- ন | ন্দ | ন | চ | ত্ব | র
- মে ৮, ২০২৪
প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে দেশকে দিগদর্শন, শ্রীকান্তের সংকল্প সিনেপর্দায় ফুটিয়ে তুললেন রাজকুমার

অন্ধ্রপ্রদেশের মাছিলিপত্তনম জেলার সীতারামপুরমে এক কৃষক পরিবারে ১৯৯২ সালে জন্মগ্রহণ করেন শ্রীকান্ত বোল্লা। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মগ্রহন করেছিলেন শ্রীকান্ত। জন্মের সময় শ্রীকান্তের আত্মীয়রা তাঁর বাবা–মাকে বলেছিলেন, ছেলে তাঁদের জীবনে বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। সাবাইকে ভুল প্রমাণিত করেছিলেন শ্রীকান্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে (এমআইটি) পড়াশোনা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। হায়দরাবাদে ফিরে এসে স্থাপন করেন বোলান্ট ইন্ডাস্ট্রিজ।
শ্রীকান্ত বোল্লার অনুপ্রেরণামূলক যাত্রা নিয়ে এবার তৈরি হল বায়োপিক, নাম ‘শ্রীকান্ত’। শ্রীকান্তের চরিত্রে অভিনয় করছেন রাজকুমার রাও। স্কুলে, গ্রামে এবং কলেজে দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী এক কিশোরের সংগ্রামকে পর্দায় সামনে তুলে ধরছেন রাজকুমার রাও। শ্রীকান্তের গল্পটি স্থিতিস্থাপকতা এবং সংকল্পের, যা দেশ ও দেশের বাইরেও অসংখ্য ব্যক্তিকে অনুপ্রাণিত করে।
রাজকুমার রাও অভিনীত শ্রীকান্তের জীবনের শক্তিশালী আখ্যান সবাই যাতে উপভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে ছবির নির্মাতারা প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন। দৃষ্টিহীনদের জন্য থাকছে বিশেষ অডিও বর্ণনা । ‘এক্সএল’ অ্যাপের মাধ্যমে ভিজ্যুয়ালগুলির প্রাণবন্ত বর্ণনা প্রদান করবে।এই উদ্যোগের প্রশংসা করে রাজকুমার রাও মন্তব্য করেছেন, ‘সল্প দৃষ্টির বা দৃষ্টিহীন ব্যক্তিরা এখন অডিও বর্ণনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রের ভিজ্যুয়াল উপলব্ধি করতে পারবে।’
শ্রীকান্তের সংগ্রামের কাহিনী মর্মস্পর্শী এবং দৃঢ় সংকল্পের।রাজ্যের তৎকালীন আইনি বাধায় তাঁকে বিজ্ঞান ও গণিত পড়ার অনুমতি দেয়নি স্কুল। তাদের বিশ্বাস ছিল যে, অন্ধ শিক্ষার্থীদের জন্য ডায়াগ্রাম এবং গ্রাফ তৈরি করা চ্যালেঞ্জিং হবে যা বিজ্ঞান পাঠ্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু হাল ছাড়েননি শ্রীকান্ত। তাঁর শিক্ষকের সহায়তায় বোর্ডকে আদালতে টেনে নিয়ে যান। আদালতের রায়ে অন্ধ্রপ্রদেশের সমস্ত রাজ্য বোর্ড বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে দৃষ্টিহীন ছাত্রদের ভর্তি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।এটাই ছিল দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শ্রীকান্তের যুদ্ধের সূচনা। তারপর তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় কোচিং সেন্টারগুলিতে আইআইটি–র জন্য কোচিং থেকে বঞ্চিত হন। এখানেও শ্রীকান্ত হাল ছাড়েননি। পরিবর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আবেদন করেছিলেন এবং ম্যাসাচুসেটসের কেমব্রিজে এমআইটিতে সুযোগ পান।
শিক্ষাজীবন শেষ করার পর শ্রীকান্ত ২০১২ সালে বোলান্ট ইন্ডাস্ট্রিজ তৈরি করতে হায়দরাবাদে ফিরে আসেন। তার কোম্পানি পরিবেশ বান্ধব পণ্য তৈরি করে এবং বিভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের নিয়োগ করে। তাঁর কঠোর পরিশ্রম এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা তাঁকে তার ক্ষেত্রে আলাদা করে তোলে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইয়ং গ্লোবাল লিডার ২০২১ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিলেন শ্রীকান্ত। শুধু পড়াশোনাতেই নয়, খেলাধূলাতেও দারুণ পারদর্শী ছিলেন তিনি। ক্রিকেটে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন শ্রীকান্ত এবং জাতীয় পর্যায়ে দাবাও খেলেছেন।
❤ Support Us