- এই মুহূর্তে ন | ন্দ | ন | চ | ত্ব | র
- জানুয়ারি ৯, ২০২৪
প্রয়াত ওস্তাদ রাশিদ খান
ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের এই মুহূর্তের সেরা শিল্পী ওস্তাদ রাশিদ খান সুরলোকে পারি দিলেন।
ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী মাত্র ৫৬ বছর বয়সে অগনিত গুণমুগ্ধ শ্রোতার হৃদয় ভারাক্রান্ত করে অকালে চলে গেলেন।
গত ২২ নভেম্বর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। গত কয়েক বছর ধরে শিল্পী প্রস্টেট ক্যানসারে ভুগছিলেন। চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন। এর মধ্যে সম্প্রতি তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা ব্রেন স্ট্রোক হয়। তখন থেকেই অবস্থার অবনতি শুরু হয়। শিল্পীকে দক্ষিণ কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই মঙ্গলবার বিকেল ৩টে ৪৫ মিনিটে প্রয়াত হলেন তিনি। রেখে গেলেন স্ত্রী, দুই কন্যা এবং এক পুত্রকে।
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ওস্তাদ রাশিদ খান চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন রাশিদ খান কিন্তু দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকার ফলে তাঁর সংক্রমণ হয়। মঙ্গলবার সকালে সংক্রমণ বাড়ে। কমতে থাকে শিল্পীর রক্তচাপ। অবশেষে সব চেষ্টাকে ব্যর্থ করে চলে যান ওস্তাদ রাশিদ খান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পিয়ারলেস পাসপাতালে প্রয়াত শিল্পীকে দেখতে এসেছিলে। সেখানে তিনি জানান, “রাশিদ খানের মৃত্যুতে ভারতের উচ্চাঙ্গ সংগীত জগতে বড় রকমের শূন্যস্থান তৈরি হল।
মঙ্গলবার হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী তথা সঙ্গীতশিল্পী ইন্দ্রনীল সেন। হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের যদি কিছু বলার থাকে বলুন, তার পর আমি বলব। রাশিদের ছেলে রয়েছেন এখানে। ও ভাল গান করে।’’
এর পরেই রাশিদের চিকিৎসক বলেন, ‘‘এত দিন হাসপাতালে থাকার ফলে সংক্রমণ হয়েছিল। চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিল। তবে হাসপাতালে বেশিদিন থাকলে একটা সংক্রমণ হয়, সেই সংক্রমণের ফলে ওঁকে ভেন্টিলেশনে পাঠাতে হয়। ওঁকে রিভাইভ করতে পারিনি। ৩টে ৪৫ মিনিটে তিনি মারা যান।’’ এর পরেই মমতা বলেন, ‘‘রশিদ আমার ভাইয়ের মতো, গঙ্গাসাগর থেকে জয়নগরে গিয়ে ফোন এসেছিল। নবান্নে ফিরে খবর আসে, কিছু একটা হয়েছে। রাশিদ আলি খান বিশ্ববিখ্যাত নাম। ওঁর পরিচয় দিতে হবে না। বাংলাকে ভালবেসে বাংলায় থেকে গিয়েছেন। বিশ্বের সব প্রান্তে গিয়ে প্রচার করেছেন।’’
১৯৬৮ সালের ১ জুলাই উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁতে জন্ম রাশিদের। তিনি ছিলেন রামপুর-সাসওয়ান ঘরানার শিল্পী। যে ঘরানার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইনায়েত হুসেন খাঁ-সাহিব। রাশিদ তালিম নিয়েছেন এই ঘরানারই আর এক দিকপাল উস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ-সাহিবের কাছ থেকে। যিনি ছিলেন রাশিদের দাদু। রাশিদের মামা গোয়ালিয়র ঘরানার উস্তাদ গুলাম মুস্তাফা খাঁ-সাহিবের থেকেও তালিম নিয়েছেন রাশিদ। মূলত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গাইলেও ফিউশন বা বলিউড এবং টলিউডের ছবিতে বহু জনপ্রিয় গান গেয়েছেন শিল্পী। গেয়েছেন রবীঠাকুরের গান।
পন্ডিত ভীম সেন যোশী ওস্তাদ রাশিদ খানের গান শুনে বলেছিলেন, “ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সংগীত ভবিষ্যৎ।” আজ সেই ভবিষ্যৎ অস্তমিত হল।
❤ Support Us