Advertisement
  • দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
  • জুলাই ২৩, ২০২৪

বাজেট নিয়ে মোদি কন্ঠে নির্মলার স্তুতি । অন্ধকার, জনবিরোধী বাজেট, মন্তব্য মমতার

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
বাজেট নিয়ে মোদি কন্ঠে নির্মলার স্তুতি । অন্ধকার, জনবিরোধী বাজেট, মন্তব্য মমতার

মঙ্গলবার, মোদির নেতৃত্বাধীন তৃতীয় এনডিএ সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন । বাজেট পেশ পরবর্তী ভাষণে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনে ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । তাঁর অভিমত,’ এই বাজেট সমাজের সবকটি স্তরকে শক্তিশালী করবে ।ক্ষমতা প্রদান করবে। সবদিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যুবসমাজকে নতুন পথ দেখাবে।’

মোদি বলেছেন, এই আর্থিক ব্যয়বরাদ্দে মধ্য আয়ের মানুষ শক্তিশালী হবে । এই বাজেট মহিলা-কেন্দ্রিক । মহিলাদের উন্নয়ন এবং কর্মক্ষেত্রে তাঁদের অংশগ্রহণ আরও সুনিশ্চিত করবে ।” বস্তুত, এই বাজেটে শিক্ষা,দক্ষতার উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে । প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গত দশ বছরে দেশে ২৫ কোটি মানুষের আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে। বিশ্ব সারণীতে আর্থিক বৃদ্ধির নিরিখে ভারতের ক্রম উত্তরণের ক্ষেত্রে এই বাজেট একটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ । প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন , সাধারণ বাজেটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে নজর দেওয়া হয়েছে । ভারতকে বিশ্বের ‘গ্লোবাল ম্যানুফাকচারিং হাব’ রূপে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এগোচ্ছে কেন্দ্র ।

কেন্দ্রের পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশের পরই বাংলাকে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় । পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা অধিবেশন শুরু হয়েছে গতকাল থেকে । আজ অধিবেশনের শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলা কারোর দয়া চায়না । কিন্ত তাকে বঞ্চিত করলে সে গর্জন করে উঠবে । মোটেও ছেড়ে কথা বলবে না । ‘ তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ‘পূর্বোদয়’ এবং অমৃতসর-কলকাতা বাণিজ্যিক করিডরের উল্লেখ করলেও উত্তরবঙ্গকে ব্রাত্য করা হয়েছে । এনিয়ে তিনি বলেন, ভোটের আগে মোদি সরকারের মুখে শুধুই প্রতিশ্রুতির বুলি, কিন্তু ভোট মিটতেই তাদের বেমালুম ভুলে যায় তারা ।

লোকসভা নির্বাচনের সময় উত্তরবঙ্গে একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপির হেভিওয়েট নেতারা প্রচার করতে এসেছিলেন । সমতলের তুলনায় পাহাড়ে ঘাসফুল শিবিরের সংগঠন খুব একটা মজবুত নয় । বরং পদ্ম শিবিরের জোর সেখানে অনেকটাই বেশি । তবুও বাজেটে উত্তরবঙ্গকে খালি হাতেই ফিরতে হল বলে সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী । অর্থমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন,‘ভোটের সময়ে ওরা বড় বড় কথা বলেছিল । ভোটের পর দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াংকে ভুলে যায় । এটাই ওদের ধরন । দার্জিলিং যেন এই বাজেটকে মনে রাখে । সিকিম পাক, কিন্তু দার্জিলিংকে কেন বঞ্চনা?’

বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশের ক্ষেত্রে নির্মলার ‘কল্পতরু’ রূপ নিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের ওপর যে ঢালাও ব্যয়বরাদ্দ করা হবে,তা সহজেই বোধগম্য । একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় বিজেপির বিপদের দিনে এনডিএ জোট সরকারের অন্যতম বৃহত্তম দুই শরিক তাদের সঙ্গে হাত মেলায় ও সরকার গঠন করে । তাই এক অর্থে এটি ‘কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ’ বলা যায় । দুই দলের প্রধানের চাহিদা একটাই ছিল,তা হল কেন্দ্রের থেকে ‘বিশেষ রাজ্যের স্বীকৃতি’ পাওয়া । তবে তার জন্য যে সমস্ত মানদন্ড দরকার, দুটি রাজ্যের তা নেই । ভবিষ্যতে অবশ্য তা নিয়ে সরকার চিন্তা করবে কি না তা বলবে ভবিষ্যত । সেক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপ নেতিবাচক হলেও যেন দুই বড় শরিক জোট ভেঙে বেরিয়ে না যান,সে বিষয়েও ভাবতে হচ্ছে সরকারকে ।

মমতা বলেন ‘একটা সরকার স্পিকার পদ বা মন্ত্রিত্ব না দিয়ে কেবল শেয়ারের দুর্নীতি করে এবং অর্থ দিয়ে শরিকদের হাতে রাখছে । শরিকেরাই বা কেন এটা গ্রহণ করছে, আমার জানা নেই । অন্ধ্র বা বিহারকে টাকা দেওয়ায় আমার আপত্তিও নেই । তারাও আমাদের দেশের মধ্যেই রয়েছে । কিন্তু এক জনকে দিতে গিয়ে আর এক জনকে বঞ্চনা করা যায় না ।’

‘একশো দিনের কাজ’ নিয়ে মমতা বললেন, ‘১০০ দিনের কাজের টাকার কোনও হদিস নেই বাজেটে । বাংলাদেশ একটি স্বতন্ত্র দেশ । সেই দেশের প্রায় সমান ভোটার কিন্তু রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে । এই রাজ্যকে তা-ও বঞ্চনা করা হচ্ছে ।’ পাশাপাশি কেন্দ্রের থেকে এখনও যে এ রাজ্যের ৭৫হাজার কোটি টাকা পাওনা,সেকথা তুলে ধরেন তিনি ।

সোনা রুপোর দাম কমানো নিয়ে তার অভিমত,‘মেয়েরা সোনা-রুপো পরুক । কিন্তু সাধারণ ঘরের মেয়েদের জন্য তো এটা নয় । খাদ্যের উপর কোনও ভর্তুকি নেই কেন? আগের বারও জিরের উপর কর ছিল, কিন্ত হিরের উপর ছিল না। আসলে এই বাজেট গরিবের দিকে না তাকানোর বাজেট। যাদের অনেক আছে, তারা বাজেটের মাধ্যমে আরও পাবে। যাদের নেই, তারা কিছুই পাবে না। এটি দিশাহীন, জনগণবিরোধী বাজেট। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করাই এই বাজেটের একমাত্র উদ্দেশ্য। ‘ কর্মসংস্থানের উল্লেখ না থাকায় বাজেটকে ‘ অন্ধকার বাজেট’ বলে সম্বোধন করেছেন বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক দল তৃণমূলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

 


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!