- এই মুহূর্তে দে । শ
- এপ্রিল ৮, ২০২৪
সৌহার্দ্যের উৎসবে সম্প্রীতির কারিগর

রমজান শেষে খুশির ইদ দরজায় কড়া নাড়ছে। ইদ মানেই কঠিন উপবাস শেষে সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া— ইফতার, প্রার্থনা। মানুষের উৎসব। একরাশ খুশির যাপন। চলছে ইদের কেনা কাটা। এবারে চৈত্র সেলের বাজার আর ইদের কেনাকাটার ধুম সব মিলে জমজমাট বাজার দোকান। ইদ পরবের খাদ্য তালিকায় লাচ্চা, সিমাইয়ের জুড়ি নেই। ২৭ রোজার শেষ হলেই ওরা মুলুক ফেরে । আবার এক বছর পর আসবেন। সুনীল পাশোয়ান, বিজয় শর্মা, কমলেশ, মনোজ, ভজন, মহম্মদ কলিম, মহম্মদ আলি এখন ব্যস্ত ইদের অন্যতম সুখাদ্য লাচ্চা তৈরিতে। এভাবেই প্রতিবছর ইদের সময় লাচ্চা তৈরি করতে বিহারের সাহারশা থেকে বসিরহাটে চলে আসেন ওরা। তৈরি করেন বস্তা বস্তা লাচ্চা। ‘নাজ লাচ্চা–সিমাই’ কোম্পানির কারিগররা বেশির ভাগই হিন্দু। বললেন সংস্থার অন্যতম কর্ণধার মহম্মদ কওশার। পরিস্কার বাংলা উচ্চারণে কওশার বলেন, বাড়ি আমার দেওঘরের কাছে জামুই। কিন্ত ছোট থেকে কলকাতারই বাসিন্দা। বাংলা মিডিয়ামেই পড়াশুনো। আদি বালিগঞ্জ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেছি। তিনি বলেন, লাচ্চা তৈরির কারবার আমাদের বংশ পরম্পরা। এটা আমাদের পার্টনারশিপ ব্যবসা। বসিরহাটে আসছি ২৩ বছর। কোন অসুবিধা নেই। কওশার বললেন, মুসলিমদের পরব হলে কী হবে ইদের লাচ্চা তৈরি করছে তারা বেশিরভাগ হিন্দু। এরা এখানে একসঙ্গে কাজ করছে। একসঙ্গে খাওয়া–থাকা, আড্ডা–ইয়ার্কি চলে। তিনি বলেন, বিহারের একটি জেলা সাহারশা। সাহারসা বিহারের কোশী বিভাগের অন্তর্গত। সাহারসা জেলাকে ভেঙে ১৯৮১ সালে মাধেপুরা জেলা গঠিত হয়। ১০৭ নম্বর জাতীয় সড়ক সাহারসার ওপর দিয়ে গেছে। জেলার সদর শহর সাহারসা ওপর দিয়ে কোশী নদী প্রবাহিত। অধিকাংশ লাচ্চার কারিগরের বাস এই সাহারসা এলাকায়। সেখান থেকেই আমাদের কারিগররা আসে।
বসিরহাটে আস্তানা রোডে একটি বাড়িতে সারাদিন তৈরি হচ্ছে লাচ্চা। ব্র্যান্ডেড ময়দা, ডালডা ঘি, রিফাইন তেল দিয়ে ভাজা হচ্ছে লাচ্চা। আশপাশের এলাকা এখন ম ম করছে ঘিয়ের গন্ধে। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে হাইজিন মেনেই লাচ্চা বানানো হয়। বসিরহাট মহকুমা সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাইকারি বাজারে চলে যায় সেই লাচ্চা। ইদের একমাস আগেই মহম্মদ কাওশার চলে আসেন তাঁর লাচ্চার কারিগরদের নিয়ে। দিন রাত চলে লাচ্চা তৈরি। ২৭ রোজার শেষ হলেই ওরা মুলুক ফিরে যান। আবার এক বছর পর ইদের আগে আসবেন।
❤ Support Us