- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- মে ৫, ২০২৩
কেরালা স্টোরির পাশে প্রকাশ্যে নরেন্দ্র।ভোট প্রচারে কটাক্ষ কংগ্রেসকে, ওরা সত্যকে ঢাকা দিতে ব্যস্ত
দেশজুড়ে বিতর্কের আবহে ‘কেরালা স্টোরি’- এর পক্ষে বক্তব্য রাখলেন নরেন্দ্র মোদি। কর্ণাটকে নির্বাচনী প্রচারে এসে থেকে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, কেরালায় যা ঘটছে তাই চলচ্চিত্রে তুলে ধরেছেন পরিচালক। কিন্তু কংগ্রেস আতঙ্কবাদীদের সমর্থক তাই ছবি নিষিদ্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
কয়েকদিন বাদেই কর্ণাটকের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারণের পালা। তার আগে ভোটের প্রচার যুদ্ধে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। বেল্লারিতে বিজেপির নির্বাচনী জনসভায় তাই নরেন্দ্র মোদির শরীরী ভাষায় ‘রণং দেহি’ ভমূর্তির আভাস। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘কেরালা স্টোরি’-কে ঘিরে কংগ্রেস নেতাদের কর্মকাণ্ডকে নিশানা করে তিনি বললেন, ঈশ্বরের আপন দেশ কেরলে ‘সত্য ঘটনা’ অবলবনে সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে একটি ছবি তৈরি করা হয়েছে। নির্মাতাদের সে উদ্যোগকে স্বাগত জানানোর পরিবর্তে, তা কীভাবে কেউ দেখতে না পারে তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। গোটা সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে যে সন্ত্রাসবাদ শতাব্দী প্রাচীন দলের অবস্থান সেই চিন্তাধারার পক্ষে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ, সন্ত্রাসে যারা উস্কানি দেয়, তাদের সঙ্গেও তলে তলে সম্পর্ক রেখে চলেন কংগ্রেসিরা। কেবলমাত্র সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে নয়, তফশিলি জনজাতিদের ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে কংগ্রেস সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেন তিনি। তিনি বলেছেন, আদিবাসী তফশিলিদের আর্থ- সামাজিক উন্নতি কল্পে জাতি ভিত্তিক জনগণনার দাবি করা হয়েছে, কিন্তু বিজেপি সরকারের পক্ষ থেকে জনজাতি সমাজের অন্তর্গত একজনকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনীত করা হয়, তার বিরোধিতা করে কংগ্রেস। সমাজের প্রান্তিক, অবহেলিত অংশের মানুষের প্রতি তাঁদের দরদ প্রশ্নাতীত নয় বলেই মনে করেন তিনি। এক্ষেত্রে বলা প্রয়োজন, রামনাথ কোবিন্দ হোক বা দ্রৌপদী মূর্মু -কারোর মনোনয়নের ক্ষেত্রেই কংগ্রেস নেতৃত্ব বিজেপিকে সমর্থন করেনি। শুধু তাই নয় কর্নাটকে মোদির রোড শো আটকাতে আদালতের দ্বারস্থ চেয়েছিলেন বিরোধীরা। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, স্থগিতাদেশের সে আবেদন করে দিয়েছে কোর্ট।
কেরালা স্টোরি ইতিমধ্যে সারা ভারতে এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ছবির ট্রেলারে উল্লিখিত ৩২০০০ মহিলার ধর্মান্তরকরণ এবং সিরিয়া আফগানিস্তানে আইএসআইএস শিবিরে পাচার হয়ে যাওয়া সংক্রান্ত তথ্যের উৎস কী তা পরিষ্কার করতে পারেন নি পরিচালক সুদীপ্ত সেন। ইতিমধ্যে আইনি জটিলতার মুখে পড়ে ছবির নির্মাতা টিজার থেকে বিতর্কিত পরিসংখ্যানের অংশটুকু বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষনা করেছেন। এমন এক অর্ধ সত্য ও কল্পনার মিশেলে বানানো ছবির ভিত্তিতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ জোরালো করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্দেশ্য স্পষ্ট , ভোটমুখী কর্ণাটকে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার ময়দানের কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দেওয়া। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের বিজেপির ক্ষমতা লাভ গণতন্ত্রের ন্যায়-নীতি মেনে হয়নি। তাই জনমত কোন দিকে সে সংশয় রয়েছে। তাই নিজের নিকটতম প্রতিদ্বন্বীকে ধরাশায়ী করতে কোনো কসুর করছে না গেরুয়া শিবির। সন্ত্রাসবাদ হোক বা প্রান্তিক মানুষের ক্ষমতায়ন – যে ইস্যুই থাক না কেন – প্রচারে নিজের দলীয় আত্মগরিমা প্রতিষ্ঠায় জোর দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। পুলওয়ামা হোক বা হাথরাস– সে আত্মগরিমাকে যে খানিকটা হলেও ম্লান করে তা বুঝতে কি চান না পদ্ম শিবিরের কুশীলবরা ?
❤ Support Us