Advertisement
  • মা | ঠে-ম | য় | দা | নে
  • নভেম্বর ২৩, ২০২৩

বিশ্বের সামনে ‘‌ফ্রি প্যালেস্টাইন’‌ বার্তা তুলে ধরতে পেরে খুশি জনসন

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
বিশ্বের সামনে ‘‌ফ্রি প্যালেস্টাইন’‌ বার্তা তুলে ধরতে পেরে খুশি জনসন

ওয়েন জনসন এখন রীতিমত সেলিব্রিটি হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনি যেখানেই যাচ্ছেন, অনুসরণ করছে জনতা। সেলফি তোলার জন্য হিড়িক পড়ে যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও সাক্ষাৎকারের জন্য অধীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে। তবে এই সেলেব্রিটি হয়ে ওঠার থেকেও জনসন বেশি খুশি গোটা বিশ্বের সামনে ‘‌ফ্রি প্যালেস্টাইন’‌–এর বার্তা তুলে ধরতে পেরে।
কে এই ওয়েন জনসন?‌ চীনা বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। যিনি বিশ্বকাপ ফাইনালের দিন আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে মাঠে ঢুকে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। ভারত–অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ চলাকালীন ফেন্সিং টপকে হঠাৎ মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন ওয়েন জনসন। তাঁর হাতে ছিল প্যালেস্টাইনের পতাকা। মুখে ছিল মাস্ক। যে মাস্কে ছিল প্যালেস্টাইনের পতাকা। আর হাতে ছিল রামধনু রঙের সমকামীদের পতাকা। গায়ে সাদা টি–শার্টের বুকে গাজা ভূখণ্ডে বোমাবর্ষণের ছবি আঁকা। আর সেই টি–শার্টের সামনের দিকে লেখা ‘‌স্টপ বোম্বিং প্যালেস্টাইন’‌। পেছনে লেখা ছিল ‘‌ফ্রি প্যালেস্টাইন’‌।
মাঠে ঢুকে সরাসরি কোহলির কাছে চলে যান ওয়েন জনসন। কোহলির কাঁধে হাত রেখে আলিঙ্গনের চেষ্টা করেন। নিরাপত্তারক্ষীরা সঙ্গে সঙ্গে মাঠে ঢুকে তাঁকে বার করে নিয়ে যান। জনসনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। তিনদিন পুলিশ হেফাজতে কাটানোর পর অবশেষে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন চীনা বংশোদ্ভূত এই অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। তাঁর মোবাইল, ল্যাপটপ ও পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
মুক্ত হওয়ার পর যতটা শান্তিপূর্ণ থাকার কথা ভেবেছিলেন ওয়েন জনসন, সেটা কিন্তু হয়নি। পুলিশ হেফাজত থেকে বেরিয়ে বুধবার যখন তিনি হোটেলের দিকে যাচ্ছিলেন, পাপারাৎজির মতো পেছনে ধাওয়া করেছিল স্থানীয় লোকজন। তাদের এড়িয়ে হোটেলে ঢুকে যান জনসন। সেলফি তোলার জন্য তারা হোটেলের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকে। এই ঘটনায় বিন্দুমাত্র বিচলিত নন জনসন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‌এটা আমার কাছে একেবারেই ভীতিকর নয়। আমি এটা ভেবেই খুশি যে, কোটি কোটি মানুষ আমার ফ্রি প্যালেস্টাইনের বার্তা পেয়েছে। আমেদাবাদের মানুষ আমাকে ভালবাসে।’‌
গ্রেফতার হওয়ার পর ওয়েন জনসনের ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে আমেদাবাদ পুলিশ। ফলে তাঁর সেই মাঠে ঢোকার ঘটনা কতটা প্রভাব ফেলেছে তা দেখা সম্ভব হয়নি। পুলিশি হেফাজত থেকে বেরিয়ে হোটেলে ফিরে তিনি বেশ কয়েকজনের কাছে ফোন চেয়ে দেখার চেষ্টা করেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ইজরায়েল–প্যালেস্তাইন সংঘাত নিয়ে তাঁর বার্তা কতটা বিতর্কের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। ‘‌দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’‌ কিংবা ‘‌সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’‌–এর প্রথম পাতায় এই ঘটনাটা তুলে ধরা হয়েছে কিনা তাও পরীক্ষা করেন জনসন। এই অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকের বিরুদ্ধে ভারতীয় পেনাল কোডের ৩৫৩ এবং ৪৪১ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি আমেদাবাদ ছাড়তে পারবেন না।
কোহলি ব্যাট করার সময়ই মাঠে নামার পরিকল্পনা করেছিলেন ওয়েন জনসন। তাঁকে যে শাস্তির কবলে পড়তে হবে এটা জেনেও তিনি মাঠে নামার পরিকল্পনা করেন। জনসন বলেন, ‘‌আমি জানতাম আমার কাজে কেউই খুশি হবে না। আমাকে জরিমানার কবলে পড়তে হবে। কিন্তু আমি ভাবিনি আমার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।’‌ যুদ্ধের বিরুদ্ধে তাঁর এই বার্তা দেওয়ার প্রয়াস নতুন নয়। ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ার একটা রাগবি ম্যাচের সময় এবং পরে মহিলাদের বিশ্বকাপ ফুটবল ফাইনালের সময় ‘‌ফ্রি ইউক্রেন’‌ টি–শার্ট পরে মাঠে ঢুকে পড়েছিলেন।
আমেদাবাদে কোহলির ব্যাটিংয়ের সময় মাঠে নামার পরিকল্পনা প্রসঙ্গে জনসন বলেন, ‘‌ফুটবল বিশ্বকাপ ফাইনালের পর ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো বড় ইভেন্ট আর কিছু হয় না। আমি জানতাম যে গোটা বিশ্ব আমাকে দেখবে। আমাকে সেখানে পৌঁছতে হবে। বিরাট সবচেয়ে বড় তারকা। তিনি যখন ব্যাট করবেন, সেই সময়ই আমি মাঠে নামার পরিকল্পনা করেছিলাম। ভাবিনি নিরাপত্তা এতটা কড়া হবে। অস্ট্রেলিয়ায় নিরাপত্তা এইরকম কড়া নয়।’‌
গ্রেফতারের পর তিন দিন পুলিশ হেফাজতে কাটান জনসন। পিঁপড়ের মধ্যে মেঝেতে ঘুমিয়ে কাটাতে হয় তাঁকে। তাতে তাঁর কোন কষ্ট হয়নি। জনসন বলেন, ‘‌ফিলিস্তিনের লোকেরা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে, তার তুলনায় কয়েকদিন এভাবে আটকে থাকাটা কিছুই নয়। আমি আমার কাজের জন্য একটুও অনুতপ্ত নই।’‌ পিচ আক্রমণ করার জন্য কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থা বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছ থেকে প্ররোচনা পেয়েছিলেন কিনা, পুলিশ জাও জানতে চান জনসনের কাছে।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!