- এই মুহূর্তে দে । শ
- ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫
ম্যাকাউটে বিয়েকাণ্ড — প্রবল বিতর্কে ইস্তফা অধ্যাপিকার।

ম্যাকাউট ক্যাম্পাসে ছাত্র শিক্ষিকার ‘বিয়ের’ ভাইরাল ভিডিও ঘিরে তোলপাড় নেটপাড়া থেকে চায়ের দোকান। প্রবল সমালোচনার মাঝে শিক্ষক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিতর্কিত অধ্যাপিকা। বিশ্ববিদ্যালয়য় কর্তৃপক্ষের তরফে আগেই তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে অধ্যাপিকার ‘নাটক’ তত্ত্ব খারিজ হয়ে যায়।
সত্যি বিয়ে? নাকি নাটকের স্ক্রিপ্ট? মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটির ম্যাকাউট ক্যাম্পাসে ছাত্র শিক্ষিকার ‘বিয়ের’ ভাইরাল ভিডিও ঘিরে তোলপাড় নেটপাড়া থেকে চায়ের দোকান। প্রবল সমালোচনার মাঝে শিক্ষক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিতর্কিত অধ্যাপিকা পায়েল মুখার্জি । জানা গিয়েছে ইতিমধ্যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন । সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে আগেই তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে অধ্যাপিকার ‘নাটক’ তত্ত্ব খারিজ হয়ে যায়।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয় । যাতে দেখা যায়, ম্যাকাউট-এর ক্লাসরুমে দাঁড়িয়ে এক ছাত্রের সঙ্গে মালাবদল, সিঁদুরদান করে পুরোদস্তুর বিয়ে সারছেন মনস্তত্ত্ববিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান। ঝলমলে শাড়ি, গয়না, মালা, শাখা, সিঁদুর পরে পান পাতা হাতে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ‘কনে’ সাজে দেখা যায় তাঁকে, যদিও ছাত্রটি ছিলেন সাধারণ পোশাকে। তাঁর মুখ দেখাচ্ছিল ম্রিয়মান। ছড়িয়ে পড়া ভিডিও নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করলে নিজের সাফাইয়ে অধ্যাপিকা বলেন, “কোনও ড্রামার একটা ক্লিপিং এভাবে ভাইরাল হতে পারে এটা আমার চিন্তার বাইরে। টিচার্স ডে, ফ্রেশার্স ডে এসব অনুষ্ঠানে তো নাচ, গান, নাটক হয়। কিন্তু নাচ, গান বাজে নাটকের একটা নির্দিষ্ট অংশ ভাইরাল হয়েছে। এটা আমরা ফ্রেশার্স পার্টি প্ল্যান করেছিলাম। যেখানে নাচ, গান, ড্রামা সবই হচ্ছে। সেই হিসেবেই ড্রামাটা হয়েছিল, যেখানে ছাত্র এবং শিক্ষক অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু একটা পার্ট নিয়ে সেটা ভাইরাল করে দিল। এটা আমার জন্য আশ্চর্যজনক বিষয়। আমার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। আমি আইনি পথে হাঁটছি এবং অভিযোগও জানিয়েছি। আমি কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ যে তদন্ত কমিটি করেছে। যাঁরা তদন্ত করে সত্যিটা সামনে নিয়ে আসবে।”
ম্যাকাউট তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে প্রাথমিক রিপোর্ট। রিপোর্টে বলা হয়েছে, শিক্ষিকার দাবি ছিল এটি একটি সাইকো ড্রামার অংশ। কিন্তু ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির স্পষ্ট দাবি,ছাত্রের সঙ্গে অধ্যাপিকার বিয়ে করার বিষয়টি একেবারেই কোনও নাটকের অংশ নয়। শিক্ষার পাঠ্যক্রমেরও বিষয় নয়। বরং মজা করার জন্য তা করা হয়েছে। নিষ্ঠুর মজা হিসেবে শুরু হলেও, সেটা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে যায়। যে বিয়ের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তা নিয়ে বিভাগীয় প্রধান পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, অসৎ উদ্দেশ্য়ে ভাইরাল করা হয়েছে ছবি, পুরোটাই নাটকের স্ক্রিপ্ট। এরপর তদন্ত রিপোর্ট দেখে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, ‘নাটকের অংশ নয়, নোংরা মজা’ ছিল। বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে রাজভবনে।’ সূত্রের খবর, গত ১ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন পায়েল বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হওয়ার পর তা গ্রহণ করা হয়। জানা যাচ্ছে, তিনি ইস্তফা পত্রে উল্লেখ করেছেন যে এই ঘটনায় তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সামাজিক সম্মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আর অধ্যাপনা করতে চান না বলে উল্লেখ করেছেন অধ্যাপিকা।
মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি রেজিস্টার পার্থপ্রতিম লাহিড়ী ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘১ ফেব্রুয়ারি ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে একটি মেল পাঠিয়েছেন, তাতে তিনি লিখেছেন তিনি পদত্যাগ করছেন। উনি স্থায়ী শিক্ষক ছিলেন না। ছাত্রের সঙ্গে বিভাগীয় শিক্ষক, উপাচার্য কথা বলেছেন। ছাত্রটির অভিভাবক এসেছিলেন উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে। নিয়ম মেনে শিক্ষিকার মেল নোটশীট করে থ্রু প্রপার চ্যানেল উপাচার্যের কাছে পাঠানো হবে। যেহেতু তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, তাই তাঁর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। উনি বিশ্ববিদ্যালয়কে মেল পাঠিয়ে অনুরোধ করেছেন যাতে, ১ তারিখ থেকেই তাঁর পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা হয়। উনি অ্যাপ্লাইড সাইকোলজির শিক্ষিকা ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ঘটনা সত্যি, উনি যা বলেছেন সাইকো ড্রামা, তদন্ত কমিটির মতে এরকম কোথাও উদাহরণ নেই। উনি কেন করেছেন উনার সাথে কথা না বলে জানানো যাবে না।’
❤ Support Us