- এই মুহূর্তে দে । শ
- নভেম্বর ২০, ২০২৩
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্যর বাড়িতে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ, করা হচ্ছে ভিডিও রেকর্ডিং
আদালতের নির্দেশানুসারে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য প্রাক্তন উপাচার্যর বাড়িতে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ৫টি অভিযোগের তদন্তেই এই পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ। শান্তিনিকেতন থানার ওসি-সহ ৪ জনের একটি দল বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সরকারি বাসভবনে পৌঁছে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে সূত্রের খবর, প্রশ্নোত্তর পর্বের ভিডিও রেকর্ডিং করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব লিখিত আকারেও নেওয়া হচ্ছে, গুঞ্জাসাবাদের শেষে লিখিত বয়ানে সই করবেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে থাকাকালীন বারবার নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। কখনও তাঁর বক্তব্যে বিতর্ক হয়েছে। কখনও কোনও কাজ নিয়ে সরাসরি রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন তিনি। এরই মাঝে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে থাকায় মেয়াদ তাঁর শেষ হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর মেয়াদ আর বাড়ানো হয়নি। কলা ভবনের অধ্যক্ষ সঞ্জয়কুমার মল্লিককে বিশ্বভারতীর অন্তর্বর্তী উপাচার্য করা হয়েছে।
এরই মধ্যে ফলক বিতর্কও শুরু হয়েছিল। উনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সম্মান পাওয়ার পরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একাধিক জায়গায় ফলক বসানো হয়েছিল। সেই ফলক ঘিরে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়। ওই ফলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম ছিল, উপাচার্য হিসেবে নাম ছিল বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। কিন্তু কোথাও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম ছিল না। তার জেরেই ক্ষোভ দেখা যায় বিভিন্ন স্তরে। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রাজনৈতিক স্তর থেকেও উষ্মা প্রকাশ করা হয়েছে। ফলক বদল করা হবে না বলেও কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছিল বিশ্বভারতীর তরফে। সেই ফলক বিতর্কে উপাচার্যকে নোটিস পাঠিয়েছিল পুলিশে। ১৪ নভেম্বর বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে শান্তিনিকেতন থানায় হাজিরার নোটিস দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ফলক-বিতর্কে শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনারের করা মামলায় উপাচার্যকে ওই নোটিস দেওয়া হয়েছিল। পরে ওই প্রসঙ্গে উপাচার্যর থেকে রিপোর্ট তলব করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তার আগেই অবশ্য বিশ্বভারতীর বিতর্কিত ফলক বদলানোর নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। বিশ্বভারতী সূত্রের খবর ছিল, নতুন ফলকে কী লেখা হবে তার বয়ানসহ চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ওই বয়ানে আচার্য প্রধানন্ত্রী ও উপাচার্যের নামের কোনও উল্লেখ ছিল না। চিঠি পেয়েই ৪ সদস্য়ের একটি কমিটি তৈরি করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেখানে জায়গায় পেয়েছেন রবীন্দ্রভবনের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর অধ্যাপক অমল পাল, অধ্যাপক অমৃত সেন, অধ্যাপক শকুন্তলা মিশ্র ও অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। প্রাক্তন উপাচার্য পুলিশি তলবের পর আদালতে যান। আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে গ্রেফতারের মতো ঘটনা ঘটানো না গেলেও ৫টি অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাক্তন উপাচার্যের বাড়ি গিয়ে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী সোমবার বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়িতে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ পৌঁছে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
❤ Support Us