- এই মুহূর্তে বৈষয়িক
- ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫
মধ্যবিত্তের জন্য সুখবর — ৫ বছর পর, অবশেষে রেপো রেট কমালো রিজার্ভ ব্যাঙ্ক

বাজেট পর্ব মেটার পর অবশেষে ঘোষণা করা হলো নতুন রেপো রেট। এ দিন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা জানান, মনিটারি পলিসি কমিটি সর্বসম্মতিতেই রেপো রেট কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাজেট পর্ব মেটার পর অবশেষে ঘোষণা হল নতুন রেপো রেট। পাঁচ বছর পর অবশেষে রেপো রেট কমাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। মনিটারি পলিসি কমিটির বৈঠকের শেষে ৬. ৫০ শতাংশ থেকে রেপো রেট ২৫ পয়েন্ট কমানোর ঘোষণা করে হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে। নতুন ঘোষণার পর এখন রেপো রেট কমে দাঁড়াল ৬.২৫ শতাংশ। অর্থনীতিতে প্রবল গতি আনতেই রেপো রেট কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই জানান আরবিআই গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা। এ দিন তিনি জানান, মনিটারি পলিসি কমিটি সর্বসম্মতিতেই রেপো রেট কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বাজেট অধিবেশন থেকে মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে চাকুরিজীবিদের স্বস্তি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এবার স্বস্তি দেবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া? বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে ঋণের সুদ-হার কমবে ১.৮ শতাংশ। এক্ষেত্রে কেউ যদি ৩০ লক্ষ টাকার হোম লোন নিয়ে থাকেন ২০ বছরের জন্য এবং সেক্ষেত্রে সুদের হার যদি ৯ শতাংশ থেকে কমে ৮.৭৫ শতাংশ হয়, তাহলে তার ইএমআই ২৬৯৯২ টাকা থেকে কমে হবে ২৬,৫৫১ টাকা অর্থাৎ প্রায় ২ শতাংশ কমে যাবে।
২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের ঋণনীতি সংক্রান্ত প্রথম বৈঠকের পরই সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই রেপো রেট কমানোর দাবি উঠেছিল। মার্কিন ফেডেরাল রিজ়ার্ভ ২০২৪ সালে একাধিক বার সুদ-হারের পরিবর্তন করেছে। তারপর থেকেই ভারতে ‘ইন্টারেস্ট রেট’ কমানোর দাবি জোরালো হয়েছিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের একাংশের মুখেও সুদ-হ্রাসের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। যদিও তৎকালীন আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস সুদ কমানোর পথে হাঁটেননি। গত ডিসেম্বরে শক্তিকান্ত দাস অবসর নেওয়ার নতুন গভর্নর হয়েছেন সঞ্জয় মালহোত্রা। শীর্ষ ব্যাঙ্কের কেন্দ্রীয় মুদ্রানীতি কমিটির প্রথম বৈঠক, থেকেই গুরুত্বপূর্ণ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
আরবিআইয়ের সুদের হারকে রেপো রেট বলা হয়। দেশের সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে সুদের হারে ঋণ দিয়ে থাকে তাকেই রেপো রেট বলে। আর্থিক বিশ্লেষকদের অনুমান, সেখানে রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হলে ঋণের কিস্তির পরিমাণ কমতে পারে। বর্তমানে রেপো রেট ৬.৫ শতাংশ। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তা অপরিবর্তিত রয়েছে। ২০২০ সালের মে মাসে কোভিড অতিমারির সময় শেষ বার রেপো রেট কমানো হয়েছিল। রেট কমানোর সিদ্ধান্ত বেশ কতকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। প্রথমত, মুদ্রাস্ফীতির হার শীর্ষ ব্যাঙ্কের সহনসীমা ৬.২ শতাংশ, চলতি আর্থিক বছরে, দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫.৪ শতাংশে নেমে এসেছে। ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার দর ইতিহাসে সর্বনিম্ন। আমেরিকা ও চিনের নয়া শুল্কনীতির টানাপোড়নে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে আরবিআইয়ের সিদ্ধান্ত দেশের অভ্যন্তরীণ ও বাণিজ্য অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক যদি সুদের হার কমানোর ফলে, ব্যবসা এবং ব্যক্তিগত ঋণের খরচ কমতে পারে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি, সংসদে বাজেট পেশ করে, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, যাঁদের বার্ষিক আয় সর্বোচ্চ ১২ লক্ষ, সে সমস্ত ব্যক্তিদের একটাও আয়কর দিতে হবে না। সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে এই ছাড়ের পরিমাণ লাগু হবে। তারপরেই ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির বৈঠকে অধিকাংশ সদস্যই রেপো রেট কমানোর পক্ষে মত দেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্তকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করছেন অর্থনীতিবিদরা, কারণ এই পদক্ষেপ ভারতীয় অর্থনীতির জন্য কিছুটা স্বস্তি আনতে পারে। দেশের অর্থনীতির গতি বৃদ্ধি এবং জিডিপির বৃদ্ধির জন্য এরকম পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল।
❤ Support Us