- দে । শ প্রচ্ছদ রচনা
- মার্চ ২৫, ২০২৩
আদানি-মোদি সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই বাতিল সাংসদ পদ, সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ রাহুলের
গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রাম জারি থাকবে, দৃপ্ত অঙ্গীকার ইন্দিরা পৌত্রের

সাংসদ পদ বাতিল হওয়ার পর সাংবাদিক সম্মেলনে মিলিত হলেন রাহুল গান্ধী। তিনি বললেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আদানির সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। লোকসভার সদস্যপদ বাতিল ইস্যুতে কেন্দ্রের শাসকদলকেই কার্যত অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন ইন্দিরা পৌত্র।
সংবাদ সংস্থার খবর,শনিবার রাহুল গান্ধী বলেছেন, আদানি ও প্রধানমন্ত্রী মোদির দীর্ঘ সুসম্পর্ক নিয়ে বারংবার প্রশ্ন করবার জন্য তিনি আজ রাজরোষের কবলে । তাঁর কথায়, আদানির কোম্পানিতে ২০, ০০০ কোটি টাকা কীভাবে বিনিয়োগ করা হল তা জিজ্ঞেস করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর বিমান সফরে কেন প্রখ্যাত এই ধনকুবেরকে কেন বার বার দেখা যায় তা নিয়েও প্রশ্ন করেছিলেন তিনি। দেশের একের পর এক বিমানবন্দর মোদি ঘনিষ্ঠ কর্পোরেট গোষ্ঠির হাতে চলে যাচ্ছে তাঁর পিছনের কারণ তিনি লোকসভায় জানতে চেয়েছিলেন। আদানিকে দুর্নীতির মামলা থেকে বাচানোর কারণ সম্পর্কেও তাঁর প্রশ্ন তিনি উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, গতকাল তাঁর বক্তব্যের রেকর্ড থেকে মুছে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে তাঁকে বলতে দেওয়া হবে না। এরপর বেলার দিকে লোকসভার সচিবালয় থেকে তাঁর সাংসদ পদ বাতিলের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
রাহুল গান্ধি বললেন, মোদি শাসনে গণতন্ত্র বিপন্ন। লোকসভা থেকে তাঁর সদস্যপদ বাতিল করে তাঁর কণ্ঠরোধ করবার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন সরকার তাঁর সঙ্গে বিদেশি শক্তির সম্পর্ক নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। কিন্তু তাঁর সাফ জবাব, কোনো বৈদেশিক সাহায্য তিনি চাননি। কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে জেলে ভরতে পারে। কিন্তু তাঁর কথায়, সাভারকর নই, যে মাথা নত করব। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন। ভয়ে কোনোমতেই চুপ করে থাকবেন না।
রাহুলকে কোণঠাসা করার ধারাবাহিক প্রক্রিয়া তাঁকে আরো জনপ্রিয় করে তুলবে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে। একসময় প্রতিশোধের রাজনীতির ক্রমাগত আঘাত ইন্দিরার দৃঢ় বিশ্বাসকে জনসত্ত্বার কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছিল। রাহুলের ক্ষেত্রেও এরকম সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-র সাফল্যের পর তাঁর রাজনৈতিক উত্তরণ দেখে কি ঘাবড়ে গেল শাসক গোষ্ঠী ? মোদিদের নিয়ে রাহুলের মন্তব্য প্রশ্নাতীত নয়। ঠিক করেননি কংগ্রেস নেতা। কিন্তু লঘু পাপে এরকম গুরুদণ্ড প্রত্যাশিত নয়। মন্তব্যের পাল্টা মন্তব্য হতে পারে, বিতর্ক উঠতে পারে। যা গণতন্ত্রে কাম্য। বিতর্কের আওতায় নিয়ে এসে রাহুলকে বহু রকম প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করানো যেত। সে রাস্তায় শাসক গোষ্ঠীকে হাঁটতে দেখা গেল না। তাঁরা দ্রুত আদালতের দ্বারস্থ হলেন। আদালত আইন মাফিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তাঁরই ভিত্তিতে লোকসভার সচিবালয় রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করে দিল। এরকম দ্রুততা সবক্ষেত্রে দেখা যায় না কেন ? দেশের বহু বিধায়ক ও সাংসদকে ব্যক্তি আক্রমণ অথবা সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়াতে দেখা গেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার কখনো কেন এত কঠোর হয়নি, এটাও একটি প্রশ্ন। এরকম প্রশ্নের পর প্রশ্ন উঠতে থাকবে এবং কংগ্রেসের জেদও বাড়বে।
❤ Support Us