- এই মুহূর্তে দে । শ
- নভেম্বর ২৪, ২০২৩
পুরনো পেনশন প্রকল্পের দাবি, ধর্মঘটে যেতে পারেন রেলকর্মীরা
পূর্ব-মধ্য রেল ধর্মঘটের আশংকা দেখা দিয়েছে। রেলকর্মীরা তাদের পুরনো পেনশন প্রকল্পের দাবিতে এই ধর্মঘটের পথে হাঁটতে চলেছেন বলে জানা যাচ্ছে। সম্প্রতি পুরনো পেনশন স্কিম চালুর দাবিতে আন্দোলনের গতিপথ ঠিক করতে রেল কর্মচারী ইউনিয়নের তরফ থেকে গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে অধিকাংশ রেলকর্মী ধর্মঘটের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর তার পর থেকেই রেল ধর্মঘটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে দেশ জুড়ে।
পূর্ব-মধ্য রেলের কর্মচারী ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব-মধ্য জোনের সব রেল ডিভিশনের কর্মীদের মধ্যেই এই গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল সম্প্রতি। পুরনো পেনশন স্কিম চালুর দাবি জানিয়ে সরকারকে চাপে ফেলতে ধর্মঘটের পথে হাঁটা উচিত বলে মনে করে সমস্ত কর্মীরা ধর্মঘটের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। এর ফলে বিহার, ঝাড়খণ্ডের রেলযাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
রেল কর্মীদের ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ ও ২২ নভেম্বর গোপন ব্যালটের মাধ্যমে গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। পূর্ব-মধ্য রেল জোনের ৫টি ডিভিশনের ১৪টি শাখাতেই এই ভোটগ্রহণ হয়েছে। এই গোপন ব্যালট গণনার জন্য পাঠানো হবে অল ইন্ডিয়া রেলওয়েমেনস ফেডারেশনে। তবে ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, গোপন ব্যালটে ভোট হলেও অধিকাংশ কর্মচারীই ধর্মঘটের পক্ষে সায় দিয়েছেন।
এদিকে কয়েক সপ্তাহ আগেই অষ্টম বেতন কমিশনের দাবিতে রেল কর্মীদের সংগঠন ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান রেলওয়েমেনের তরফে চিঠি লেখা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। রেল কর্মীদের দাবি, বেতন কমাঠামো পর্যালোচনা করা হোক। তাতে মূল্যবৃদ্ধি অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নতুন কমিশনের অপেক্ষা না করে এই ফর্মুলাতেই ম্যাট্রিক্স বদল করা যেতে পারে বলেও সুপারিশ করেছিল রেলকর্মীদের সংগঠন।
উল্লেখ্য, গত ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দেশে কার্যকর হয়েছিল সপ্তম বেতন কমিশন। সেই অনুযায়ী, বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ন্যূনতম মাসিক বেতন ১৮ হাজার টাকা। এই আবহে রেলকর্মীদের বক্তব্য ছিল, সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর হয়েছে, প্রায় আট বছর হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও কেন্দ্রীয় সরকার অষ্টম বেতন কমিশনের বিষয়ে কোনও কিছু ভাবেনি। সপ্তম বেতন কমিশনের তরফে সুপারিশ করা হয়েছিল, ১০ বছরের জন্য অপেক্ষা না করে তার আগেই বেতন কাঠামো পর্যালোচনা করা যাবে। সরকার যাতে সেই মতো কাজ করে, তার জন্য আবেদনই জানানো হয়। তবে শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার অষ্টম বেতন কমিশন পর্যন্ত এগোবে না। তাই ধরে নেওয়া যাচ্ছে পূর্ব-মধ্য রেলের ধর্মঘট হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দুর্গাপুজোর মধ্যেই রেলকর্মীদের চার শতাংশ ডিএ বাড়ানো হয়েছে। ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে বকেয়া হিসেবে নতুন হরে ডিএ কার্যকর করা হয়েছে। এর ফলে বর্তমানে রেল কর্মী সোহো সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বেড়ে ৪৬ শতাংশ হয়েছে। এর আগে ৪২ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছিলেন তারা। এদিকে জুলাই থেকে শুরু করে তিন মাসের বকেয়া টাকা অক্টোবরে ঢুকেছে রেলকর্মীদের অ্যাকাউন্টে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত সরকার যে ডিএ দেয়নি, সেটা এবার মিটিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি তুলেছেন রেলকর্মীরা। এখন দেখা যাক কেন্দ্র রেলকর্মীদের দাবি মেনে নেয় কি না। আর দাবি না মানলে রেল কর্মীরা ধর্মঘটে যায় কি না। শেষ পর্যন্ত পূর্ব-মধ্য রেখে এই ধর্মঘটের বিষয়টি আটকে না থেকে তা করার দেশে রেল ধর্মঘটের দিকে যায় কি না সেটাও দেখার বিষয়।
❤ Support Us