমাদের মনোনয়ন আটকাতে সকাল থেকে তৃণমূল বোমাবাজি শুরু করে। আমরা বোমা-গুলিতে বিশ্বাস করি না। আমাদের কর্মীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারছে না। আমি রাস্তায় আছি। রাজ্য নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছি। আমি বিজয়গঞ্জ যাচ্ছি। সওকাত মোল্লা ও আরাবুল ইসলামের নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটে।” নওশাদ সিদ্দিকি জানান,”আমি কাঠালিয়ার রাস্তায়। মুহুর্মুহু বোমা পড়ছে এখানে। রাস্তায় কোনও পুলিশ নেই।”

এদিকে তৃণমূল বিধায়ক ও ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা সওকত মোল্লা বলেন, “নওশাদ দাড়িয়ে থেকে আমাদের কর্মীদের বোমা মারার ব্যবস্থা করেছে। গাড়ি ভাঙচুর করেছে।”

নওশাদ সিদ্দিকি সওকত মোল্লার অভিযোগ খণ্ডন করে বলেন, “বারবার সওকত মোল্লা ও আরাবুল ইসলাম হামলা চালাচ্ছে।”

সওকত মোল্লা বলেন, “আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব জোয়ার যাত্রা পন্ড করতে নওশাদ যা করছে তাতে ভবিষ্যতে ওকে মূল্য দিতে হবে।”

নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, “আজ ভাঙড় ১ নম্বর ব্লকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নব জোয়ার। আমারা যদি অভিষেকের সভা পন্ড করতে চাইতাম তা হলে ১ নম্বর ব্লকে আমরা মনোনয়ন জমা দিতাম। আমরা সেটা না করে ২ নম্বর ব্লকে মনোনয়ন জমা দিয়েছি।”

মঙ্গলবার বিজয়গঞ্জ ও মেলার মাঠে যে খানে ব্যাপক বোমাবাজি ও গুলি চলার ঘটনা ঘটল তা সামলাবার মতো পর্যাপ্ত পুলিশ ও আরএএফ ছিল না। ফলে মেলার মাঠে ও বিজয়গঞ্জে বোমা পড়ার শুরু থেকেই পুলিশ ব্যাকফুটে চলে যায়। কেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি প্রার্থীদের নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে পারলেন না সেই অভিযোগ তুলেছেন স্বয়ং নওশাদ সিদ্দিকি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ,মঙ্গলবার আইএসএফ প্রার্থীরা যখন দলবদ্ধভাবে মনোনয়ন জমা দিতে আসে তখন তাঁদের উপর প্রথমে বোমা মারে তৃণমূল কর্মীরা। কিছুক্ষণ মার খাওয়ার পর পাল্টা আক্রমণ শুরু করে আইএসএফ। তখনও তৃণমূল মুড়িমুড়কির মতো বোমা মারে আর তখনই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তৃণমূল শেষ পর্যন্ত মেলার মাঠ সংলগ্ন খাল টপকে বোমা মারতে মারতে পালায়৷ এই সময় মেলার মাঠ ও বিজয়গঞ্জে মনোনয়ন জমা দিতে আসা আইএসএফ কর্মীদের হাতের নাগালে পেয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে মনোনয়নের প্রথম দিন থেকেই ভাঙড় উত্তপ্ত। তার পরেও মঙ্গলবার ভাঙড়ে কেন পুলিশ অশান্তি রুখতে পারল না সেই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা৷
এদিকে ভাঙড়েবএই ঘটনার পর মনোনয়ন জমা নেওয়া বন্ধ। ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসের গেটে বেলা ১ টায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। মেলার মাঠে এখন পড়ে আছে আইএসএফ এবং তৃণমূলের বেশ কিছু কর্মী সমর্থক। পুলিশ এখন ব্যাপক ভাবে ধরপাকর করছে।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!