- এই মুহূর্তে দে । শ
- এপ্রিল ৬, ২০২৩
জেরুজালেমের আল আকসা চত্বরে আবার ইজরায়লি পুলিশ। গ্রেনেড হানায় জখম অন্তত ৬ ফিলিস্তিনি। নামাজকে ঘিরে পুলিশের আজব কানুন, প্রার্থনাকারীর বয়স চল্লিশোর্দ্ধ্ব হতে হবে
রাষ্ট্রসংঘের নিন্দা-- অন্যের ধর্মাচরণের স্বাধীনতা মানতে হবে ইজরায়েলকে
আবার জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদ চত্বরে ইজরায়েলের পুলিশ প্রবেশ করে প্রার্থনারত মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। বলেছে, আল আকসায় উপাসনার ক্ষেত্রে অদ্ভুত নিয়ম জারি কেন ইজারাইলি পুলিশের।
জেরুজালেম তিন সেমিটিক ধর্মাবলম্বী-ইহুদি,খ্রিষ্টান ও মুসলিমদের কাছের পবিত্র ধর্মস্থান বলে বিবেচিত। ইহুদিদের দাবি, এখান থেকেই তাঁদের ধর্মের উত্থান। খ্রিষ্টানরাও মনে করেন, জেরুজালেমের বেথলেহেম যিশুখ্রিষ্টের জন্মস্থান। মুসলিমরা জেরুজালেমের গুরুত্ব কখনও হেয় করেন নি। পূর্বগামী দুই ধর্মীয় পুরুষকে গুরুত্ব দিয়েছেন হজরত মহম্মদ। এখান থেকেই তাঁর নৈশযাত্রা(মেরাজ) শুরু হয়েছিল। গোড়ার দিকে জেরুজালেমমুখী হয়ে মুসলিমরা নামাজ পড়তেন। আল আকসা মসজিদের অবস্থান ঐ বৃত্তান্ত এখনও স্মরণ করিয়ে দেয়। ইজরায়েলিরা বার বার মসজিদ সহ জেরুজালেম দখলের চেষ্টা করেছে। প্রথম আরব-ইজরায়েল যুদ্ধে জেরুজালেম আক্রান্ত হলে দুনিয়ার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মুসলিমদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। গত কয়েক বছর থেকে ইজরায়েল জেরুজালেমে তার রাজধানী করতে চাইছে, এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে ফিলিস্তিন ও অন্যান্য রাষ্ট্র। ইজরায়েল তার ইচ্ছা সম্প্রসারিত করতে বদ্ধপরিকর। ছলে-বলে-কৌশলে পুরো জেরুজালেমকে হস্তগত করতে চাইছে। প্রায়ই তার সেনা-পুলিশ এখানে অঘটোন ঘটিয়ে দেয়। বুধবার গভীর রাতে হঠাৎ ঢুকে পড়ে তেল আভিভের পুলিশ। রমজানের প্রার্থনারতদের উদ্দেশে গ্রেনেড ও স্টিলের বুলেট ছুঁড়তে থাকে। নৃশংশ কাণ্ডটি ভাইরাল হয়েছে। অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশে। পুলিশের অভিযানে জখম হয়েছেন অন্তত ৬।
ফিলিস্তিনের অভিযোগ, ইজরায়েলি পুলিশ জোর করে আল আকসা চত্বরে ঢুকে প্রার্থনায় বাধা দিচ্ছে। মঙ্গলবার গভীর রাতেও একই কাণ্ড ঘটিয়েছে পুলিশ। পুলিশি হানায় অন্তত চারশত ফিলিস্তিনি গ্রেফতার হন।
চ
বুধবার রাতে মসজিদ চত্বরে ইজরায়েলি পুলিশের অনুপ্রবেশের নিন্দায় সরব প্রতিবেশী বিভিন্ন আরব রাষ্ট্র। সংবাদ সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, আল আকসা মসজিদে প্রার্থনাকে ঘিরে আজব নিয়ম চাপিয়ে দিয়েছে ইজরায়েল। বলেছে, এখানে নামাজ পড়তে হলে বয়স ৪০-এর ওপর হতে হবে। এই নিয়ম চাপানোর পর থেকে দূরদূরান্ত থেকে আগত হাজার হাজার মানুষ হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ অনুমোদনের আকাঙ্খায় মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
কেন এরকম নিয়ম জারি হল, এ প্রশ্নে নিরুত্তর ইজরায়েল। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রায়ই জেরুজালেমে পুলিশের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সংঘর্ষ ঘটছে। শহর থেকে অধিকৃত বহু এলাকায় অশান্ত হাওয়া বইছে। নাগরিক বিক্ষোভ সামাল দিতে বেলাগাম ইজরায়েল কখনো গ্রেনেড কখনো কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে ভয়ের পরিস্থিতি জিইয়ে রেখেছে। রমজান বলেই আল হাম্মাস ও অন্যান্য যোদ্ধারা এখনও শান্ত, যেকোনো মুহুর্তে আবার গর্জে উঠতে পারে সমুদ্র ঘেঁষা গাজা ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি এলাকা।
❤ Support Us